ওরা মধ্যরাতের তস্কর

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:২৩ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:০৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আপন মিয়া ও নজরুল ইসলাম ক্ষুদ্র কাঁচামাল ব্যবসায়ী। দুজনেরই বাসা উত্তরার দক্ষিণখান এলাকায়। প্রতিদিনের মতো গভীর রাতে দোকানের সবজি কেনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে বিমানবন্দরের কাওলা ফুট ওভারব্রিজের পাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিছু সময় পর একটি পিকআপ ভ্যান সেখানে এসে থামে। কারওয়ানবাজার যাবে বলে চালক তাদের গাড়িতে ওঠায়। এরপরই তাদের সঙ্গে ঘটে ভয়ঙ্কর ঘটনা। পিকআপে যাত্রী বেশে থাকা কয়েকজন তাদের গলায় ছুরি ধরে সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে তাদেরকে গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ডাকাত দলের সদস্যরা। চলন্ত গাড়ি থেকে রাস্তায় পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান আপন মিয়া। এভাবেই বেশ কিছু দিন ধরে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ডাকাতি করে আসা একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ।

বুধবার বেলা ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

প্তারকৃতরা হলো, সজল, মূসা, বাচ্চু, সজীব, মুন্না ও সিদ্দিক। হাফিজ আক্তার বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি বাজারে আসা ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে একটি ডাকাত চক্র গড়ে উঠেছে। তারা পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে যাত্রী হিসেবে ব্যবসায়ীদের গাড়িতে তোলে। এরপর গলায় চাকু ধরে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে চলন্ত গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। তিনি বলেন, এই চক্রটি মূলত ভোর রাতের অপরাধী। তারা রাত ১২টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ডাকাতি করে। তাদের মূল টার্গেট বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পণ্য কিনতে আসা খুচরা ব্যবসায়ীরা। যেহেতু রাতে চলাচলের জন্য যানবাহন পাওয়া যায় না, তাই এসব বাজারে আসা বেশির ভাগ ব্যবসায়ীদের এমন মালবাহী ছোট পিকআপ বা ট্রাকই ভরসা। এই সুযোগটিই নিয়েছে ডাকাত দলের সদস্যরা।

পুলিশ জানায়, সাধারণত তারা আব্দুল্লাহপুর থেকে কারওয়ানবাজার, রামপুরা থেকে যাত্রাবাড়ী, যাত্রাবাড়ী থেকে ভুলতা গাউছিয়া এলাকায় বেশি সক্রিয়। এই চক্রটি প্রতিদিন একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটাতো। ডিএমপি গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আপন মিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় বিমান বন্দর থানায় একটি মামলা হয়। সেই মামলার সূত্র ধরেই এই ভয়ংকর ডাকাত চক্রকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে গুলশান বিভাগের গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ সময় তাদের হেফাজত হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ, চাকু, ছিনিয়ে নেয়া ৭ হাজার টাকা ও ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও হত্যা মামলা করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এআর/কেআর)