রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়াসহ একজন গ্রেপ্তার

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:৩৯

সুন্দরবন থেকে শিকার করা একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়াসহ গাউস ফকির(৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব ও বনবিভাগ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা পাঁচ রাস্তার মোড়ের বাসস্ট্যান্ড থেকে চামড়াসহ গ্রেপ্তার করে বলে দাবি র‌্যাব ও বনবিভাগের।

গ্রেপ্তার গাউস ফকির জেলার শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের প্রয়াত রশিদ ফকিরের ছেলে। গাউসকে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গাউস ফকিরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর কার্যালয় থেকে বাগেরহাটে বনবিভাগের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। তবে তিনি বাঘ হত্যার কথা অস্বীকার করেছেন।

উদ্ধার হওয়া বাঘের চামড়াটি লম্বায় আট ফুট এক ইঞ্চি এবং চওড়ায় তিন ফুট এক ইঞ্চি। বাঘটি বয়ষ্ক বলে জানিয়েছেন বনবিভাগের কর্মকর্তারা।

গাউস ফকির বলেন, এই বাঘ আমি হত্যা করিনি। আমার পূর্ব পরিচিত এক ব্যক্তি এই চামড়া আমাকে বিক্রি করতে দিয়েছেন। ওই ব্যক্তিই বাঘটিকে হত্যা করেছেন। তবে কবে করেছেন তা আমি জানি না। চারদিন আগে তিনি আমাকে এই চামড়াটি দিয়েছেন। পেশায় আমি জেলে। সাগরে মাছ শিকার ধরি। তিনিও সাগরে মাছ ধরেন।

গাউস বলেন, আমরা (অভিযুক্ত আরেকজন) সাগরে একসঙ্গে মাছ ধরি। মধু সংগ্রহের মৌসুমে সুন্দরবনে যেয়ে আমি মধু সংগ্রহ করি। যিনি আমাকে চামড়াটি দিয়েছেন তার নাম ওহিদুল। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে তিনি আমাকে চামড়াটি দিয়ে বলেছেন চামড়াটি সাত লাখ টাকা বিক্রি করে দিতে পারলে তোমাকে আমি দেড় লাখ টাকা দেব। যার মাধ্যমে এই চামড়া বিক্রির মধ্যস্ততা হয়েছে তার নাম ওবায়দুল করিম। তার বাড়ি শরণখোলার সাউথখালি গ্রামে বলে দাবি করেন গাউস ফকির।

দুপুরে বন বিভাগের কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গত শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি একটা বাঘের চামড়া বিক্রি হবে শরণখোলায়। আমরা ওই বাঘের চামড়াটি কেনার জন্য ক্রেতা সাজি।

তিনি বলেন, চক্রটির বাঘের চামড়াটি ১৭ লাখ টাকা চাইলে তা পরে ১৩ লাখ টাকায় কিনতে আমরা রাজি হই। পরে আমরা র‌্যাবের সহযোগিতা নিয়ে শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা পাঁচ রাস্তার মোড়ের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে চামড়াসহ শিকারি গাউস ফকিরকে গ্রেপ্তার করি। গ্রেপ্তার হওয়া গাউসের বিরুদ্ধে বন বিভাগে সেভাবে কোনো অভিযোগ না থাকলেও তার ফকির বাড়ির (বংশের) অন্য লোকজনের বিরুদ্ধে বনের বাঘের চামড়া পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

বাঘটিকে সুন্দরবনের কোনো এলাকা থেকে কতদিন আগে শিকার করে হত্যা করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার হওয়া গাউসের সঙ্গে আর কারা জড়িত রয়েছে তা তিনি স্বীকার করেননি। তবে গ্রেপ্তার হওয়া গাউসের সঙ্গে একটি চক্র জড়িত রয়েছে। এটি জানতে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করলে চক্রের সন্ধান পাবো আশা করছি।

বেলায়েত হোসেন বলেন, বাঘ শিকারিরা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে বাঘ শিকার করে থাকে। এই বাঘটিকে প্রায় এক মাস আগে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

২০১২ সালের বন আইনের পরিবর্তন এসেছে। তাতে বাঘ হত্যাকারীদের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। বাঘ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :