শিশু মিজানুরের মুখে হাসি ফেরাতে চান বাবা-মা

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২১, ২১:৩২ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২১, ২১:৪৫

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

দুই মেয়ের পর ছেলে সন্তানের জন্ম। পরিবারে বইছিল আনন্দের বন্যা। খুশিতে বাবা-মা ছেলের নাম রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজাহারির নামানুসারে ‘মিজানুর রহমান’। কিন্তু চার মাস বয়সী মিজানুরকে এখন পর্যন্ত ডাক্তারের ছুরি-কাঁচির নিচে যেতে হয়েছে দুই বার। তবুও সুস্থ হয়নি সে! বরং হৃৎপিন্ডে ছিদ্র দেখা দিয়েছে ছোট্ট এই শিশুটির। ফের অপারেশন টেবিলে যেতে হবে মিজানুরকে। একমাত্র ছেলের এমন জটিল অসুস্থতায় পরিবার থেকে উধাও হয়ে গেছে হাসি।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের ইদিলপুর গ্রামের রিকশা চালক বাবা রফিকুল ইসলাম ও গৃহিনী খুশি আরা খাতুনের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। হৎপিন্ডের অপারেশন করাতে প্রায় দুই লাখ টাকা লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু কোথায় পাবেন এতো টাকা? এই চিন্তায় দিশেহারা অসহায় পরিবারটি!

জন্মের সময় মিজানুরের নাভির ওপর একটি বড় মাংসপিন্ড দেখা দেয়। ছিল না পায়ুপথ। এছাড়া প্রস্রাবের রাস্তাও দুটি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে (রামেক) নিয়ে গেলে দুই দফায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাংসপিন্ড অপসারণ এবং পায়ুপথ বের করেন চিকিৎসক। এর জন্য দরিদ্র পরিবারটির ধারদেনা হয়েছে প্রায় লাখ টাকার ওপরে।

এদিকে সম্প্রতি শিশু মিজানুর পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান তার বাবা-মা। সেখানে পরীক্ষা নীরিক্ষায় মিজানুরের হৎপিন্ডে ছিদ্র ধরা পড়ে। শুধু তাই নয়, প্রস্রাবের রাস্তায় রয়েছে সমস্যা। তিন মাস পর অপারেশন করাতে হবে।

অপারেশন করাতে খরচ হবে প্রায় দুই লাখ টাকার ওপরে। চিকিৎসকের এমন কথা শুনে বাড়ি ফিরে আসেন তারা। বর্তমানে মিজানুরের প্রতিনিয়ত ঠান্ডা লেগে থাকছে। শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। প্রায়শই অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুটি। কোথাও সহযোগিতা না পেয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন রিকশাচালক বাবা রফিকুল ইসলাম। কিন্তু ছেলের এমন করুণ অবস্থা দেখে অঝোরে কেঁদে চলেছেন মা খুশি আরা খাতুন।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলে হবে জেনে বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারি সাহেবের নাম অনুসারে নাম রেখেছিলাম। ইচ্ছে ছিল ছেলেকে আলেম বানানোর। কিন্তু টাকার কাছে হেরে যাচ্ছি আমরা। আমাদের স্বপ্ন কী শেষ হয়ে যাবে? বার বার অপারেশন করাতে গিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা আয় করে অপারেশনের এতো টাকা জোগাড় করবো কীভাবে?

অশ্রুসিক্ত নয়নে মা খুশি আরা খাতুন বলেন, আর কতো কষ্ট করবে আমার ছেলে? এতো টাকা আমরা পাবো কোথায়? লজ্জায় ভিক্ষাও করতে পারছি না! সন্তানকে বাঁচাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এ ব্যাপারে ফৈলজানা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলী প্রামানিক বলেন, পরিবারটি খুব অসহায়। ধারদেনা করে দুই বার অপারেশন করিয়েছে। বর্তমানে পরিবারটির চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই। তাই সরকারি সহযোগিতা পেলে উপকৃত হতো দরিদ্র পরিবারটি।

মিজানুরের পরিবারের সঙ্গে এই নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে ০১৯০৮-২৭৮৪০৫।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/কেএম)