পদ্মা সেতু

‘শূন্য হৃদয়-পদ্ম’ এখন বুকভরা রংধনু

মোতাহার হোসেন
 | প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০২১, ২০:০২

এক মহাকর্মযজ্ঞের সাক্ষী হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াল স্বপ্নের পদ্মা সেতু। শেষ স্প্যান স্থাপনের মধ্যদিয়ে প্রমত্তা পদ্মা সেতু স্বপ্ন ছুঁয়েছে এপার-ওপার। এ যেন প্রমত্তা পদ্মার বিশ^জয়। পদ্মা সেতুর ৪১তম অর্থাৎ শেষ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামোর মূল অংশ দৃশ্যমান হলো। এ উপলক্ষে সেতু এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দেশের অন্যত্রও মানুষের মধ্যে দেখা দেয় উদ্দীপনা।

এ সেতু নির্মাণের পথে পেরোতে হয়েছে বহু বাধা। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, পদ্মার তীব্র স্রোত, এমনকি চলমান মহামারিও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনার সাহসী উদ্যোগে নিজেদের অর্থায়নে যেমন পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়, তেমনি তার দক্ষ নেতৃত্বে সব বাধা অতিক্রম করে সমাপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে পদ্মা সেতু। এখন শুধু অপেক্ষা দেশের বৃহত্তম এই সেতুর স্প্যানের ওপর গাড়ি ও রেল চলাচলের স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ করার।তারপরই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে সারা দেশের সরাসরি সংযোগ স্থাপনের স্বপ্নের রংধনু উদ্ভাসিত হবে।

সরকারি মহল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়া সম্ভব হবে। এরই মধ্যে ভায়াডাক্ট, অর্থাৎ মূল নদীর বাইরে পিলার ও স্প্যান বসানো, সংযোগ সড়ক, নদীশাসনের কাজ শেষ হয়েছে। এই সেতু এবং সেতুর ওপর রেলসেতু নির্মাণকাজ শেষ হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত যেমন সহজ সুগম হবে তেমনি অর্থনৈতিকভাবে দেশের জিডিপিতে যুক্ত হবে উল্লেখযোগ্য সংযোজন।

মূলত পদ্মা সেতুর এই অগ্রগতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,তাঁর সরকারের এবং বাংলাদেশের আস্থা,অর্থনৈতিক,কারিগরি,প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও সাহসের প্রতীক। বাংলাদেশ ও বীর বাঙালি চাইলে সব কিছু করতে পারে,পারে অসাধ্য সাধন করতে- পদ্মা সেতু তারই বড় প্রমাণ। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত বিজয়ের মাসে সেতুর স্প্যান স্থাপন সম্পন্ন করে প্রমত্তা পদ্মা জয়ের মধ্যদিয়ে বিশে^ আরেকটি বিজয় নিশান উড়ালো বাঙালি জাতি। বিজয়ের মাসে পদ্মা সেতুর স্প্যান স্থাপন সম্পন্ন করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাঙালিকে আরেকটি উপহার দিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

শুধু পদ্মা সেতু নয়, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মায়ের ভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা,মুক্তিযুদ্ধেরমধ্যদিয়ে মহান স্বাধীনতা অর্জন,খাদ্য ঘাটতির দেশকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে উন্নীত তথা বাঙালির ক্ষুধা জয়,নারীর ক্ষমতায়ন,নারী শিক্ষার হার সন্তোষজনক অবস্থানে উন্নীত,নারীও শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনা, নি¤œ আয়ের দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর, মানুষের গড় আয়ু, গড় আয় (মাথাপিছু) ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, সবারজন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দ্বারপ্রান্তে উপনীত (আগামী জুনের মধ্যে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে বলে আশা বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর)। অনুরূপ মহাকাশে আমাদের জাতীয় পতাকা খচিত ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণ ও বিচরণের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের মহাকাশ জয়সহ বাঙালির সব বড় অর্জন অর্জিত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই। করোনাকালে দেশের অর্থনীতি সকল সূচকে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থান পার্শ^বর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তানের চেয়ে অনেক গুণ এগিয়েছে মর্মে বিশ^ব্যাংক,এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। করোনাকালেও মানুষের জীবন রক্ষা ও জীবিকার চাকা সচল রাখতে পারায় একইভাবে বিশ^ নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের প্রশংসা করছে, প্রশংসা করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

পদ্মা সেতুর নির্মাণে প্রাসঙ্গিক যে,পদ্মা সেতু কেবল দেশের বৃহত্তম যোগাযোগ স্থাপনা নয়, বরং বাংলাদেশের সাহস,দক্ষতা, কূটনৈতিক মর্যাদা ও অর্থনৈতিক সক্ষমতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রমত্তা পদ্মার বুকে সগৌরবে মাথা তুলে এই সেতু বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও সাহসের জয়গান গাইছে। বস্তুত নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদী নিয়ে কবিতা রয়েছে অসংখ্য; খোদ পদ্মা নদী নিয়েও কবিতা ও সংগীত কম নেই। সে তুলনায় সেতু নিয়ে কবিতা বিরল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে শত প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষম,সফল হয়েছেন, তা তাঁর নেতৃত্বের দৃঢ়তা,প্রতিশ্রুতি, একাগ্রতার বহিঃপ্রকাশ। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম পদ্মার ঢেউকে তার শূন্য হৃদয়-পদ্ম নিয়ে যেতে বলেছিলেন। শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন, পদ্মা নদী বাঙালির শূন্য হৃদয়ের বাহন নয়; বরং বুকভরা গর্ব ও চোখভরা স্বপ্নের এক জীবন্ত সাক্ষী।আমরা দেখতে পাচ্ছি, পদ্মা নদীর সেই উদার নীল আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে রয়েছে পদ্মা সেতুর গৌরবময় কাঠামো। এও যেন এক অনবদ্য কবিতা। আর এই কবিতা রচয়িতার নাম- শেখ হাসিনা।

স্বপ্নের এই সেতুতে প্রথম স্প্যান বসেছিল ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। আর ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বরপদ্মায় বসল সর্বশেষ স্প্যান। ৪১টি স্প্যান বসাতে তিন বছর দুই মাস ১০ দিন সময় লাগল। অবশ্য মহামারি করোনাএবং পদ্মার অত্যধিক ¯্রােত স্প্যান বসানোর কাজে গতি কমিয়ে দেয়।তবে গত ১১ অক্টোবর ৩২তম স্প্যান বসানোর পর অনুকূল আবহাওয়া পাওয়া যায়। কারিগরি কোনো জটিলতাও তৈরি হয়নি। ফলে বাকি স্প্যানগুলো দ্রুত বসানো সম্ভব হয়।

৪২টি পিলারের সঙ্গে স্প্যানগুলো জোড়া দেয়ার মাধ্যমে মূল সেতুরপুরো দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারদৃশ্যমান হয়েছে। তবে ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ৯ কিলোমিটারের কিছু বেশি। নদীর দুই পাশের অংশের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

পদ্মা সেতু নির্মাণের পেছনের ইতিহাস হচ্ছে, আজ থেকে ২২ বছর আাগে ১৯৯৮ সালে সরকারের তহবিলে প্রথম এই সেতুর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।

পদ্মার বুকে সেতু গড়ে তোলার ধারণাটিই ছিল বিস্ময়কর। কেননা, পদ্মার নদীতলের মাটি এতই পরিবর্তনশীল যে মুহূর্তে যেকোনো স্থান থেকে যে পরিমাণ মাটি সরে যায়, তাতে ২১ তলা উঁচু ভবনের উচ্চতার সমপরিমাণ গভীরতার খাদ তৈরি হয়। এমন একটি স্থানে পাইলিংয়ের মাধ্যমে খুঁটি স্থাপনের মতো বিশাল এক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে পদ্মাসেতুর প্রকৌশলীদের। বিশেষ পদ্ধতিতে শেষ পর্যন্ত পাইলিং করতে হয়েছে। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে টিকে থাকার মতো করে পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে। প্রকৌশলীরা জানান, নদীর পানি থেকে প্রায় ১৮ মিটার উঁচু পদ্মা সেতুর তলা। পানির উচ্চতা যতই বাড়–ক না কেন, এর নিচ দিয়ে পাঁচতলার সমান উচ্চতার যেকোনো নৌযান সহজেই চলাচল করতে পারবে।

মূল সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের নভেম্বরে।২০১৭ সালে প্রতিটি খুঁটির নিচে মাটি পরীক্ষায় ২২টি খুঁটির নিচে নরম মাটি পাওয়া যায়। তখন নকশা সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়।শুরুতে প্রতিটি খুঁটির নিচে ছয়টি পাইল (মাটির গভীরে স্টিলের ভিত্তি বসানো) বসানোর পরিকল্পনা ছিল। যুক্তরাজ্যের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নকশা সংশোধন করে একটি করে পাইল বাড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। এ জন্য খুঁটি নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হতে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত লেগে যায়। সব মিলিয়ে এই কাজে প্রায় এক বছর বাড়তি লাগে।

এই সেতু নির্মাণে প্রথম দফায় প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। পরে ২০১১ সালে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ফের সংশোধনের পর ব্যয় দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। এরপর প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন না করে ২০১৮ সালের জুনে আবারও ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। গত ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪ হাজার ১১৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদীশাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।এই সেতু নির্মাণের ফলে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে জিডিপি বাড়বে বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। আর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। মোংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু অর্থনীতিতে যেমন প্রভাব ফেলবে, তেমনি সহজ হবে মানুষের চলাচলও।

অবশ্য পদ্মা সেতু প্রকল্পের বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি। সেতুতে রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো এখনও শেষ হয়নি। সেতুতে প্রায় তিন কিলোমিটার চার লেনের সড়ক ও চার কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার দিনই মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল চলবে। বাকি অংশ পরে হবে।

বহুল প্রত্যাশিত এবং একই সঙ্গে বিপুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে মূল সেতুর কাঠামো কেবল পদ্মার দুই পারকে সংযুক্ত করেনি; বাংলাদেশের যোগাযোগ, উন্নয়ন, অর্থনীতি, পরিবহনের ইতিহাসে একটি বড় মাইলফলকও ছুঁয়েছে। সড়ক ও রেলপথ সংযুক্ত দেশের দীর্ঘতম এ সেতু চালু হলে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি বাড়বে ১ দশমিক ২ শতাংশ। আর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের প্রাপ্তিযোগ কেবল অর্থনীতিতে সীমিত থাকবে না। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সড়ক ও রেল নেটওয়ার্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ আমাদের সামষ্টিক শুভক্ষণ। আমাদের সক্ষমতার সোনার কাঠি।

পদ্মা নদী এবং পদ্মা সেতু এখন আমাদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সহযাত্রী। ইতোমধ্যে পদ্মার দুই তীরে মাওয়া প্রান্তে এবং জাজিরা প্রান্তে সেতু দেখার জন্য প্রতিদিন দেশের দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে হাজারো ভ্রমণ ও সৌন্দর্যপিপাসুনানান বয়সী মানুষ। এখন রীতিমতো পদ্মার দুই পারে দিনের বেশির ভাগ সময়ে জমে মানুষের মিলনমেলা। চলে খাওয়া-দাওয়া,অনেকটা পিকনিক স্পটে,পর্যটন কেন্দ্র পরিণত হয়েছে মাওয়া ও জাজিরার বিশাল এলাকাজুড়ে। বিকেলে পদ্মার বুকে সূর্যাস্ত দেখার মনোরম দৃশ্য সত্যিই অপূর্ব, অনন্য এক অনুভূতি জাগায় মানুষের মনে। পাশাপাশি ইলিশপ্রিয় বাঙালির ইলিশ,ভর্তা, বেগুন ভাজি দিয়ে চলে মধ্যাহ্ন ভোজ। আছে পিঠে,পুলি,ভাপা পিঠা,ফুচকা,ডালপুরি, ছোলা,পিঁয়াজু,মুড়ির মিশ্রণে বিকেলের নাস্তা। এসব কাজে জড়িত পদ্মার দুই তীরের মানুষের ভাগ্যের চাকা খুলে গেছে। এসব ব্যবসায় জড়িত হাজারো মানুষের দৈনন্দিন রুটি-রুজির ব্যবস্থা হয়েছে এই সেতুর বদৌলতে।

এই সেতু পূর্ণাঙ্গ চালুর আগেই এই অঞ্চলের পর্যটন,বিনোদন,ব্যবসা-বাণিজ্য,শিল্প,কলকারখানা, হোটেল, মোটেল,পিকনিক স্পট,অবকাশ যাপন,ভ্রমনে অন্যতম স্থানে পরিণত হবে পদ্মার দুই প্রান্তের মাওয়া-জাজিরা এবং এর সংযোগ সড়কের দুই পাশের দৃষ্টিনন্দন অপরূপ দৃশ্যের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ প্রশান্তি এনে দেবে কর্মব্যস্ত মানুষের মনে। পাশাপাশি পদ্মার মাওয়া-জাজিরা প্রান্তেপর্যটন, ভ্রমণ,অবকাশযাপন,শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা ও অর্থনীতির হাব হিসেবে গড়ে ওঠবে। তা এখন থেকেই সেই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একই সাথে এই সেতুর অর্থনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক,ইতিহাস,ঐতিহ্যগত তাৎপর্যও দিন দিন গুরুত্ববহ হয়ে ওঠছে। এই পদ্মারবুকে দাঁড়িয়ে থাকা সেতু সেই সম্ভাবনার বার্তা জানান দিচ্ছে। বাস্তবে সেই সমূহ সম্ভাবনার প্রতিফলনের প্রত্যাশার প্রতীক্ষায় বাংলাদেশ এবং বাঙালির প্রহর গোনা।

এই সেতু নির্মাণকে কেন্দ্র করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবংআন্তর্জাতিকভাবে সব ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে সব হিসাব-নিকাশ ও চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনা বাংলাদেশ চাইলে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির বড় বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারে, ভবিষ্যতেও পারবে। এই সেতু সেই সত্যের বার্তা দিচ্ছে বিশ^কে।

লেখক: সাংবাদিক,সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ ক্লাইমেটচেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :