শিক্ষার্থীরা পেশাগত সঠিক গাইডলাইন পাচ্ছে না

প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:১৩

ইফতেখায়রুল ইসলাম

মোটিভেশনের নামে দিনের পর দিন যে মানুষগুলো ছাত্রছাত্রীদের মাথায় শুধু 'বিসিএস ক্যাডার হও' টাইপ বার্তা গেঁথে দিয়েছেন, আমি তাদের অপছন্দ করি।

এরা বিসিএসের বাইরে যে আরও অনেক ক্ষেত্র আছে সেই জায়গাগুলো ইচ্ছে করেই আড়াল করে গেছেন দিনের পর দিন। কতগুলো পদের প্রেক্ষিতে কত লক্ষ পরিক্ষার্থী, সেই বিষয় দিব্যি ভুলে গিয়ে শুধু বিসিএস ক্যাডারের তকমা লাগাতে হবে সেটিই বলে গেছেন বারবার! যার ফলে স্নাতক শুরু করতে যাওয়া ছাত্র অথবা ছাত্রীও অ্যাকাডেমিক লেখাপড়া বাদ দিয়ে বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করে দেয় অথবা কীভাবে বিসিএস ক্যাডার হবে সেই স্বপ্নে বিভোর হয়ে যায়!

মোটিভেশনের জোয়ারে ছাত্রছাত্রীদের একটা বিশাল অংশ শুধু বিসিএস স্বপ্নে মশগুল হয়ে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়ে আর সেভাবে উঠে দাঁড়াতেই পারে না! নিজের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন থেকে অনেক দূরে পরে থাকে। বিসিএস নিয়ে এক ধরনের মাইন্ড সেট হয়ে যাওয়ার ফলে সেই অবসাদ থেকে বের হয়ে আর নতুন চ্যালেঞ্জকে আঁকড়ে ধরার সামর্থ্যটুকুও অনেকে হারিয়ে ফেলে। কারণ বিশেষজ্ঞগণ যে শুধু বিসিএসের স্বপ্নই দেখিয়েছেন, এর বাইরে যে এক বিশাল পৃথিবী রয়েছে এবং তাতে যে আমাদের অনেক বিষয়ের এক্সপার্ট প্রয়োজন সেটি তারা বুঝতে দেননি, বুঝাননি! এভাবেই পেশাগত সঠিক গাইডলাইন না পাওয়া হাজার হাজার শিক্ষার্থী নিজের পেশাগত জীবনকে শুরু করার আগেই শেষ করে দিয়েছে!

একটা না হলে আমার আরেকটা পরিকল্পনা যে থাকতে হবে এমন এ, বি, সি প্ল্যান সম্পর্কেও বিশেষ বোদ্ধাগণ জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি! শুধু বিসিএসের স্বপ্নই বুনে দিয়েছেন। নিজের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা তথা কারও কারও ব্যবসা চাঙ্গা করার একটি দারুণ উপায় এই মোটিভেশন হলেও তা যে একটি বুদ্ধিদীপ্ত ও মেধাবী সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিচ্ছে মানসিকভাবে, সেটি বিশেষজ্ঞগণ দিব্যি ভুলে বসে আছেন। তাতে অবশ্য কারই বা কি আসে যায়?

লেখক: অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর), ডিএমপি।

ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/এসকেএস