সোনাগাজীতে অজ্ঞাত ব্যক্তির ভিসেরা রিপোর্টে হত্যার আলামত

প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ২১:৪২

ফেনী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফেনীর সোনাগাজীতে দেড় বছরেও পরিচয় মেলেনি অজ্ঞাত ব্যক্তির। মুহুরী রেগুলেটরের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় অর্ধগলিত এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ। তার বয়স ছিল আনুমানিক ৫০-৫৫ বছর। অথচ ভিসেরা রিপোর্টে পাওয়া গেছে তাকে হত্যার আলামত।

মামলাটি তিনজন তদন্ত কর্মকর্তার হাতবদল হলেও উদঘাটন হয়নি হত্যার রহস্য। হয়তোবা এই হতভাগ্য ব্যক্তিটির পরিবার এখনো তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।  কখন ফিরবেন পরিবারের কাছে। কিন্তু তার স্বজনরাতো জানেন না এই ব্যক্তি ফেনী পৌরসভার গণকবরাস্থানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে সমাহিত আছেন।

সঠিক কোন নাম-পরিচয়-ঠিকানা না পাওয়ায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। ভিসেরা রিপোর্ট প্রাপ্তির পর করা হয়েছে হত্যা মামলা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনাগাজী মডেল থানার এসআই মাহবুব আলম সরকার জানান, ২০১৯ সালের ১৭ আগস্ট বিকালে সোনাগাজীর মুহুরী রেগুলেটরের নিচে পানিতে ভাসমান অজ্ঞাত ব্যক্তির ভাসমান মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় জনতা। স্থানীয় জনতার সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সুরত হাল রিপোর্টে জানা যায়, তার গায়ে একটি হাফ হাতার শার্ট, মাথার দুই পাশে সাদা পাকা চুল ছিল, মাথার তুলিতে কোনো চুল ছিল না এবং গলায় সুতা দিয়ে পেঁছানো একটি স্টিলের লকেট পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় স্থানীয় গ্রাম পুলিশ দেলোয়ার হোসেন শাহআলম বাদি হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। সোনাগাজী মডেল থানার মামলা নম্বর ১৮, তারিখ ১৭-০৮-২০১৯। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন সায়েদুর রহমান। পরদিন ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু তাহের, মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ শাহরিয়ার আহম্মদ ও ডা. এটিএম আবদুল্যাহর সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল টিম ময়নাতদন্ত করেন। পরে ফেনী পৌরসভার গণকবরাস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে তাকে  দাফন করা হয়।

এসআই সায়েদুর রহমানের বদলির পর মামলার তদন্তভার পান এসআই ময়নাল হোসেন। তারও বদলির পর তদন্তভার পান এসআই আনোয়ার হুসেইন। কিন্তু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পাঠানো ভিসেরা প্রতিবেদনে জানা যায় আঘাত জনিত কারণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল।

২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্রাপ্ত ডাক্তারি সনদের মাধ্যমে হত্যার ঘটনা নিশ্চিত হয়ে একই দিন এসআই আনোয়ার হুসেইন বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সোনাগাজী মডেল থানার মামলা নং-২০, তারিখ: ৩০-০৯-২০২০। এরপর মামলাটির তদন্ত ভার পান এসআই মাহবুব আলম সরকার।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, গত কয়েক মাসেও অজ্ঞাত ব্যক্তিটির নাম, ঠিকানা ও পরিচয় না পাওয়ায় আদালতে অভিযোগপত্র দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। তাই এই ব্যক্তির পরিচয় পেতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। তিনি ধারণা করছেন অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নদীর পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/কেএম)