ট্রাম্পের অনেক পররাষ্ট্রনীতিই অনুসরণ করবেন বাইডেন

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ২১:০৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি নতুন করে সাজানো হবে প্রতিশ্রুতি দিলেও শিগগিরই মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো নাটকীয় পরিবর্তন আসছে না। বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যগুলো এমনটাই বলছে।

যদিও প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর বাইডেন ট্রাম্প প্রশাসনের নেয়া সিদ্ধান্ত থেকে সরে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফের যোগদান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগদানের নির্দেশ জারি করেছেন। এছাড়া ট্রাম্পের মুসলমান দেশগুলো থেকে আমেরিকায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছেন বাইডেন। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাইডেন প্রশাসনের মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলছে- ট্রাম্পের সময়ের পররাষ্ট্রনীতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুত সরে আসার সম্ভাবনা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন বলেছেন, ভেনেজুয়েলার সমাজতান্ত্রিক শাসক নিকোলা মাদুরোর ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত দৃষ্টিভঙ্গির কোনো পরিবর্তন হবে না। মাদুরো সরকারের ওপর মার্কিন অবরোধ আরও কঠোরভাবে বলবৎ করা হবে। রাশিয়াকে মোকাবিলায় ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করে যাবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। ডেনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে ইউক্রেনের কাছে ট্যাংকবিধ্বংসী অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেন। 

নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্মানি ও রাশিয়ার মধ্যে পাইপলাইন স্থাপিত হলে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের জন্য পুরো ইউরোপ রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠবে উল্লেখ করে নির্মাণের বিরোধিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন। বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নেয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ অবস্থান থেকে সরে আসেন। মধ্যপ্রাচ্যনীতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ ওই অঞ্চলে সহিংসতা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করা হয়। বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি বা উদ্যোগ নেই বলে জানা যাচ্ছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া স্বীকৃতি থেকে বাইডেন প্রশাসন সরে আসবে না। নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন চীনের উইঘুর ও অন্যান্য অঞ্চলে মুসলমানদের প্রতি দমন-পীড়ন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে উল্লেখ করেছেন চীনের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গিতে কিছু পরিবর্তন এলেও মূল অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হবে না বলেই ব্লিংকেন জানিয়েছেন।

ইরানের সঙ্গে পরমাণু আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র আবার ফিরে যাবে এমনটি জানিয়েছেন বাইডেন। কিন্তু হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি এখন বলছেন, ইরানের সঙ্গে এমন সমঝোতায় যেতে হলে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে।

আমেরিকান ইউনিভার্সিটির বৈদেশিক নীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জর্ডান টামা বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত প্রতিটি বৈদেশিক নীতি ভুল ছিল, এমনটা বলা যাবে না। ফলে, বাইডেন প্রশাসনের খুব দ্রুত বিদ্যমান মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি থেকে একদম ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো তাড়না নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/কেআই/জেবি)