পরিবেশ যখন নিজেকে নিষ্ঠুর বানিয়ে দেয়...

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:০৩ | প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:৫৭

মোটামুটি মানুষের প্রতি দয়ামায়াসম্পন্ন লোক এমন কেউ যদি সংসারে বা কর্মক্ষেত্রে কখনো বহিরাঙ্গে নিরীহ অভিজাত কিন্তু মানসিকভাবে নির্যাতক, দাম্ভিক, প্রকাশ্যে বা ইনবক্স, চিঠিপত্রে কঠোর ভাষা ব্যবহারকারীর পাল্লায় পড়ে, একটা সময় সে নিজেও উল্টা নির্যাতনকারীর মতো ব্যবহার করা শুরু করে।

স্বাভাবিক মানুষটি যে কি না ছোটবেলা থেকে পারিবারিক পরিবেশের কারণে নির্যাতক, টাফ, অনুভূতিশূন্য হিসেবে গড়ে ওঠেনি, বরং যার মধ্যে মানুষের প্রতি সমানুভূতি, সমবেদনা আছে, ইগোহীন। তার মধ্যে তখন প্রশ্ন জাগে সে নিজেই নির্যাতক না তো? তার নিজের কোনো সমস্যা নেই তো?

এটাকে বলে প্রতিক্রিয়াশীল নিষ্ঠুরতা অর্থাৎ আপনি কারো ব্যবহারে অতিষ্ঠ হতে হতে একসময় আপনিও কিছুটা হলেও অতিষ্ঠকারীর ভূমিকায় চলে আসবেন। নির্যাতকের ক্ষতিকারক ঘাতক শব্দমালা দ্বারা আহত হতে হতে এই প্রতিক্রিয়াশীল নিষ্ঠুরতা হয়ে যাওয়াটা একটা বাস্তবতা, জীবন চলার প্রতিচ্ছবি।

তবে আবেগের আঘাত থেকে রিএ্যাকশনজনিত পাল্টা আঘাত গ্রহণযোগ্য বা সমর্থনযোগ্য সেটাও নয়। এই প্রতিক্রিয়া যাতে দেখাতে না হয় সেজন্য আপনাকে দূরে চলে যেতে হবে যাতে নতুন কোনো মানসিক ক্ষত তৈরি না হয়ে ধীরে ধীরে আত্মাটুকু নিরাময় হয়ে যায়। সেটাই এর চিকিৎসা।

আপনার মনের মধ্যে যদি প্রশ্ন জাগে সমস্যার মূলে আমি নই তো? ওই লোকটি আমার দ্বারা নির্যাতিত, ভিকটিম, অপমানিত, অপদস্থ নয় তো? তাহলে খুব সম্ভবত আপনি স্বাভাবিক মানুষটি।

কেননা মানসিক নির্মমতার কারণে আবেগ দয়ামায়াহীন ব্যক্তির মনে কখনই প্রশ্ন আসে না যে সে নিজেও নির্যাতক হতে পারে, অপমানকারী হতে পারে, তার মধ্যেও কোনো সমস্যা থাকতে পারে। তার কাছে সে সর্বদাই শতভাগ সঠিক, সে সর্বদাই ভিকটিম।

মজার ব্যাপার হলো নির্যাতক তার গোয়ারতুমিকে উল্টো গ্লোরিফাই করে এই বলে যে, আমি সাবমিসিভ না, আমি মাথা উঁচু করে চলি, কাউকে পরোয়া করি না ইত্যাদি।

আপনি যদি প্রতিক্রিয়াশীল অত্যাচারী হয়েও যান, মন খারাপ করবেন না। আপনি পরিস্থিতি ও নিয়তির শিকার। এটা আপনার আসল পরিচয় নয়। এই পৃথিবীর সবার কাছে আপনি ভালো শুধু একজনের কাছে বিপর্যয় এটা কখনো সত্য হতে পারে না। শুধু দূর থেকে দূরে চলে যান, আপনি আবার স্বাভাবিক মানুষটি হয়ে উঠবেন। কিন্তু প্রকৃত যে অনুভূতিহীন, নির্যাতক সে কখনোই বদলাবে না, কখনো না। স্বয়ং ঈশ্বরও তাকে বদলাতে পারবে না।

উল্লেখ্য, নির্যাতক দানব হতে নারী কিংবা পুরুষ হওয়া লাগে না, উভয়ের যে কেউ এটা হতে পারে। প্রেম বা সংসারে বিপরীত লিঙ্গের তখন বারোটা বাজে। তাদের সংসর্গে জন্ম নেয় প্রতিক্রিয়াশীল অত্যাচারী।

লেখক: আমিনুল ইসলাম, চিকিৎসক

ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

কিডনি রোগ বাড়ছে শিশুদেরও! যেসব লক্ষণ দেখলেই সতর্কতা জরুরি

সস্তার পেয়ারার গুণে বশে থাকে ডায়াবেটিস-উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগ

যে পাঁচ সমস্যায় আক্রান্তরা গুড় খাওয়ার আগে একবার ভাবুন, নইলে...

সাজেদুর রহমান শাফায়েতের স্বপ্ন পৃথিবী ঘুরে দেখা

খাওয়ার পরপরই চা পান উপকার না ক্ষতি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বরের মধ্যে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের! সুস্থ থাকবেন যেভাবে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে হা করতেও অস্বস্তি লাগে? সমাধান কী জানুন

লিভার ভালো রাখে লাউ! ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

কিডনি ভালো রাখে আমের পাতা! উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :