একজন ব্যতিক্রমী ইমাম হোসাইন আহমদ
আপনার ব্যাংক একাউন্টে ভুলে ৬ লাখ টাকা চলে এলে কি করতেন? ধরুন, ব্যাংক বা অন্য কেউ আপনার কাছে সেই টাকা ফেরত চায়নি, তখন?
খুব একটা সোজা না এর উত্তর। আপনার হয়ত মনে হতে পারে এর উপর জাকাত দিয়ে বাকি অংশ ভোগ করি। কিংবা কিছু দান-সদকা দিয়ে বাকি অংশ ভোগ করি।
কারো তো জানার উপায় নেই, খামোখা ফেরত দিব কেন, আর দিবই বা কাকে? নিশ্চয়ই আমার টাকা, এজন্যই কেউ জিজ্ঞেস করছে না। হয়ত আমি ভুলে গিয়েছি কোনোভাবে।
এই টাকা দিয়ে কিছু পোশাক কিনব, একটা নতুন মডেলের মোবাইল আর একটা ফ্যামিলি ইউরোপ ট্রিপ। সাথে বাবা-মায়ের ভালো ট্রিটমেন্ট আর সন্তানের ভোলো স্কুলে লেখাপড়া। এই বাসায় খুব গাদাগাদি করে থাকতে হয়, একটা তিন বেডের ফ্ল্যাটে শিফট করে ফেলব।
অথচ নেত্রকোনার এক জামে মসজিদের ইমাম হোসাইন আহমদ সেভাবে ভাবেননি। ২০১৮-এর আড়াই বছর পর ১ম বার কৃষি ব্যাংকে আসা হোসাইন আহমদ বলেছেন, আমার অ্যাকাউন্টে থাকার কথা ১০ হাজার টাকা। ভুল করে আসা ৫ লাখ ৮১ হাজার ২৬৮ টাকা আমার নয়। যে কারণে আমি টাকাটা ব্যাংকে ফেরত দিয়েছি। অন্যের টাকা আমি নিতে পারি না। তাই ফেরত দেয়া। টাকার সঠিক মালিক খুঁজে তার একাউন্টে হস্তান্তর করার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বলেছি।
ইমাম হোসাইন আহমদের এই ঘটনা সততার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এই যুগে সবাই শুধু নিতে আর পেতেই জানে। এই টাকার ব্যাপারে ব্যাংকও কিছু জানত না। এখন মানুষ শুধুই ফন্দি আঁটে কিভাবে একাউন্ট আরো স্ফীত করা যায়।
সমাজে যেভাবে চুরি, ডাকাতি, ঘুষ, দুর্নীতি, ছিনতাই ইত্যাদি বেড়েছে, সেখানে সবাই শুধু নিতেই জানে। অথচ ইমাম হোসাইন আহমদ একজন ব্যতিক্রমী সৎ মানুষ। ইমাম সাহেব, আপনি পুরো সমাজকেই লজ্জা দিলেন আর কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন।
লেখক: মাস্টার মেরিনার ও লেখক
ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/এসকেএস