করোনায়ও উত্তরাঞ্চলে চা উৎপাদনে রেকর্ড

শাহ আলম শাহী, দিনাজপুর
| আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:০৯ | প্রকাশিত : ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:০৮

দেশের উত্তরবঙ্গে চা উৎপাদনে সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও নতুন এই রেকর্ড অনুপ্রাণিত করেছে চা শ্রমিক-মালিকদের। ফলে নতুন করে অনেকেই গড়ে তুলছেন চা বাগান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে সমতলের ১০টি চা বাগান ও সাত সহস্রাধিক ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে মোট ১ কোটি ৩ লাখ অর্থাৎ ১০.৩০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এ বছরে চা জাতীয় উৎপাদন হয়েছে ৮৬.৩৯ মিলিয়ন কেজি। অর্থাৎ উত্তরাঞ্চলের সমতলের চা বাগান থেকে ১১.৯২ শতাংশ জাতীয় উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চা বোর্ড পঞ্চগড়ের প্রকল্প পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শামীম আল মামুন।

তিনি জানান, ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় ১০টি নিবন্ধিত ও ১৭টি অনিবন্ধিত চা বাগান এবং সাত হাজার ৩১০টি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান (নিবন্ধিত ১ হাজার ৫১০) এর মোট ১০ হাজার ১৭০ দশমিক ৫৭ একর জমিতে চা চাষ হয়েছে। এসব বাগান থেকে ২০২০ সালে পাঁচ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৬ কেজি সবুজ চা পাতা উত্তোলণ করা হয়েছে। যা থেকে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের ১৮টি চলমান চা কারখানায় ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপন্ন হয়েছে। ২০১৯ সালে উত্তরবঙ্গে চা আবাদীর পরিমাণ ছিল ৮৬৮০.৮৬ একর ও চা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৯৫.৯৯ লাখ কেজি। বিগত বছরের তুলনায় ২০২০ সালে ১,৪৮৯.৮৯ একর চা আবাদী বৃদ্ধি পেয়েছে ও ৭.১১ লাখ কেজি চা বেশি উৎপন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জহিরুল ইসলাম এক বার্তায় জানান, কোভিড পরিস্থিতিতেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সকল চা বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। এছাড়াও উৎপাদনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা, সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, বাগানে কঠোরভাবে কোভিড প্রটোকল নিশ্চিতকরণ, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, রেশন এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের ফলে ২০২০ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে ক্ষুদ্র চা চাষিদের দোরগোড়ায় প্রশিক্ষণ সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ‘ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলে’র মাধ্যমে চা আবাদ বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহের ফলে সমতলের চা বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে এ বছর রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।’

পঞ্চগড় চা বোর্ডের ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন জানান, সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড় ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এলাকা। দিন দিন উত্তরাঞ্চলে চা চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চা চাষ সম্প্রসারণের জন্য চাষিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে ইতোমধ্যে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এ আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পেস্ট ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে চা চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, চাষের নানান রোগবালাই ও পোকা দমনে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সহায়তা দেওয়া হয়। এছাড়া,এ বছর ক্ষুদ্র চাষিরা তাদের বাগানের উৎপাদিত কাঁচা পাতার ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় তারা চা চাষে উৎসাহিত হয়েছে। চা বোর্ডের পরামর্শ ও সহযোগিতায় বাগানের যত্ন নিয়েছে উদ্যোক্তরা। আগামীতে চা উৎপাদনে আরো সর্বোচ্চ রেকর্ড হবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

(ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :