শিক্ষার্থীদের মদপান: রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:০৭
ফাইল ছবি

মদ বিক্রির অনুমতি না থাকলেও রাজধানীর উত্তরার ‘ব্যাম্বু শ্যুটস’ রেস্টুরেন্টে মদপান করেছিলেন বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এই ঘটনার পর রেস্টুরেন্টটিতে সরেজমিন পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে পুলিশ।

সোমবার উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের রেস্টুরেন্টটিতে তরুণী ও তার বন্ধুরা যে মদপান করেছিল সেই রেস্টুরেন্টটির মদ বিক্রি বা পান করার কোনো অনুমতি ছিল না। আমরা জেনেছি, তারা (রেস্টুরেন্ট) সাধারণ খাবার বিক্রি করত। পাঁচজন যখন রেস্টুরেন্টে অবৈধভাবে মদ খাচ্ছিল, তা (রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ) আমাদের কিছু জানায়নি। যেহেতু তাদের অনুমতি নেই, সেহেতু আমাদের জানানো উচিত ছিল। দ্রুতই আমরা রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

জানা যায়, গত শুক্রবার বিকালে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তার বয়ফ্রেন্ড মর্তুজা রায়হান চৌধুরীসহ পাঁচজন উত্তরার 'ব্যাম্বু শ্যুটস' রেস্টুরেন্টে যান এবং মদপান করেন। এসময় তাদের এক বান্ধবী মদপানে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি ও তার বন্ধুকে উবারের একটি গাড়িতে তুলে দেয়া হয়। রেস্টুরেন্টে অবস্থানের সময় ওই ছাত্রীও অসুস্থতা বোধ করেন। পরে তাকে নিয়ে আসা হয় মোহাম্মদপুর এলাকায় তাফসির নামে তাদের এক বন্ধুর বাসায়। এটি মোহাম্মাদীয়া হোমস লিমিটেডের তিনতলার একটি ফ্ল্যাট।

পরদিন (২৯ ডিসেম্বর) ওই বন্ধুর বাসায় থাকাকালে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন তার বয়ফ্রেন্ড মর্তুজা রায়হান। এতে তিনি আরও অসুস্থতা বোধ করলে গভীর রাতে তাকে প্রথমে নেয়া হয় কল্যাণপুরের ইবনে সিনা হাসপাতালে। সেখানে লাইফ সাপোর্টের ব্যবস্থা না থাকায় নেয়া হয় ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার দুপুরে মৃত্যু হয় ওই শিক্ষার্থীর।

শনিবার ওই শিক্ষার্থীর অসুস্থতার কথা পরিবারকে জানান তার বয়ফ্রেন্ড রায়হান। খবর পেয়ে তার বাবা (শিক্ষার্থীর) চট্টগ্রাম থেকে আসেন এবং মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।

এদিকে মামলার এজাহারে থাকা তিন নম্বর আসামি আরাফাত মামলার আগের দিন (৩০ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এবং অনেক গোপনীয়তার সঙ্গে হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। যা পুলিশ রবিবার বিকালে জানতে পেরেছে। মেয়ে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠলেও সোহরাওয়ার্দীর ফরেনসিক বিভাগ ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, ওই ছাত্রীর সঙ্গে জোরপূর্বক যৌনসঙ্গমের আলামত পাওয়া যায়নি। তবে ফরেনসিক রিপোর্ট পেতে একমাস লাগতে পারে। এরপরই বোঝা যাবে বিষাক্ত মদ পানে নাকি অতিরিক্ত মদপানে তার মৃত্যু হয়েছে।

মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ওই রেস্টুরেন্টে ভিকটিমসহ পাঁচজন মদপান করে। তাদের মধ্যে ভিকটিম ও তার বন্ধু নেহা বমি করেছে। তারা সেগুলো পরিষ্কারও করেছে। এর মধ্যে রেস্টুরেন্টে কর্তৃপক্ষ জেনে যাওয়ার কথা। কিন্তু তাদের অনুমতি নেই তা সত্ত্বেও তারা এ বিষয়ে পুলিশকে কিছু জানায়নি। এই ঘটনায় তারা জড়িত থাকতে পারে। আমরা উত্তরা পশ্চিম থানার সঙ্গে মিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

(ঢাকাটাইমস/০১ফেব্রুয়ারি/এসএস/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :