স্বজনদের নামে ভাতা তুলে ইউপি সদস্যের আত্মসাৎ

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী
 | প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২২:৪৮

আত্মীয়স্বজনদের নামে ভুয়া তথ্য দিয়ে সরকারি বিভিন্ন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। স্ত্রী ও শ্যালিকার নামে বিধবা ভাতা, ছেলের নামে প্রতিবন্ধী ভাতা, শ্বশুর-শাশুড়ির নামে বয়স্ক ভাতা উত্তোলনের এই অভিযোগ ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান মজুমদারের বিরুদ্ধে। তিনি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে দরবারপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্যপদে নির্বাচিত হন কামরুজ্জামান মজুমদার। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, শালিস বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন এই ইউপি সদস্য।

২০১৭ ও ২০১৮ সালে চালু হওয়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তহবিলের বিভিন্ন তালিকা যাচাই করে দেখা যায়, ইউপি সদস্য কামরুজ্জামানের স্ত্রী সালমা তাহিনুরের নামে রয়েছে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা কার্ড। তার ছেলে নাহিদুল হাসানের রয়েছে প্রতিবন্ধী ভাতা। শ্যালিকা উম্মে রুমান ও উম্মে কুলসুম দাম্পত্য জীবনে সুখে-স্বাচ্ছন্দে থাকলেও তাদের নামে মাসিক হারে উত্তোলন হচ্ছে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতার ভাতা। স্ত্রীর বড় ভাই আনিসুজ্জামানের নামেও রয়েছে প্রতিবন্ধী ভাতা। এছাড়াও শ্বশুর নুরুজ্জামান ও শাশুড়ি আয়েশা আক্তার ভোগ করছেন বয়স্ক ভাতা।

স্থানীয়দের অভিযোগ সরকারি সুযোগ-সুবিধা বণ্টনে এই ইউপি সদস্য তার পরিবার ও স্বজনদের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এতে করে সামাজিক নিরাপত্তা তহবিলের প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হলেও মান-সম্মানের ভয়ে কেউ মুখ খুলছেন না।

স্থানীয়রা জানান, এক সময় কামরুজ্জামান ফুলগাজী উপজেলা কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। পরে ২০১৫ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ ভাগিয়ে নেন। শুরু করেন শালিস বাণিজ্যসহ এলাকায় একচ্ছত্র রাজত্ব।

এদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, আমার স্ত্রীর বড় ভাই প্রতিবন্ধী। তাই তিনি ভাতা ভোগ করেন। তার ছেলে কয়েকবছর আগে রিকশা থেকে পড়ে হাত ভেঙে যাওয়ায় তার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু স্ত্রী ও শ্যালিকাদের নামে কিভাবে বিধবা ভাতা উত্তোলন হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন মজুমদার বলেন, ইউপি সদস্যের পরিবার ও স্বজনদের নামে ভাতা উত্তোলনের বিষয়টি আমি শুনেছি। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজেশ করে এ সুবিধা নিচ্ছেন তিনি। এসব নামের তালিকা আমার পরিষদ থেকে দেয়া হয়নি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হারুন মিয়া জানান, দরবারপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের পরিবার ও স্বজনদের নামে ভাতা উত্তোলন হচ্ছে কি না তা আমি জানি না। ইউনিয়ন পর্যায়ে কারা ভাতা ভোগ করবেন সে বিষয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বয়ে একটি যাছাই-বাছাই কমিটি রয়েছে। ওই কমিটি ভাতা ভোগীদের তালিকা চূড়ান্ত করে সমাজসেবা কার্যালয়ে পাঠায়।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে মৌখিকভাবে জেনেছি। অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২ফেব্রুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :