ঘর দেয়ার কথা বলে ডেকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নাটোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২০:৩১ | প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২০:১৭

প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেওয়ার কথা বলে শতাধিক ভূমিহীনকে ডেকে এনে অধ্যক্ষর অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলার হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুর ১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ওই ভূমিহীনদের দিয়ে জোর করে ছাত্রী হয়রানির প্রতিবাদ ও অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করানো হয়। যদিও ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করেন হাতিয়ান্দহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। কিন্তু কর্মসূচিতে স্কুলের কোন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে দেখা যায়নি।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেয়া হবে বলে তালিকা বাছাইয়ের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে শতাধিক ভূমিহীনকে হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বসিয়ে রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম। পরে এসব ভূমিহীনদের দিয়েই ওই অধ্যক্ষ বিরুদ্ধে মানববন্ধন করান তিনি।

জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলমের ফুফাতো ভাই ফিরোজ উদ্দিন প্রামানিক মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন। আর তিনিই সকল ভূমিহীনের ঘরের তালিকা যাচাই-বাছাই করা হবে বলে ভূমিহীনদের ডেকে আনেন। এমন কথা জানান বেশ কয়েকজন ভূমিহীন। এছাড়া মানববন্ধনে রাজা মাহমুদ ও হাওয়া বেগম নামে দুজন বক্তব্য রাখেন। তাদের বাড়ি লাড়ুয়া, উভয় স্বামী-স্ত্রী বলে জানা যায়। তাদেরও কোন শিক্ষার্থী ওই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন না।

হাতিয়ান্দহ কলিগ্রামের সুরাতন বেগম (৩৫), রেহেনা বেগম (৬০), সায়রত বিবি (৫৫) সহ প্রায় বিশজন ভূমিহীন মহিলা জানান, তারা সকলেই ঘরের জন্য আবেদন করেছেন। তাই চেয়ারম্যানের লোক তাদেরকে সকাল থেকে ডেকে এনে বসিয়ে রেখেছেন। আমরা লেখাপড়া কিছুই জানি না। এখন মানববন্ধনে দাঁড়াতে বলছে, আর ঘরের কথা তো কিছুই বলছে না!

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, স্কুলের সুমান ক্ষুণ্ন করতেই চেয়ারম্যান মরিয়া হয়ে ভাড়া করা লোক দিয়ে আর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেছেন- যেটা কাম্য নয়।

হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাকুর রহমান চঞ্চল বলেন, ছাত্রী যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেয়ার নামে টাকা আদায় ও ভূমিহীনদের মিথ্যা আশ্বাসে ডেকে নিয়ে বসিয়ে রেখে তাদের দিয়ে মানববন্ধন করানো দুঃখজনক বলেন তিনি। আর এতে স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ন করায় চেয়ারম্যানের শাস্তি দাবি করেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ছাত্রী যৌনহয়রানির জন্য অভিযুক্ত আটক হয়েছে। এখন গভীর যড়যন্ত্র চলছে। প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে পাঁয়তারা করছেন ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম।

এ বিষয়ে হাতিয়ান্দহ ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম বলেন, ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে তার ইউনিয়ন পরিষদের সামনে। তিনি এর চেয়ে বেশি কিছু জানেন না। আর ভূমিহীনরাও মানববন্ধনে ছিলেন স্বীকার করেন। তবে তাদের কে বা কারা ডেকেছে তিনি জানেন না। কিছুক্ষণ পরে এই প্রতিবেদককে ফোন করে বিষয়টি রফাদফার প্রস্তাবও দেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৮ ডিসেম্বর সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির এক কলেজছাত্রী তার চাচাতো বোনকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করাতে গিয়ে অফিস সহকারী রেজাউল করিমের কাছে যৌন নিপীড়নের শিকার হন। পরে কলেজ অধ্যক্ষসহ অন্যরা স্থানীয়ভাবে বসে দেড় লাখ টাকায় বিষয়টি মীমাংসা করেন। এই ঘটনায় অফিস সহকারী রেজাউলকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিস তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

(ঢাকাটাইমস/৩ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :