মেঘনার পানি পানযোগ্য হবে ২০২৪ সালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:১৫

ঢাকা শহরের বসবাসকারী দেড় কোটির বেশি মানুষকে পানি সরবরাহের কাজটি করছে ঢাকা ওয়াসা। গভীর নলকূলের মাধ্যমে পানি সরবরাহের পথ থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে সংস্থাটি। তাদের লক্ষ্য, ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ বা গভীর নলকূলের পানির বদলে নগরবাসীকে ‘সারফেস ওয়াটার’ বা ভূ-উপরস্থ পানি পরিশোধন করে তা পানযোগ্য করে তোলা।

এরমধ্যে এ সংক্রান্ত পাঁচটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করে চলেছে ওয়াসা। সংস্থাটি বলছে, বর্তমানে ওয়াসা ৩৪ শতাংশ ভূউপরস্থ ও ৬৬ শতাংশ গভীর নলকূলের মাধ্যমে মোট ২৬৫ কোটি লিটার পানি প্রতিদিন সরবরাহ করছে। ওয়াসা চায়, ৭০ শতাংশ ভূউপরস্থ ও ৩০ শতাংশ গভীর নলকূপের মাধ্যমে সরবরাহ করতে। এর অংশ হিসেবে ২০১২ সালে করা মাস্টার প্ল্যানের ওপর ভিত্তি করে মেঘনা নদীর পানি পরিশোধন করে ঢাকায় নিয়ে আসতে কাজ করছে ওয়াসা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। অর্থাৎ এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৪ সালের শুরুতে ঢাকাবাসীর জন্য পানযোগ্য হতে চলেছে মেঘনা নদীর পানি।

‘ঢাকা এনভায়নমেন্টারি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প’ নামে এ প্রকল্পটির কাজ চলছে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের গন্ধর্বপুরে। মেঘনা নদীর বিশনন্দী এলাকা থেকে পানি নিয়ে তা পরিশোধন করা হবে এ প্রকল্পে। পরিশোধিত পানি পাইপলাইনের মাধ্যমে রাজধানীর বারিধারা ড্রিসটিবিউশন নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে। এরপর তা সরবরাহ হবে নগরীর উত্তরা, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, মিরপুরসহ আশপাশের এলাকায়। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এখান থেকে প্রতিদিন ৫০ কোটি লিটার পরিশোধিত পানি ঢাকায় পৌঁছাবো বলে জানিয়েছে ওয়াসা।

প্রকল্পস্থল ঘুরে দেখা যায়, মূল প্রকল্পের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। প্রকল্পকাজের অবকাঠামো এরইমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। বাকি কাজ এগিয়ে নিতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশী কর্মীদের কর্মচাঞ্চল্য দেখা গেছে প্রকল্পস্থল জুড়ে।

করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করে চলেছেন কর্মীরা। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, কোডিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে কাজে কিছুটা ধীরগতি ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গতি পেয়েছে। এরইমধ্যে ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

শনিবার প্রকল্পস্থল পরিদর্শনে যান ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। পরিদর্শন শেষে তাকসিম এ খান বলেন, ‘সরকার অনেক সামনের দিকে দেখছে। ২০৪১ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের যে পানি ব্যবস্থাপনা তা এর মধ্যে ঢেলে সাজাতে হবে। আমাদের পাঁচটা ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। তার মধ্যে একটি গন্ধর্বপুর ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। ইনশাআল্লাহ এটি ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। আমাদের যে মূল লক্ষ্য, ঢাকা শহরের পানি ব্যবস্থাপনায় সারফেস ওয়াটারের আধিক্য নিয়ে আসা ও পরিবেশবান্ধব করাই একটি অংশ। গন্ধর্বপুর ও সায়েদাবাদ ফেজ ৩ সম্পন্ন হওয়ার পর আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। অর্থাৎ ৭০ শতাংশ সারফেজ ওয়াটার ও ৩০ শতাংশ আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার। যেটি হবে পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী।

২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। মাস্টার প্ল্যান আগে হওয়ায় তখন যে ব্যয় ধরা হয়েছিল, তার চেয়ে অনেকটা ব্যয় বেড়েছে প্রকল্পটিতে। পাশাপাশি জমি অধিগ্রহণেও খরচ বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে সময়।

এ বিষয়ে ওয়াসার এমডি বলেন, আমাদের মাস্টার প্ল্যান ২০১২ সালের। আমরা যে ট্রিটমেন্ট প্লান্টগুলো করব, সেটা মাস্টার প্লানে ছিল। ২০১৫-১৬ সালে থেকে এর ড্রইং, ডিজাইন শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালে আমরা ফান্ড পেয়েছি। তখন আমরা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি। এটির মেয়াদ ২০২১ সাল পর্যন্ত ছিল। যেহেতু শুরুই হয়েছে দেরিতে তাই ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এটার মেয়াদ। ৩০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় বেড়েছে। ব্যয় বাড়ার কারণ ভূমি অধিগ্রহণের পয়সার কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে। ২০১৩ সালের আউট লাইন স্টিমেট আমরা ২০১৮ সালে করেছি। এ কারণেও ব্যয় কিছুটা বেড়েছে।

২০২৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত দেড় বছরে কোভিড মহামারি থাকার পরেও ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। হাতে প্রায় দুই বছর সময় সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে কাজ হতে হবেই।

তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের মোট পানির চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারছি। আমরা এখনি ২৬৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করছি। সারফেস ওয়াটার ৩৪ শতাংশ। ৬৬ শতাংশ আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার। এটা বিপরীত হবে।

এদিকে একই সময় প্রকল্পস্থল পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। প্রকল্প ব্যয়সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রকল্প ব্যয় বাড়ার কিছু যৌক্তিক কারণ আছে। ২০১৩ সালে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সে প্রকল্প ২০২০ সাল পর্যন্ত এসেছে। এসময়ের মধ্যে অনেক জিনিসের দামপত্রের দাম বেড়ে গেছে। ফলে প্রকল্প ব্যয় বাড়ে।

২০২৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এক্ষেত্রে কালক্ষেপণের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

প্রকল্পটি ঢাকার এত দূরে নিয়ে আসার কারণ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ঢাকার আশপাশের মধ্যে এখানকার পানি সব থেকে ভালো।

(ঢাকাটাইমস/৬জানুয়ারি/কারই/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রেলকে গড়ে তুলতে হবে: রেলমন্ত্রী

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে

বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র

সীমান্তে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিলো বিএসএফ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :