আখাউড়ায় বিদ্রোহী থাকলেও আ.লীগ ঐক্যবদ্ধ, বিএনপিতে কোন্দল

প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:৩৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চতুর্থ ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচন আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এবার ইভিএম পদ্ধতিতে এই পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হবে। 

নির্বাচনে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা পুরোদমে প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়েছেন।

আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. তাকজিল খলিফা কাজল। বিদ্রোহী হিসেবে রয়েছেন সাবেক পৌর মেয়র মো. নূরুল হক ভূঁইয়া, যুবলীগ কর্মী মো. শফিকুল ইসলাম। বিএনপি থেকে একক প্রার্থী হলেন সাবেক সহসভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন আব্দু। জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া হয়েছে।

নির্বাচনে বিগত দিনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে বিভক্তি ও দলীয় কোন্দলের কারণে বিএনপি প্রার্থী একেবারেই স্বস্তিতে নেই। মান-অভিমান করে থাকা আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা একে একে দলে ভিড়ছেন। নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ যেন উজ্জীবিত হয়ে উঠছে। 

নির্বাচনী মাঠে দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা জয়ের ব্যাপরে চিন্তার কোনো কারণই দেখছেন না। ইতোমধ্যেই জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রধান বিদ্রোহী প্রার্থী মোবারক হোসেন রতন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে দলটি আরো বেশি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক জয়নাল আবেদীন বলেন, দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য সবাইকেই আহবান জানানো হয়েছে। সবাই একযোগে কাজও করছে।

তবে একেবারে বিপরীত চিত্র বিএনপিতে। দলে একক প্রার্থী। তবুও স্বস্তি নেই। পদত্যাগের হিড়িকে দলটিতে অস্বস্তিকর অবস্থা। পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে পৌর বিএনপির কমিটি দিলে এতেই শুরু হয় অন্য রকম পরিস্থিতির। কমিটি দেয়ার ১১ দিনে পদত্যাগ করেছে ১১ জন। এ অবস্থায় অনেকেই দল বিমুখ হয়ে পড়েছেন। নির্বাচনে প্রার্থীকে সহায়তা তো দূরের কথা দলের ঝড় সামলাতেই চিন্তায় নীতি-নির্ধারকেরা। 

এ বিষয়ে পদত্যাগ করা পৌর বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি মো. বাহার মিয়া বলেন, ‘আমার মতো অনেক ত্যাগী নেতাকেই বর্তমান আহবায়ক কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। কারো সঙ্গে আলোচনা না করেই অন্য উপজেলার লোককে আহবায়ক করা হয়েছে। আমরা তার নেতৃত্বে থাকব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিএনপির রাজনীতিকে ঘরে ঢুকিয়ে ফেলা হয়েছে। এভাবে রাজনীতি করা সম্ভব না। বিএনপি প্রার্থী মো. জয়নাল আবেদীন আব্দু বলেন, আমরা আতংকের মাঝে আছি। এখানের গ্রুপিং বা কোন্দলের বিষয়টি অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এখানকার রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। মিশনের পক্ষের লোকজন আমার নির্বাচনে মাঠে নাই। তারপর সাধ্যমত আমার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা খুব একটা মাথা ব্যথার কারণ হবে বলে মনে করছেন না দলটির সিনিয়র নেতারা। কেননা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক (স্থানীয় সংসদ সদস্য) এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড করেন। পাশাপাশি বেকারদের চাকরি দিয়ে ও ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে দল মনোনীত প্রার্থী এবং টানা দুইবারের নির্বাচিত মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের এলাকায় একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এছাড়া দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকা অনেকেই এখন প্রার্থী কাজলের পক্ষে কাজ করছেন বলে আওয়ামী লীগ জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

(ঢাকাটাইমস/৭ফেব্রুয়ারি/কেআর)