যশোরে বিয়ের নামে প্রতারণার অভিযোগে মামলা

যশোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২১:২৩

নিজ ধর্ম পরিচয় গোপন করে বিয়ের পর পাঁচ বছর ধরে সংসার করেছেন। এরপর স্ত্রীর গর্ভের তিনটি সন্তান নষ্ট করা হলো। এসব অভিযোগে একজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না অসহায় এক নারী। বরং উল্টো অভিযুক্ত প্রতারক শিমুল বিশ্বাসের হুমকি-ধামকিতে তিনি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ভুক্তভোগী নারী সাতক্ষীরা জেলার মধ্যকাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৬ সালে সাতক্ষীরা জেলায় কর্মরত প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে চাকরি করতেন যশোরের বাঘারপাড়ার রায়পুর ইউনিয়নের নলডাঙ্গা গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে শিমুল বিশ্বাস(৩২)।

কোম্পানির সাতক্ষীরা জেলা জোনাল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন শিমুল বিশ্বাস। এ সময় পেশাগত কাজের ফাঁকে তার পরিচয় হয় নাজনীন আক্তার প্রিয়ার সঙ্গে। শিমুল নিজের ধর্মের পরিচয় গোপন রেখে নিজেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক দাবি করে প্রিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে তিনি প্রিয়াকে বিয়ে করার জন্য তার পরিবারের কাছে প্রস্তাব দেন। প্রিয়ার পরিবার ছেলের খোঁজখবর না নিয়ে বিয়ে দিতে অস্বীকার করলে পরিবারের অজান্তে ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ নকল কাবিননামায় স্বাক্ষর করে বিয়ে করেন তারা।

প্রিয়া জানান, বিয়ে করার পর থেকে কর্মস্থল পরিবর্তন করতে থাকেন শিমুল বিশ্বাস। এরপর আমাকে ভাগিয়ে নিয়ে বিভিন্ন জেলায় চাকরিকালে স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে থাকেন। এরই মাঝে তিন তিনবার গর্ভে সন্তান আসে আমার। কিন্তু শিমুল সন্তান প্রসবের আগেই নানা প্ররোচণায় ফেলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে নষ্ট করে দেয়। সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কর্মরত অবস্থায় আমাকে ফেলে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান শিমুল।

এরপর আমি ফিরে আসি সাতক্ষীরার গ্রামের বাড়িতে। শিমুলকে খুঁজতে থাকি। এরই মাঝে জানতে পারি শিমুলের বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়ার নলডাঙ্গা গ্রামে। ওইদিন সন্ধ্যায় নলডাঙ্গা গ্রামে শিমুলের বাড়িতে গিয়ে জানতে পারি সে মুসলিম নয়, হিন্দু। আমার সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করে সে পাঁচ বছর সংসার করেছে।

শিমুলের বাড়িতে যাওয়ায় আমার ওপর চরম ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে শিমুল ও তার পরিবারের সদস্যরা। মুহূর্তের মধ্যে গ্রাম না ছাড়লে খুন করারও হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে আমি নিরুপায় হয়ে ওই গ্রাম ছেড়ে বাঘারপাড়া থানায় এসে আশ্রয় নিয়েছি। পরদিন ২৭ জানুয়ারি বাঘারপাড়া থানায় শিমুল বিশ্বাসসহ তার বাবা-মাকে আসামি করে বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা করি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঘারপাড়া থানার পরিদর্শক শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। মামলার প্রধান আসামি শিমুল বিশ্বাস পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। বাকি আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন বলেন, মেয়েটি সাতক্ষীরা থেকে এসে আমাদের থানায় অভিযোগ করেন। এরপর মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/৮ফেব্রুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :