বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় এখনই: বিএসইসি চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৮:৩৯

বাংলাদেশের গতিশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় এখনই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

মঙ্গলবার আরব আমিরাতের দু্বাইয়ে ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের আয়োজিত ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়াল অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’ শীর্ষক রোড শোতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। এদিন দুবাইয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান প্রথম অনলাইনে বেনিফিশিয়ারি অনার্স (বিও) হিসাব উদ্বোধন করা হয়।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ না করলে ভুল হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না। তখন বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বিনিয়োগ করা হবে। গত দুই দিন দুবাইয়ের বিভিন্ন ব্যাংক ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছি আমরা। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে তাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখেছি।’

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘আমরা অনেকে ভুলেই গিয়েছিলাম দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের কাজ পুঁজিবাজারের এবং ব্যাংকের কাজ স্বল্পমেয়াদী ঋণ দেয়া। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাংকগুলো এক বছর মেয়াদী আমানত নিয়ে ৪-৫ বছর মেয়াদী ঋণ দেয়। যাতে করে ঋণখেলাপি তৈরি হয় এবং ব্যাংকগুলোকে বিপদে পড়তে হয়।’

এতো আইপিও দেয়ার কারণ জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে ক্যাপিটাল না দেয়া হলে, কে দেবে? সেকেন্ডারি মার্কেট হলো বাহির হওয়ার রাস্তা। তাই আমরা এখন প্রাইমারি মার্কেটকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামীতে দেশে বড় বড় অর্থায়নের প্রয়োজন হবে। যা পুঁজিবাজার থেকে দিতে হবে। এটা বন্ডের মাধ্যমে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’ গত কয়েক মাসে অনেক বন্ডের অনুমোদন দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘সব বন্ড বিক্রি হয়েছে। কোনো বন্ড আন্ডারসাবসক্রাইব হয়নি। এই বন্ড ব্যবসায়ীদেরকে এগিয়ে নেবে। যারা ঝুঁকি নিতে না চায়, তারা বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারে।’

অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘প্রতিটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ১০-১৮ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেবে। এখন কেউ যদি লোকসান করতে না চায়, তাহলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারে। এছাড়া বন্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এই দুই ক্ষেত্রে বিনিয়োগে ঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে সক্ষমতা থাকলে নিজেই পোর্টফোলিও ম্যানেজ করতে পারে। এক্ষেত্রে ঝুঁকিও তার। ফলে লোকসান করে কাউকে দোষারোপ করা ঠিক হবে না।’

গ্রিন ফিল্ডের প্রজেক্টে উৎসাহিত করার কথা জানিয়ে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কোনো কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে, সে কেন শেয়ারবাজারে আসবে। তাই গ্রিন ফিল্ডের প্রজেক্ট দিতে হবে। এক্ষেত্রে যাদের তালিকাভুক্ত কোম্পানি আছে, তাদেরকে দিতে হবে। তারপরেও ওই তালিকাভুক্ত কোম্পানির অতীত রেকর্ড, উদ্যোক্তা/পরিচালকদের ইতিহাস বিবেচনায় নিতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘অধিকাংশ দেশে শেয়ারবাজারের উন্নতি হলে অর্থনীতির উন্নতি হয়, আর শেয়ারবাজারের পতন হলে অর্থনীতির পতন হয়। কিন্তু আমাদের দেশের এরকম হয় না।’

সব ব্যবসাতেই ঝুঁকি আছে জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘একইভাবে শেয়ারবাজারেও ঝুঁকি আছে। গেইন করতে গেলে ঝুঁকি নিতে হবে।’ এসময় তিনি বলেন, ‘বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শেয়ারবাজারে অনেক রিফরমস হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘বাংলাদেশে শেয়ারবাজারসহ সব ক্ষেত্রেই এখন বিনিয়োগের উৎকৃষ্ট সময়। আমাদের শেয়ারবাজার সময়ের ব্যবধানে অনেক উন্নত হয়েছে। অনলাইনে বিও খোলাসহ নানা অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমান কমিশন আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অর্থনীতির উন্নতির সঙ্গে পুঁজিবাজারের একইধারায় উন্নয়ন হয়নি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের থেকেও আমাদের পুঁজিবাজার অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই বাজারকে উন্নয়নে শুধুমাত্র ইক্যুইটির পরিবর্তে নতুন নতুন পণ্য সংযোজন করতে হবে।’

‘এখন পুঁজিবাজারে লেনদেন বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। এই সমস্যা কাটিয়ে তোলার জন্য ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) চালু করা হবে। এরইমধ্যে ২০টির বেশি ব্রোকারেজ হাউজ থেকে এই ওএমএস সিস্টেমের জন্য আবেদন করেছে।’

(ঢাকাটাইমস/০৯ফেব্রুয়ারি/এসআই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :