মাশরুমঘর ভেঙে যাওয়ায় তরুণ উদ্যোক্তার স্বপ্নভঙ্গ
হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়া আত্মপ্রত্যয়ী এক তরুণ উদ্যোক্তা চাকরি না করে নিজেই মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন। স্বপ্ন যখন বাস্তবের দ্বারপ্রান্তে ঠিক তখনই মাশরুমঘরটি ভেঙে গেছে।
গত সোমবার দুপুরে হঠাৎ করেই পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের কারখানা গ্রামের আতিউরের মাশরুমের খামারটি ভেঙে যায়।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, খামার থেকে মাশরুম চাষের সিলিন্ডার সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে ভেঙে পড়া মাশরুম চাষের ঘরটি পুনরায় নির্মাণের জন্য কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। এতে সহযোগিতা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আতিউরের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে গত বছরের আগস্ট মাসের শুরুতে কারখানা গ্রামের নিজ বাড়িতে মাশরুম চাষ শুরু করেন উচ্চ শিক্ষিত অতিউর। শুরুতে তিনি বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে সাড়ে ১২ লাখ বিনিয়োগ করেছেন। তার খামারে গত অক্টোবর মাস থেকে মাশরুমের উৎপাদন শুরু হয়। প্রতিনিয়ত উৎপাদন বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। প্রতিদিন তিনি নিজেই বিভিন্ন হাট বাজারে মাশরুম বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রতি কেজি তিনশ টাকা ধরে বিক্রি করতেন। গত সোমবারও তিনি পনের কেজি মাশরুম নিয়ে উপজেলা সদরে যান। দুপুর ১২টার দিকে খবর পান তার মাশরুমের খামারটি ভেঙে পড়েছে।
এমন খবর শুনে তিনি উপজেলা চত্বরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন।
অতিউরের স্ত্রী আয়শা জানান, সোমবার মাশরুমের উৎপাদন ছিল সবচেয়ে বেশি। আর ওইদিনই হঠাৎ বাতাসের গতি বেড়ে যাওয়ায় মাশরুমঘরটি ভেঙে পড়েছে।
অতিউর বলেন, ‘ওয়েস্টার জাতের মাশরুম চাষ করার পর কেবল ফলন আসতে শুরু করেছে। বাজারজাত করার জন্য আমি প্রতিনিয়ত মাশরুম নিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে যাচ্ছি। খামারটি ভেঙে যাওয়ায় আমার সব শেষ হয়ে গেল। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হলে আমাকে আবার নতুনভাবে শুরু করতে হবে। তবে সরকারের পৃষ্ঠাপোষকতা ছাড়া তা আর সম্ভব হবে না।’
অতিউর জানান, মাশরুমের খামার ভেঙে পড়ায় তার প্রায় বিশ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। খামারটি ভেঙে যাওয়ায় অতিউরের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। বিষয়টি আমি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তাকে (অতিউর) টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারিভাবে সহায়তার প্রয়োজন।’
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আমরা পদক্ষেপ নেব।’
(ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রুয়ারি/পিএল)