ভিকটিম পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা ডিএমপির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:০৮

অপরাধের শিকার (ক্রাইম ভিকটিম) হওয়া ব্যক্তির পরিবারের পাশে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

রবিবার বিকালে ডিএমপি সদরদপ্তরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এই কথা জানান।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল ক্রাইম ভিকটিমের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। কারণ পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অপরাধের শিকার হয়ে প্রাণ হারালে তার পরিবার নিদারুণ অসহায় হয়ে পড়ে। তাদের কোনো উপায় থাকে না। তাই আমার পরিকল্পনা ছিল ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ গাড়ি থেকে যে জরিমানা আদায় করে তার অন্তত ৩০ শতাংশ ক্রাইম ভিকটিম পরিবারের জন্য বরাদ্দ করা। যাতে পুলিশ মানবিকভাবে পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে পারে। আমার পরিকল্পনা ছিল এবারের পুলিশ সপ্তাহে আমি এই বিষয়টি তুলে ধরবো। কিন্তু পুলিশ সপ্তাহ না হওয়ায় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের পরিকল্পনা তুলে ধরে অর্থ বরাদ্দ চাইবো।

ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফের নেতৃত্বে শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় মোহা. শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, পুলিশ সদস্যদের যাকে সন্দেহ হচ্ছে তাকে ডোপটেস্ট (মাদকাসক্তি পরীক্ষা) করানো হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে ১০০ জনকে শনাক্ত ও অন্তত ৩০ জনকে ডোপ গ্রহণজনিত কারণে বরখাস্ত করেছি।

ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর পুলিশ লাইনে যাই। সেখানে কিছু পুলিশ সদস্যের মাদক সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে পারি। আমি পুলিশের কল্যাণসভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাদকের কুফল তুলে ধরে বক্তব্য দিই। পুলিশ সদস্যদের মাদক পরিহারের আহ্বান জানাই। আর ৫৭টি বিভাগের উপ-কমিশনারকে সম্পৃক্ত করে আমরা তাদের চিকিৎসার নিশ্চয়তা দেয়াসহ মাদক সম্পৃক্তদের ফিরে আসার আহ্বান জানাই। কিন্তু এতে কেউ সাড়া দেয়নি। পরবর্তী সময়ে আমরা আমাদের গোয়েন্দা ইউনিটের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে যাদেরকে সন্দেহ হচ্ছে তাদেরকে ডোপ টেস্ট করাতে বলি। এতে কয়েকেজন এসআইসহ শতাধিক পুলিশ সদস্যের মাদক সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।

ডোপ টেস্ট কার্যক্রম আরও জোরদার ও আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা ইউনিট এটি নিয়ে কাজ করছে। তবে ডিএমপিতে ঢালাওভাবে ডোপটেস্ট করা হচ্ছে না।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘থানায় আর্থিক লেনদেনের বিরুদ্ধে আমরা সবাইকে সতর্ক করছি। থানায় মামলা বা জিডি করার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বাদির কাছে জানতে চাওয়া হয় যে, ডিজি বা মামলার তদন্তে থানায় কোনো অর্থ দিতে হয়েছে কি না এবং তিনি যে বিষয়ে অভিযোগ বা জিডি করতে চেয়েছেন ওই বিষয়ে করতে পেরেছেন কি না। ৯৫ শতাংশ বাদী আমাদেরকে জানিয়েছেন যে, থানায় মামলা বা জিডি করতে কোনো ধরনের হয়রারি বা টাকা পয়সা দিতে হয়নি। ডিএমপি ৩৪ হাজার পুলিশের বিশাল বাহিনী। এদের সবাই সৎ আমি সেটা বলবো না। আমি বলবো আমাদের উপ-কমিশনারদের কেউই আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা থানায় বা ডিএমপির কোনো সদস্যের অনৈতিক লেনদেনের যেকোনো তথ্য পাওয়া মাত্রই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। যতবড় প্রভাবশালী ব্যক্তিই তদবির করুক না কেন ডিএমপির কোনো সদস্য অন্যায় করলে তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না।’

ডিএমপির পুলিশ প্রধান বলেন, ‘ক্র্যাবের যেকোনো শুভ ও কল্যাণকর কাজে ডিএমপি সবসময় পাশে থাকবে। ডিএমপির কোনো সদস্য সাংবাদিকদের সঙ্গে ইচ্ছাকৃত অন্যায় আচরণ করলে তাদের রেহাই দেয়া হবে না।’

মতবিনিময় সভায় ক্র্যাবের পক্ষে বক্তব্য দেন সভাপতি মিজান মালিক ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ক্র্যাবের যুগ্ম সম্পাদক হাসান-উজ-জামান, অর্থ সম্পাদক এমদাদুল হক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আরিফ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান, কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম সাত্তার রনি ও মিন্টু হোসেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/এএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :