দুর্নীতির দায়ে ইউপি চেয়ারম্যানের শাস্তি চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:০৬

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিলের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এবং তার অনিয়ম দুর্নীতির শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

শ্রীউলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সরদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আমির হোসেন জোয়ার্দ্দার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম বুলু, থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান এড. জহুরুল হক, ত্রাণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, থানা কৃষকলীগের সহসভাপতি দিপংকর বাছাড় প্রমুখ। পরে তারা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ‘শ্রীউলা ইউনিয়নে চেয়াম্যান মহাদুর্নীতিগ্রস্ত একজন ব্যক্তি। খেয়াঘাট ইট ইজারার লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের কারণে তিনি দুদকের দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি। তিনি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলণ করেছেন। কোনো কাজ না করে বিভিন্ন প্রজেক্ট দেখিয়ে এডিপি ও এলজিএসপির টাকা তুলে আত্মসাত করেছেন। সুবিধা নিয়ে ধনী লোকদের দিয়েছে ভিজিডি কার্ড। তার দুর্নীতির ফলে ১০ টাকা কেজি দরের চাল পেয়েছে ধনী শ্রেণির লোকেরা। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের সম্মানি ভাতাও দেননি তিনি। সরকারি খাস জমিতে তৈরি করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি। সম্প্রতি শ্রীউলা এলাকার ঠাকুর দাস, মানিক চক্রবতী, রাসেদ সরদার, রহিমা খাতুন অনেক জমির মালিক হয়েছেন, তাদের আছে পাকা দালান বাড়ি, ভারতে বসবাসরত বিরেন্দ্র নাথ সানা, সরকারি চাকরিজীবি আব্দুল খালেক। এরকম অসংখ্য লোকের নামে ১০ টাকা কেজি দরে চালের কার্ড দিয়েছেন তিনি। অথচ দরিদ্র শ্রেণির লোকজন সরকারি এসব সুযোগ সুবিধা পায়নি। অভিযোগ রয়েছে,পুইজালা গ্রামের রমেশচন্দ্র মণ্ডলের স্ত্রী কনিকা মণ্ডলের টিপসই জাল করে দুই বছর ধরে ভিজিডি চাল উত্তোলণ করেছেন চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। ৪০ দিন কর্মসূচির কাজ ৩০ দিনে শেষ করে অতিরিক্ত ১০ দিনের টাকা উত্তোলণ করে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন তিনি।’

এদিকে, যাদের প্রকল্পের সভাপতি ও সম্পাদক করা হয়েছে তারা এসবের কোন কিছু খোঁজ রাখে না বলে জানান বক্তারা। তাদের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া মাস্টার রোলের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন ওই চেয়ারম্যান। এছাড়া এডিপিও এলজিএসপির আওতায় ভুয়া প্রকল্পের তালিকা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। রয়ার সিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের নামে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলণ করেছেন। আবার মহিষকুড়া বিজিএম ক্লাবের মাঠ ভরাট করা হয়েছে বলে তিনবারে ২৪ টান চাল উঠিয়েছেন চেয়ারম্যান। বুড়াখারুটি ইয়াংক্লাব, কাকড়া বুনিয়া সবুজ সংঘ, শহিদ মিনার নির্মাণ, নাকতারা পাঞ্জেগানা সমজিদ সংস্কার করার নামে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিজের পকেট ভর্তি করেছেন। অথচ এইসব প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্ব নেই।

বকচর ডিজিটাল রেডিয়েন্ট এন্ড ফ্রেন্ডশীপ ক্লাব সংস্কার করার কথা বলে একই প্রতিষ্ঠানের নামে তিনবার টাকা উত্তোলন করেছেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান।

শুধু তাই নয়, তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করলে তার মাদকাসক্ত ছেলে সৌরভ রায়হান সাদ সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন নিয়ে হামলা, মারধর ও লাঞ্চিত করে। এমনকি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানিও করা হয়। চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল ইউনিয়নের খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে সরকারের ১৪ লাখ টাকা রাজস্ব আত্মসাতের অভিযোগে দুদক কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি তিনি। তাকে গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে, একই দিন বেলা ১২টায় চেয়ারম্যান শাকিলের অনুসারীরা তাকে নির্দোষ দাবি করে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করেন।

চেয়ারম্যান শাকিল অভিযোগ অস্বীকার বলেন, ‘আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’

(ঢাকাটাইমস/২০ফেব্রুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :