এটিএমের মৃত্যুতে তারকাদের শোক

প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:৩৭ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:৩৯

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একুশে পদক ও ছয়টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শনিবার সকালে এই অভিনেতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন অঙ্গনের শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

অভিনেত্রী ও সাংসদ সুবর্ণা মুস্তাফা লিখেছেন, ‘আপনি আমাদের চাঁদ ভাই হিসাবে ছেড়ে যেতে এই দিনটি বেছে নিয়েছেন। এটিএম চাচা আপনি সর্বদা আমাদের সাথে থাকবেন। শান্তিতে বিশ্রাম করুন স্যার।’

রোকেয়া প্রাচী লিখেছেন, ‘আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন চিরদিনের জন্য তিনি। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কার্যকরী সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। অতুলনীয় এই মানুষ শ্রদ্ধায় আজীবন থাকবেন আমাদের হৃদয়ে। রাজপথে, চলচ্চিত্রে অসাধারণ শিল্পী হয়ে তিনি থাকবেন ভালোবাসায় চিরস্মরণীয় হয়ে। দেখা হবে না আর কোনো মানববন্ধনে আপনার সাথে। শান্তিতে থাকুন।’

চিত্রনায়ক ওমর সানী লিখেছেন, ‘কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার ও নাট্যঅভিনেতা বহু গুণে গুণান্বিত একজন চলচ্চিত্রপ্রেমী সত্যি সত্যি আজ আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। উনার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি, যেন মহান আল্লাহ পাক বেহেশত নসিব করেন, আমিন।’

অভিনেতা ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান লিখেছেন, ‘চলে গেলেন আমাদের সকলের প্রিয় অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসিব করুন, আমীন। তার মৃত্যুতে শিল্পী সমিতি গভীরভাবে শোকাহত।’

জয়া আহসান লিখেছেন, ‘আরেকজন কিংবদন্তি শিল্পীকে আজ আমরা হারালাম। তিনি ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী, বিচক্ষণ এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন একজন মানুষ। গেরিলা এবং চোরাবালি চলচ্চিত্রে একসাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। অনেক কথা অনেক স্মৃতি। সেই সময় তাঁর অফুরন্ত জ্ঞান এবং শুটিংয়ের সময় তাঁর অভিজ্ঞতা আমাকে শিল্পী এবং মানুষ হিসেবেও অনেক পরিণত করেছে। ওপারে ভালো থাকবেন এটিএম শামসুজ্জামান স্যার। আপনার শৈল্পিক গুনে ফুটিয়ে তোলা প্রতিটি চরিত্র উজ্জ্বল হয়ে থাকবে আমাদের মনে।’

আশনা হাবিব ভাবনা লিখেছেন, ‘মনুষ্যত্বের মূলে আর একটি প্রকাণ্ড দ্বন্দ্ব আছে; তাকে বলা যেতে পারে প্রকৃতি এবং আত্মার দ্বন্দ্ব। স্বার্থের দিক এবং পরমার্থের দিক, বন্ধনের দিক এবং মুক্তির দিক, সীমার দিক এবং অনন্তের দিক- এই দুইকে মিলিয়ে চলতে হবে মানুষকে। এটিএম আংকেল ভালো থাকুন আপনার আদর সবসময় পেয়েছি। শুটিংয়ের সময়গুলো মনে পড়ছে খুব।’

গোলাম ফরিদা ছন্দা লিখেছেন, ‘একটি সকালের ঝলমলে আলো হঠাৎ স্তিমিত হয়ে গেল! কখন, কেউ টের পেলো না! এটিএম শামসুজ্জামান আংকেল কিছু বলার ভাষা নেই, বিদায়! চির শান্তিময় হোক এ নিদ্রা।’

রওনক হাসান লিখেছেন, ‘এই স্নেহ, আদর, ভালোবাসা আর আশীর্বাদ আর পাবো না! আর দেখা হবে না! আহহহ! আপনার আত্মা শান্তিতে থাকুক। ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা কিংবদন্তি অভিনেতা ও অভিভাবক।’

চঞ্চল চৌধুরেী লিখেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত সত্যটা হলো এটিএম ভাই চলে গেলেন। আর হলো না দেখা। কত সময়, কত স্মৃতি আবেগ তাড়িত হচ্ছি খুব। অপার শ্রদ্ধা শান্তিতে থাকুন আপন মানুষ এটিএম শামসুজ্জামান।’

শাহনাজ খুশি লিখেছেন, ‘আমাদের অতি প্রিয় সহকর্মী, প্রিয় বন্ধু, প্রিয় গুরুজন, প্রিয় অভিভাবক, বরেণ্য অভিনেতা শ্রদ্ধেয় এটিএম শামসুজ্জামান আর নেই! গভীর শোক এবং শ্রদ্ধা। খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে কিছু লেখার ভাষা নাই।’

আইরিন সুলতানা লিখেছেন, ‘চলে গেলেন আমাদের সবার প্রিয় অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান স্যার (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মহান আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুন।’

চিত্রনায়িকা বুবলী লিখেন, ‘বিনোদনের প্রত্যেকটি জায়গায় ছিল আপনার পদচারণা এবং সর্বত্রই আপনি সফলতার আলো ছড়িয়েছেন আপনার দুর্দান্ত অভিনয় ক্ষমতা দিয়ে। কতটা বিচক্ষণ, দক্ষ, মেধাবী এবং পরিশ্রমী অভিনয় শিল্পী আপনি ছিলেন তা হয়তো শুধুমাত্র লেখায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’

জাহারা মিতু লিখেছেন, ‘অভিনেতারা অভিনয় করার চেষ্টা করে; আর আপনি আপনার চরিত্রকে বাস্তবে পরিণত করতেন। ছোটবেলায় আপনার জাদরেল অভিনয় দেখে আপনাকে ঘৃণা করেছি আবার কমেডি চরিত্র দেখে হেসে লুটোপুটি খেয়েছি। যখন আপনি কাঁদতেন সাথে আমরাও কেঁদেছি। আর যেদিন শুনেছি নিজের এক সন্তানকে হত্যার দায়ে আপনি অন্য সন্তানের বিচার চেয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন, সত্যি বলছি পর্দার আড়ালের সেই মানুষটার নৈতিকতা, কঠোরতা, নিষ্ঠা আর আবেগ সম্পর্কে সেদিন বুঝেছি। কি এক জ্বলন্ত উদাহরণ আপনি একজন মানুষ হিসেবে, বাবা হিসেবে, অভিনেতা হিসেবে। দুঃখ-কষ্ট সবারই থাকে তবে এমন বর্ণাঢ্য জীবন কজন পায়? আপনি থাকবেন আমাদের দোয়ায়।’

বেশ কিছু ছবি শেয়ার করে ছোটপর্দার অভিনেতা রাশেদ সীমান্ত লিখেছেন, ‘এই ছবিগুলোর বয়স সর্বোচ্চ মাসখানেক। আমাদের ডিএমডি স্যারের সাথে এটিএম শামসুজ্জামান আঙ্কেলের সম্পর্কটা ছিল আত্মিক। আমরা বৈশাখী টেলিভিশনের পক্ষ থেকে উনার সাথে দেখা করতে যাই। এর আগে উনার সাথে বেশ কয়েকবার আমার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। কিন্তু সেদিনের আড্ডাটা ছিল দীর্ঘ খানের। অনেক খোলামেলা কথা বললেন, উনার ক্যারিয়ার, চাওয়া-পাওয়া নিয়ে।

সম্ভবত এটিই উনার জীবনের শেষ কোনও টেলিভিশন সাক্ষাৎকার। উনার অভিনয় আমাকে বরাবরই মুগ্ধ করত, কিন্তু উনার জ্ঞান আমাকে অবাক করেছে। শেষ মুহূর্তে উনি বলেছেন, ‘তোমাদের চেয়ে আমি অনেক সুস্থ, এখনো আমার অনেক কিছু দেওয়ার বাকি।’ কিন্তু আর আরতো দেওয়া হলো না, তবে যতটুকু দিয়েছেন তাতেই উনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মত দর্শকদের স্মৃতির মণিকোঠায়।’

ঢাকাটাইমস/২০ফেব্রুয়ারি/এএইচ