সৈয়দপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় আ.লীগ-জাপার পাল্টাপাল্টি মামলা

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:৫৬

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নীলফামারীর সৈয়দপুরে পৌর নির্বাচন নিয়ে লাঙল ও নৌকার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। সোমবার উভয়পক্ষ এসব মামলা করেছে।

জাতীয় পার্টির পক্ষে মামলা করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল দিদার দিপু। এ মামলায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হিটলার চৌধুরী ভলুসহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অপরদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষে মামলা করেছেন সৈয়দপুর পৌর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু। এ মামলায় জাতীয় পার্টির সৈয়দপুর পৌর কমিটির সদস্য সচিব আলতাফ হোসেনসহ নয় নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়।

ফয়সাল দিদার দিপু মামলায় অভিযোগ করেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টায় পৌরসভার  ২ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাহাট ২ নম্বর উর্দুভাষী ক্যাম্পের নির্বাচনী পথসভা চলছিল। এসময় পূর্ব পরিকল্পিত ও অতর্কিতভাবে লাঠিসোটা, রড, চেইন, ধারালো অস্ত্রশস্ত্রসহ ইটপাথর নিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হিটলার চৌধুরী ভলুর নেতৃত্বে আরও ৫০/৬০ জন লোক লাঙল মার্কার নেতাকর্মীদের উপর এলোপাথাড়ি হামলা চালায়। এতে আমাদের লেকজন হতচকিত হয়ে এদিক-সেদিক ছুটাছুটি শুরু করে। হিটলার চৌধুরী ও তার কিছু পাতি নেতা এ অপকর্ম করার উৎসাহ দেয়। তাদের নির্দেশে আমাদের নেতাকর্মীর প্রায় ২০/৩০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।

হিটলার চৌধুরী নিজে লাঙল মার্কার প্রার্থী আলহাজ্ব সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিকের ছেলের মোটরসাইকেলে আগুন লাগায় এবং অন্যরা দলের এক কর্মীর আরেকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৪টি মোটরসাইকেল থানায় পুলিশের হেফাজতে আছে। কিন্তু দুইটি মোটরসাইকেল নিখোঁজ রয়েছে। এসময় প্রতিপক্ষের আক্রমণে ২৫/৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়ে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন।

পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপরও তারা শহরজুড়ে লাঙল মার্কার পোস্টার, ব্যানার ছিড়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।

মামলায় আরও বলা হয়, আসামি হিটলার চৌধুরী দূর্দান্ত প্রকৃতির আইন অমান্যকারী ও এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী দাগী সন্ত্রাসী। তার নামে একাধিক মামলা আছে। তার এরুপ গুন্ডাগিরি সন্ত্রাসী কায়দায় হামলার মত অপরাধ বিষয়ে লিখিতভাবে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারকে জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে রফিকুল ইসলাম বাবু এজাহারে অভিযোগ করেছেন যে, শনিবার গোলাহাট ক্যাম্পে পথসভা করে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সিদ্দিকুল আলম। ওই সভায় জাপা নেতা আলতাফ হোসেন ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি হিটলার চৌধুরী ভলুর বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক বক্তব্য দেন। এতে স্থানীয়রা বাধা দিলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে হিটলার চৌধুরীর বাড়িতে ঢুকে জিপগাড়ি, আসবাবপত্র ও বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত দলীয় সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে।

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উভয়ের লিখিত এজাহার পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, নৌকা ও লাঙল মার্কার কর্মী সমর্থকদের এ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। আর জাতীয় পার্টির উপজেলা আহ্বায়ক ও মেয়র প্রার্থী ইকু গ্রুপের এমডি আলহাজ্ব সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তিনি দাবি না মানলে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দেন।

(ঢাকাটাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/পিএল)