মুজাক্কির হত্যা: মির্জা-বাদলের পৃথক প্রতিবাদ সভা

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২১:১১

সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যার প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির সময় ১৪৪ ধারার কারণে পরিবর্তন হলেও শোকসভা ও মিলাদ মাহফিল করেছেন নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। অপরদিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলও পৌরসভার বাইরে প্রতিবাদ ও শোক সভা করেছেন।

জানা গেছে, মির্জা ও বাদলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সোমবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বসুরহাট পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। সন্ধ্যা ৬টায় ১৪৪ ধারার শেষ হওয়ার পরপরই পূর্ব ঘোষিত স্থানে জড়ো হতে থাকেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকরা। এর আগে বেশ কয়েকবার সভাস্থলে আসার চেষ্টা করলেও প্রশাসনের বাধা তাও সম্ভব হয়নি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বসুরহাট রূপালী চত্বরে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে মিলাদ মাহফিল সম্পন্ন করা হয়।

এর আগে সারাদিন কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে সভাস্থল রূপালী চত্বরের পাশের উপজেলা আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করেন মির্জা। বিকাল ৩টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করলেও র‌্যাব-পুলিশের বাধায় তা করতে পারেনি।

শোক সভায় মির্জা বলেন, একরামুল করিম চৌধুরী এমপির নির্দেশে সন্ত্রাসী বাদল বাহিনীর (মিজানুর রহমান বাদল) স্বশস্ত্র হামলায় তরুণ সাংবাদিক মুজাক্কির নিহত হয়েছে। এ হত্যার ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হত্যার প্রকৃত বিচার না হলে, খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হলে কোম্পানীগঞ্জে যে আগুন জ্বলবে সে আগুন রুখবার সাধ্য কার!। তারা বলে আমি সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যায় জড়িত। আমি জড়িত হলে আমার ৬০-৭০ জন নেতাকর্মী কিভাবে গুলিবিদ্ধ আহত হলো। কই তাদের কেউ তো আহত হয়নি। আমাকে এ হত্যায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। গোয়েন্দা তদন্তে হত্যার সাথে আমার সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।

অপরদিকে, চাপা উত্তেজনা ও অজানা আতঙ্কের মধ্যেও সোমবার বিকালে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল পৌরসভার অদূরে টেকের বাজারে প্রতিবাদ ও শোকসভা করেন। সমাবেশে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি, দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনোসহ দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অপরাধে মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে দল থেকে বহিষ্কার ও অব্যাহতি, সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করা হয়।

বাদল বলেন, মির্জা কখনও জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। সত্যবচনের নামে এখনও তিনি জঘন্য মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ফায়দা লুটার আশায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েও তুষ্ট না হয়ে গত শুক্রবার কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার বাহিনী আমার বাড়িতে হামলা ও আমার কর্মী সাংবাদিক মুজাক্কিরকে গুলি করে হত্যা করেছেন। এর আগে চৌধুরীহাটে চীন আওয়ামী লীগের নেতা মারুফ, চরবালুয়ার সৌরভ, গাংচিলের রাসেদ, চরকাঁকড়ার মিন্টুকে হত্যা করেছে তিনি ও তার বাহিনী। কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জার ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের জন্যই চরকাঁকড়ার যুবলীগ কর্মী মিন্টুকে হত্যা করা হয়েছিল। তার অপকুটকৌশলের কারণে এখানকার ব্যবসায়ীরা জিম্মি হয়ে আছে।

এর আগে বিবদমান দু’পক্ষের একই দিন একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণার কারণে শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কায় রবিবার রাতে উপজেলা প্রশাসন বসুরহাট পৌর এলাকায় সোমবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন। কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে হঠাৎ কাদের মির্জা ও বাদল সমর্থকরা প্রধান সড়কগুলোতে গাছের গুঁড়ি ফেলে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি। রাতব্যাপী অসংখ্য ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আর সোমবার সারাদিন অঘোষিত হরতালের কারণে অধিকাংশ দোকান পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।

(ঢাকাটাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :