বগুড়া পৌরসভা হবে রোল মডেল: মেয়র প্রার্থী মান্নান

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৪:৪০ | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:০৬

বগুড়া প্রতিনিধি
ঢাকাটাইমস

‘উন্নয়ন চাইলে পরিবর্তন আনুন’ এমন স্লোগানকে সামনে রেখে বগুড়ার পৌর নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। মেয়র পদে তিনি জগ প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন তিনি ও তার কর্মী সমর্থকরা। ভোটারদের অসুবিধার কথা শুনে সুযোগ পেলে সেগুলোর সমাধান করবেন এমন আশ্বাস দিচ্ছেন।

আব্দুল মান্নান আকন্দ বলেন, ‘বগুড়া পৌরসভার উন্নয়নের জন্য পরিবর্তন দরকার। গত কয়েক দফা যিনি মেয়র ছিলেন তিনি পৌরসভাবাসী এবং ভোটারদের জন্য কিছু করেননি। যে কারণে রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ধরণের সমস্যায় ভোগান্তিতে লোকজন। এই ভোগান্তিগুলো দূর করতে এবং পৌরসভার উন্নয়নে আমি কাজ করতে চাই। বগুড়া পৌরসভা হবে রোল মডেল।’

আব্দুল মান্নান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। ব্যক্তি উদ্যোগে সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। ইতোমধ্যেই তিনি গরিবের বন্ধু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের সঙ্গে সদা হাস্যোজ্জ্বলভাবে মেশেন তিনি।

বগুড়া পৌরসভার উন্নয়ন এবং ভোটারদের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছেন তিনি। যেগুলো সুযোগ পেলে তিনি সম্পন্ন করবেন বলে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে ভোটারদের জানাচ্ছেন।

ভোটারদের তিনি যে প্রতিশ্রুতিগুলো দিচ্ছেন সেগুলো হলো- পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ডের অসহায় মা বোনদের মাঝে থেকে দুই হাজার ১০০ জনকে মাস্টার রোলে পৌরসভায় নিয়োগ দেবেন। এক বছরের মধ্যে পৌরসভার সব রাস্তা সংস্কার করবেন। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করবেন। শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে কার্যকরি পদক্ষেপ নেবেন। পৌরসভার ব্যবস্থপনায় শহরের পরিবহন ব্যবস্থা চালু করবেন, যার ভাড়া হবে ১০ টাকা এবং শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে যাবে। এছাড়া বাড়ি নির্মাণ নকশা বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে গ্রাউন্ড ফ্লোর নির্মাণের পর মূল নকশার অনুমোদন দেয়ার ব্যবস্থা করবেন। হোল্ডিং ট্যাক্স প্রতি বছর ৫% হারে বৃদ্ধি পাবে যাতে পৌরবাসীকে কোন প্রকার হয়রানির শিকার হতে না হয়। পৌর উচ্চ বিদ্যালয়কে আধুনিকায়নসহ বহুতল ভবন নির্মাণসহ সপ্তপদী মার্কেট বহুতল আধুনিক বিপনী বিতানে রুপান্তরিত করবেন। দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় বন্ধ থাকা চকসূত্রাপুর মাতৃ মঙ্গল ও শিশু সদন কেন্দ্র আধুনিকায়ন করে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হিসেবে চালু করে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যবস্থা এবং নগরবাসীর জন্য আরও  দুটি বিনোদন পার্ক নির্মাণ করবেন। এছাড়াও পৌর এলাকায় পর্যাপ্ত সড়ক বাতি স্থাপন করার ব্যবস্থা করার কথাও তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণায় জানিয়েছেন।

আব্দুল মান্নানের সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে তিনি অতি দরিদ্র ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মাঝে নিয়মিত খাতা-কলম-ব্যাগ বিতরণ করে আসছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যেন গরমে কষ্ট না পান এজন্য তিনি তাদের ক্লাসরুমে ফ্যানের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন দিবসে বগুড়ার শিশুদের নতুন পোশাক ও বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা নিয়মিত করে আসছেন। গরিব প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা যেন বছর শেষে কিছুটা হলেও আর্থিক সুবিধা পায়, সেজন্য তিনি সম্প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ভেড়া বিতরণ করেছেন। তিনি প্রায় শতাধিক গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার ব্যবস্থা করেছেন। তার বদৌলতে এখন এসব শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিশ্চিন্তে পড়াশোনা করছেন। এছাড়াও করোনাকালে প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার দিয়েছেন তিনি। এখনো প্রতিদিন গড়ে ৫০০ মানুষকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে যাচ্ছেন। তার সামাজিক কার্যক্রমে বগুড়ার সাধারণ খেঁটে খাওয়া মানুষ উজ্জীবিত।

বগুড়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হিমেল আহমেদ বলেন, ‘পৌরপিতা এবার আব্দুল মান্নান আকন্দেরই হওয়া উচিত। কারণ তিনি জনগণের জন্য কাজ করবেন। তিনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সেগুলোও বাস্তবায়ন করবেন বলে বিশ্বাস করি।’

৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার রেজভী শেখ বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের উন্নয়ন হোক। আমি ভোট তাকেই দেব, যিনি আমাদের জন্য কাজ করবেন। তবে আব্দুল মান্নান আকন্দ সম্পর্কে যতটুকু জানি, তিনি নির্বাচনে জিততে পারলে তার প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই খুব দ্রুত তিনি বাস্তবায়ন করতে পারবেন বলে আশা করি।’

প্রসঙ্গত, আগামি ২৮ ফেব্রুয়ারি বগুড়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিন্দ্বন্দ্বীতা করছেন আওয়ামী লীগ-বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট চারজন।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/পিএল)