এই তারকাদের মৃত্যু আজও রহস্যময়

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:০৮

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বলিউড। ভারতীয় হিন্দি সিনেমার এই দুনিয়াটা বড়ই রঙিন। স্পটলাইট আর ফ্ল্যাশের আলোয় ঝলসে যায় চোখ। অন্ধকার দিক সেখানে বার বার উপেক্ষিত। কিছু কিছু মৃত্যুও সেখানে বড় বেশি রহস্যময়। তাহলে জেনে নেয়া যাক এমন কিছু অভিনয়শিল্পীর মৃত্যু সম্পর্কে, যেগুলো আজও রহস্যময় হয়ে আছে।

শ্রীদেবী: এই আলোচনায় প্রথমেই যার নাম উঠে আসে তিনি বলিউডের প্রথম সুপারস্টার নায়িকা শ্রীদেবী। তার মৃত্যুর তিন বছর কেটে গেছে। কিন্তু সেটি হত্যা, আত্মহত্যা নাকি নিছকই দুর্ঘটনা ছিল, তা আজও রহস্য হয়ে আছে। ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মারা যান শ্রীদেবী। দুবাইয়ের এক সাততারা হোটেল কক্ষের বাথটব থেকে অচৈতন্য অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে লেখা ছিল, পানিতে ডুবে মৃত্যু। কিন্তু বাথটবের পানিতে ডুবে কেউ কীভাবে মারা যেতে পারে, তা আজও অস্পষ্ট। বলিউডে কানাঘুষা শোনা গিয়েছিল, এটা আত্মহত্যা। হত্যার অভিযোগও উঠেছিল শ্রীদেবীর স্বামী প্রযোজক বনি কাপুরের বিরুদ্ধে। কিন্তু কাপুর পরিবার জোর গলায় বলেছিলেন, এ সবই কুৎসা। এছাড়া হত্যার কোনো আলামতও পাওয়া যায়নি।

দিব্যা ভারতী: বলিউডে খুব বেশি দিন কাজ করার সুযোগ হয়নি তার। তবে যে কটা দিন ছিলেন, তার মুখের মিষ্টি হাসি, লুকস- বার বারই তুলনা করা হতো শ্রীদেবীর সঙ্গে। শ্রীদেবীর সঙ্গে তার চেহারার ছিল অদ্ভূত মিল। যার কারণে ছবির অফারও পাচ্ছিলেন প্রচুর। এক বছরে তার এক ডজন ছবি করার রেকর্ড বলিউডে আজও কেউ ভাঙতে পারেনি। তেমনি তার মৃত্যু রহস্যও উদঘাটিত হয়নি আজও।

মাত্র ১৯ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছিল দিব্যা ভারতীর। ১৯৯৩ সালের ৭ এপ্রিল নিজের ভারসোভার ফ্ল্যাট থেকে পড়ে গিয়ে তিনি মারা যান। কী হয়েছিল তার মৃত্যুর রাতে? দিব্যা বিয়ে করেছিলেন বিখ্যাত প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াওয়ালাকে। ওই দিন তাদের ফ্ল্যাটে ফ্যাশন ডিজাইনার নীতা লুল্লাসহ আরও বেশ কয়েকজন বন্ধুবান্ধব এসেছিলেন। চলছিল রাত-পার্টি।

এমন সময়ে পাঁচতলা ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে পড়ে মারা যান দিব্যা। পরিবার থেকে বলা হয়েছিল, টাল সামলাতে না পেরেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে অভিযোগ উঠেছিল, এটা দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত খুন। এর পেছনে আজও জড়িয়ে আছে নায়িকার স্বামী সাজিদের নাম। কিন্তু প্রমাণ মেলেনি। তাই কয়েক বছর পর দিব্যার মৃত্যুর তদন্তও বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

পারভিন ববি: ১৯৮০-এর দশকে বলিউড কাঁপানো অভিনেত্রী পারভিন ববির শেষ জীবন কেটেছে বড়ই কষ্টে। অত্যধিক সুরাসক্তি, সম্পর্কে ভাঙন তাকে ব্যক্তিগত জীবনে সুখী হতে দেয়নি। এক সময় পুরুষ হৃদয়ে হিল্লোল তোলা পারভিনের মৃত্যু যে কবে কীভাবে হয়েছিল, তা কেউই জানে না। তার ফ্ল্যাটের দরজার সামনে খবরের কাগজ আর দুধের প্যাকেট জমছিল দিনের পর দিন। সন্দেহ হওয়াতে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙা হয়। উদ্ধার করা হয় মৃত পারভিনকে।

সিল্ক স্মিতা: আইটেম গার্ল থেকে অভিনেত্রী হয়ে উঠতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল এই অভিনেত্রীকে। কিন্তু মুম্বাইয়ে নিজের আবাসনে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। কেন করেছিলেন আত্মহত্যা? হতাশা, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা নাকি অন্য কিছু, জানা যায়নি আজও।

গুরু দত্ত: মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তার মৃত্যু জড়িয়েও রয়েছে রহস্য। ‘কাগজ কে ফুল’ খ্যাত এই অভিনেতা-পরিচালক মারা গিয়েছিলেন মদের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করে। অথচ যেদিন তিনি মারা গিয়েছিলেন, তার আগের দিনও বেশ হাসিখুশিতে কেটেছিল তার সময়। কাজেই প্রশ্নটা আজও রয়ে গেছে, তিনি কি আত্মহত্যা করেছিলেন? নাকি ভুলবশত হয়ে গিয়েছিল ওভারডোজ? উত্তর মেলেনি আজও।

জিয়া খান: রহস্যময় মৃত্যুর আছেন এ প্রজন্মের অভিনেত্রী জিয়া খানও। জুহুর ফ্ল্যাটে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। সে সময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন, অথচ অবিবাহিত। জীবনের সবচেয়ে সুখের মুহুর্তে এমন একটি পদক্ষেপ কেন নিয়েছিলেন জিয়া? অভিযোগ উঠেছিল নায়িকার সেই সময়ের প্রেমিক সূরজ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে। জিয়ার মা দাবি করেছিলেন, পরিস্থিতির চাপে তার মেয়ে বাধ্য হয়েছিল নিজেকে শেষ করতে। উদ্ধার হয়েছিল একটি সুইসাইড নোটও। জিয়ার সেই মৃত্যুর মামলা আজও চলছে।

সুশান্ত সিং রাজপুত: ৩৪ বছর বয়সী প্রতিভাবান এই অভিনেতার মরদেহ গত বছরের ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রাতে অবস্থিত তার ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ডাক্তারি রিপোর্ট মতে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন সুশান্ত। চিকিৎসাও চলছিল। যদিও তার মৃত্যুকে ঘিরে উঠে হত্যার গুঞ্জন। অভিযোগের আঙুল যায় তার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীসহ একাধিক জনের দিকে। কিন্তু সেউ মৃত্যুর তদন্ত এখনো চলমান। উদঘাটিত হয়নি রহস্য।

ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/এএইচ