বোয়ালমারীতে গ্রামবাসীর সেতু নির্মাণের উদ্যোগে বিতর্ক

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৮:১৮

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গ্রামবাসীর উদ্যোগে চন্দনা-বারাশিয়া নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। নদীর উপর বেসরকারি উদ্যোগে সেতু নির্মাণ করা যায় কি-না তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বিলসড়াইল বটতলা নামক স্থানে আশপাশের কয়েক গ্রামের সাধারণ মানুষের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে এ সেতু। সেতুটি নির্মাণের প্রধান উদ্যোক্তা বিলসড়াইল গ্রামের শেখ হারুন-অর রশিদ। এর দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট এবং প্রস্থ সাড়ে তিন ফুট। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তবে সেতুটির নির্মাণে কোনো প্রকার ডিজাইন বা সেতু নির্মাণ সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তরের অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

এছাড়াও সেতুটি নির্মাণে প্রযুক্তিগত বিষয় দেখভালের জন্য নেই কোন প্রকৌশলী বা প্রকৌশল তত্ত্বাবধায়ক। শুধুমাত্র নির্মাণ-শ্রমিকদের অভিজ্ঞাতই পুঁজি। এজন্য সেতুটি ব্যবহারে ঝুঁকির বিষয়টি সর্বমহলে আলোচিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যে কোনো নদীর উপর কোনোভাবে প্রযুক্তিগত বিষয় না দেখে সেতু নির্মাণ সঠিক নয়। এটা ভালোর চেয়ে মন্দ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মানুষের জীবনের ঝুঁকি থাকবে।’

তবে প্রকৌশলীদের অনুমোদন ছাড়া সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হবে কি-না জানতে চাইলে উদ্যোক্তা হারুন-অর রশিদ বলেন, ‘আমাদের সেতু দিয়ে তো ভারি কোন গাড়ি চলাচল করবে না। তাছাড়া যেসব মিস্ত্রি সেতুর কাজ করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে বেজমেন্ট ও পিলারে ১৬ মিলি মাপের প্রয়োজনীয় সংখ্যক রড দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় দুই মাস আগে এ বিষয়ে এলাকাবাসীকে নিয়ে একটি সভা করি। ওই সভায় নিজেদের টাকায় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই সভায় গ্রামের বিত্তশালীসহ সর্বস্তরের লোকদের কাছে সেতু নির্মাণের জন্য আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়। ইতোমধ্যে শতাধিক গ্রামবাসীর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা সংগৃহীত হয়। এ অবস্থায় গত ২৯ জানুয়ারি থেকে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ কাজে নিয়োজিত স্থানীয় রাজমিস্ত্রিদের প্রতি বর্গফুট বাবদ দিতে হবে ৩৫০ টাকা। প্রতিদিন ১৪ জন রাজমিস্ত্রি সেতু নির্মাণের কাজ করছে।’

এলাকাবাসী জানান, গত ১৫ বছর ধরে তারা চন্দনা-বারাশিয়া নদীর ওই জায়গায় একটি সেতু নির্মাণের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছে ধরনা দিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমনকি স্থানীয় সাংসদের কাছে তারা এ সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া কয়েকবার আবেদন করেছেন উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে। কিন্তু তাতেও কোন ফল হয়নি। এ কাজে সরকারি-বেসরকারি কোনো সহায়তা না পেয়ে গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছায় টাকা তুলে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। সেতুটি নির্মিত হলে আট গ্রামের মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদে সেতু নির্মাণের জন্য কোনো বাজেট নেই। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে তাই সেতু নির্মাণ করা সম্ভব না।’

(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :