স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার উস্কানিদাতারা জাতির শত্রু: আমু

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৮:৫২ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

দেশে করোনা সংক্রমণ এখনো অব্যাহত আছে, এই অবস্থায় যারা স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার উস্কানি দিচ্ছে তাদেরকে দেশ ও জাতির শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ‘করোনা সংকটকালে যারা স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার উস্কানি দিচ্ছে, ছাত্রসমাজের তো শুধু নয়-ই তারা দেশ ও জাতির শত্রু।’

বুধবার জুমে ১৪ দলীয় জোটের এক বৈঠকে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন। তার নেতৃত্বে আমরা করোনায় বড় ক্ষতি থেকে বেঁচে গেছি। আরেকটু ধৈর্য ধরলে পুরো সংকটটি উৎরাতে পারবো।’ যে কারণে ১৫ আগস্টের ট্রাজেডি হয়েছে, সেই একই কারণে এখন ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও দাবি করেন আমু।

১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে ও মৃণাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় আয়োজিত আলোচনা অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর, গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার, গণতান্ত্রি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, সাম্যবাদী দলের মোসায়েদ আহমেদ, ন্যাপের ইসমাইল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান ও গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বিকৃত করার জন্য অপচেষ্টা চলাচ্ছে। আল জাজিরাসহ নানাভাবে না পেরে এখন শিক্ষায় সে চেষ্টা চালাচ্ছে। কিছু চিহ্নিত ব্যক্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সেটি প্রতিহত করতে পারবো।’

আদালতসহ সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রচলনের মধ্য দিয়ে ভাষার প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে বলেও মনে করেন ডা. দীপু মনি।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, ‘ষড়যন্ত্র শুধু সরকারের বিরুদ্ধে নয়, চলমান ষড়যন্ত্র একটি জাতিকে ধ্বংসের জন্য। সুশাসন নিশ্চিত করে জাতিকে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার।’

জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা প্রয়োজন। ঘুষ ছাড়া মানুষ সেবা পায় না, এটা দুঃখজনক। এগুলো রোধ করে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।’

শিক্ষক্ষ ও শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার তালিকায় টিকা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনায় সব স্থবির হয়ে গেছে ঠিক। শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে আনা দরকার। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এটা গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।’এসময় অনস্পট নিবন্ধন করে টিকা দেয়ারও ব্যবস্থা করার দাবি করেন শেখ শহীদুল ইসলাম।

তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর বলেন, ‘গ্রামের অনেক লোকজন ইংরেজি পড়তে পারেন না। বুঝেন না। আমাদের আদালতের রায় পড়তে ও বুঝতে তাদের অন্যের কাছে যেতে হয়, অনেক সময় প্রতারিত হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য সব রায় বাংলায় দেয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ করছি।’

এসময়ে তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াজ-মাহফিলে বঙ্গবন্ধু, ভাষা ও জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে কটাক্ষ হয়। অবশ্য, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ বন্ধ হয়েছে। সবাই জানি কটাক্ষকারীরা ৫/৭ জনের বেশি হবে না। এ বিষয়ে সভাপতির মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি হস্তক্ষেপ করলে এগুলো বন্ধ হবে।’

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘জাতিসংঘের পাশাপাশি ওআইসিতেও দাপ্তরিক ভাষা বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।’

ন্যাপের ইসমাঈল হোসেন বলেন, ‘রমজান আসার আগেই দ্রব্যেমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। সব সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।’

সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান তার বক্তব্যে ১৪ দলের নানা অসন্তোষ তুলক ধরেন। পাশাপাশি ভাষার সুফল সাধারণ মানুষের ঘরে পৌঁছাতে এবং গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ শতভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানান।

গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘জাতিসংঘের দপ্তরে বাংলা ভাষা এখনো কার্যকর হয়নি। সেটা করার উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের আদালতসহ সব যায়গায় বাংলা ভাষার প্রচলন করে ভাষা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/টিএ/জেবি)