অস্ত্রের মুখে মাদ্রাসাছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ-অপহরণের অভিযোগ

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৫:২৮ | প্রকাশিত : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৩:১১

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রী দুই মাসের মতো নিখোঁজ রয়েছে । অভিযুক্তরা ওই ছাত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে তার মাকেও শারিরীক সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শুধু তাই নয়, ওই ছা্ত্রীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে তার ঘর থেকে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে বেগমগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অপহৃত ছাত্রীর মা।

অভিযুক্তরা হলেন- হীরাপুর গ্রামের কাজী বাড়ির ফয়সাল, একই গ্রামের বেছার বাড়ির জোবায়ের, পাটোয়ারী বাড়ির সাইফুল ইসলাম ইমন ও ছোট সোনাইমুড়ী পালের বাড়ির রাসেল। এর মধ্যে ফয়সাল এবং ইমনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগীর মা জানান, তার মেয়ে ২০১৮ সালে ধিতপুর মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার সময় ফয়সাল, জোবায়ের, ইমন ও রাসেল তাকে উত্যক্ত করত। বিষয়টি জানার পর ঘটনাটি ওই ছেলেগুলোর পরিবার, ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ও মেম্বার আবদুল কাদেরকে জানান তারা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই বছরের ১৩ মার্চ কৌশলে তাদের ঘরে ডুকে ফয়সাল ও জোবায়ের কোমল পানির সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে রাখে।

তিনি বলেন, ‘রাতে সেই পানি খাওয়ার পর আমি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে রাত ২টার দিকে ফয়সাল ও জোবায়ের ঘরে ডুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমার মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে। ওই রাতে তারা স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমার ঘরে এনে তাকেও বিবস্ত্র করে আমার মেয়ের সঙ্গে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। ঘর থেকে যাওয়ার সময় তারা আমার আলমারি থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের চেইন ও দুইটি আংটি নিয়ে যায়। এর কিছুদিন পর নিজের সম্মান রক্ষার্থে লক্ষ্মীপুরে আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিই। আমার মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে এ বাড়িতে বেড়াতে এলে গত ২০২০ সালের ৫ মার্চ রাত আড়াইটার দিকে ইমন ও রাসেল ঘরে ডুকে আমার মুখে রুমাল চেপে ধরে অচেতন করে মেয়েকে আবারও অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার তিন মাস পর রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকার মিরপুর-২, ৭ নম্বর রোডের ৩ নম্বর গলির জান্নাত নামে এক নারীর কাছ থেকে মেয়েকে নিয়ে আসি। ওই তিন মাসে আমার মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করে রাসেল। এরপরও ২০২০ সালের ২০ জুন রাসেল ও ইমন বাড়িতে হামলা চালিয়ে পুন:রায় আমার মেয়েকে ঢাকায় জান্নাত নামে ওই নারীর কাছে নিয়ে গেলে পরে লোকজনের সহযোগিতায় উদ্ধার করি। এরপর বিভিন্ন সময় ইমন আমার বাড়িতে এসে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমার মেয়েকে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে। সবশেষ,গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার মেয়েকে আবারও অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। পরে মেয়ের কথা ইমনকে জিজ্ঞেস করলে, সে মেয়েকে ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে আমার সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক করতে প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি ইমনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আজ পর্যন্ত আমার মেয়ের কোন সন্ধান পাইনি। ’

তিনি অভিযোগ করে আরও জানান, সন্ত্রাসীরা তাকে প্রতিদিন হুমকি দিচ্ছে তার মেয়েকে মেরে ফেলবে। এভাবে হুমকি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার একটি ছেলে বিদেশ থাকে। তাই দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খুলেননি তিনি।’

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান সিকদার জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাকি দুইজনকে গ্রেপ্তার করে ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :