অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অনুমোদনহীন খাবার হোটেল

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৬:০৯

আশিকুর রহমান, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে খাবার হোটেল ও নামীদামী রেস্টুরেন্ট। অনুমোদনহীন ওইসব হোটেলের বিরুদ্ধে অধিক দামে খাবার বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। উপজেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টরের সহযোগিতায় হোটেলগুলোতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার দেদারসে বিক্রি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, হোটেলগুলোর খাবারের গুণগত মান ও খাবার তৈরির পরিবেশের উপর নজরদারির কথা থাকলেও তার কোনটি করছেন না সেনেটারি ইন্সপেক্টর উৎপলা রানী দাস। বিভিন্ন হোটেল থেকে লাইসেন্সের নামে অর্থ আদায় ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মাসোয়ারা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।    

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ব্যাস্ততম ও জনবহুল এলাকা চন্দার, কালিয়াকৈর, সফিপুরসহ বিভিন্ন স্থানে শতশত খাবার হোটেল ও নামীদামী রেস্টুরেন্ট রয়েছে। বাইরে থেকে সজ্জিত চাকচিক্য এসব হোটেলের ভেতরের দৃশ্যটি ভিন্ন। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর স্থানে খাবার তৈরি ও সংরক্ষণ করা হচ্ছে ওইসব হোটেলগুলোতে। ব্যবহার করা হচ্ছে অপরিস্কার পানি, ও খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার হচ্ছে ক্ষতিকর উপকরণ। যা মনবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়াও পঁচা-বাসি খাবার দেদারসে বিক্রি হচ্ছে হোটেলগুলোতে। তাও আবার উচ্চমূল্যে। দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খাবার ও পানীয় পণ্য। ফলে ক্রেতাদের প্রতিনিয়তই ওইসব হোটেল ও রেস্টুরেন্টে গিয়ে মূল্যের ফাঁদে পড়তে হচ্ছে। এদিকে, হোটেল কর্তৃপক্ষের উপর আস্থা রেখে স্বাচ্ছন্দে খাবার কিনে খাচ্ছেন ক্রেতারা। 

অন্যদিকে, ওই এলাকার খেটে খাওয়া মানুষগুলো এসব হোটেল-রেস্তরাঁর খাবার খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেন। এসব খাবার খেয়ে প্রতিনিয়তই অসুস্থ হচ্ছেন অনেকেই।

ইরফান নামে এক গার্মেন্টসকর্মী বলেন, ‘গার্মেন্টসে চাকরি করি, দুপুরে তীব্র ক্ষুধা নিয়ে হোটেলে খেতে বসি। কোনো কোনো হোটেলের খাবারের মান খুবই খারাপ। অথচ দামে যেন আকাশ ছুঁই ছুঁই।’

রাশিদা খানম নামে এক চাকরিজীবী জানান, ‘মাঝে মাঝে হোটেলে খাই। তাদের রান্না দেখলেই বোঝা যায়, যে খাবারের স্বাদ বাড়াতে তারা কত রকমের ভেজাল পণ্য মেশান। তবু পেটের টানে খেতে হয়।’

উচ্চমূল্যে খাবার বিক্রির বিষয়ে কয়েকজন হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিক বলেন, ‘কি করব ভাই বলেন, বাজারে পণ্যের দাম বেশি। এছাড়া প্রপার এলাকায় দোকান ভাড়া অনেক, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, কর্মচারীদের বিল মিলিয়ে অনেক টাকা খরচ। তাই খাবারের দাম একটু বেশিই।’

তবে কালিয়াকৈর উপজেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর উৎপলা রানীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা সব হোটেল পরিদর্শন করি। এবং লাইসেন্সের বিষয়েও সবাইকে অবগত করি। কোন হোটেলে কেমন সমস্যা সেটির ছবি তুলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর অফিসে আইসেন সরাসরি কথা বলব।’

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী হাকিম আদনান চৌধুরী জানান, অতি দ্রুত খাবার হোটেলগুলোর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

(ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/পিএল)