কড়াইল বস্তিতে শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু, সৎবাবা আটক

প্রকাশ | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর বনানী থানার কড়াইল বস্তি এলাকায় তিন বছর বয়সী এক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির সৎবাবা মহিউদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে তিনি শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করেছেন।

নিহত শিশুটির বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার ধরমন্ডল গ্রামে। তারা বনানীর কড়াইল বস্তির বেলতলা এলাকায় যাদু মিয়ার বস্তিতে থাকত। শিশুটির মা জরিনা বেগম স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে পোশাক শ্রমিক হিসেবে কর্মরত।

পুলিশ জানায়, ঢাকা মেডিকেলে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন তার সৎবাবা মহিউদ্দিন। তার ভাষ্য, সকাল সাড়ে আটটার দিকে কড়াইল বস্তির দুই তলার সিঁড়ি রুমের পাশে অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল শিশুটি। তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

মহিউদ্দিন বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাসিরনগর এলাকায় সিএনজি চালাই। আমি আমার দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামে থাকি। আর এই শিশুটিকে নিয়ে তার মা ঢাকাতেই থাকেন। তিন দিন আগে আমি ঢাকায় আসি। ওর মা জরিনা ওকে আমার কাছে রেখে গার্মেন্টসে চলে যায়। মেয়ে বলে বাবা গান শুনব। তার পরে আমি টিভি ছেড়ে দেই। মেয়ে গান শুনতে থাকে। আমি ঘুমিয়ে পড়ি। পরে ঘুম থেকে জেগে মেয়েকে আমার পাশে না পেলে অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাসার দোতালার সিঁড়ির পাশে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি।

শিশুটির মা জরিনা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রায় ছয় মাস আগে মহিউদ্দিনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। সে আমার মেয়ের সৎবাবা। বিয়ের আগে সে আমাকে বলেছিল সে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। কিন্তু বিয়ের পর দেখা যায় সে আসলেই কিছুই করে না। আমার ধারণা সে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া কর্তব্যরত চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বলেন, নিহত শিশুর গালে কামড়ের দাগ রয়েছে এবং যৌন অঙ্গ খোলা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে কারো পাশবিক নির্যাতনের সে নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর বাবাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

এ ব্যাপারে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরে আজম মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, মহিউদ্দিনকে আমরা আটক করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি।

ঢাকাটাইমস/২৭ ফেব্রুয়ারি/এএ