সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৫:১৭ | আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৬:৩৫

চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বাগেরহাটের চিতলমারীতে জাল সার্টিফিকেটে চাকরির অভিযোগে শিলা রানী বিশ্বাস নামে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বড়বাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করে আসছেন। চাকরির ১০ বছর পর সনদ যাচাইয়ে ধরা পড়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) হাতে।

২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর ২২২৫ নম্বর স্মারকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাই সংক্রান্ত বিষয়ে বড়বাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর এনটিআরসিএ একটি চিঠি পাঠায়। চিঠিতে সহকারী শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) শিলা রানী বিশ্বাসের ৫ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০০৯ এর সার্টিফিকেটটি জাল ও ভুয়া উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, শিলা রানীর রোল নম্বর অনুত্তীর্ণ। প্রাপ্ত নম্বর আবশ্যিক ৪১, ঐচ্ছিক ২১। একইসঙ্গে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেটে চাকরি  করার অপরাধে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করে বেসরকারি  শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়।

এর আগে ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে বেসরকারি ও জাতীয়করণকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপির সঙ্গে নিয়োগপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি নিয়োগের স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাদি পাঠাতে বলা হয়।

সেই মোতাবেক বড়বাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ছয়জন শিক্ষকের সনদ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এনটিআরসিএ দপ্তরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে শুধু শিলা রানী বিশ্বাসের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি দালিলিকভাবে জাল প্রমাণিত হয় বলে জানায়।

এনটিআরসিএ থেকে চিঠি পেয়ে ম্যানেজিং কমিটি গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক কাজী টিপু সুলতান বাদী হয়ে চিতলমারী থানায় ১০ ফেব্রুয়ারি ৪০৬, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১ ধারায় একটি মামলা করে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, শিলা রানী বিশ্বাস (এমএবিএড) বড়বাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১১ সালের ১০ মার্চ যোগ দেন। যোগ দেয়ার পর থেকে বিভিন্ন স্কেলে তিনি ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৫০৪ টাকা বেতন তুলেন। তার স্বামী উপজেলার চর বড়বাড়িয়া গ্রামের দিপুল কৃষ্ণ বিশ্বাস স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।

এ বিষয়ে বড়বাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী টিপু সুলতান জানান, এনটিআরসিএর চিঠি অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ের মাধ্যমে শিলা রানীর বিরুদ্ধে চিতলমারী থানায় মামলা করি। তবে এ বিষয়ে শিলা রানীর বক্তব্য জানতে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে উপজেলার কলাতলা গ্রামের স.ম ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক শাকিলা পারভীনের বিরুদ্ধেও এনটিআরসিএ থেকে দ্বিতীয় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০০৬-এর সনদ জাল বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর গত ৮ ফেব্রুয়ারি ১৪৭ নম্বর স্মারকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাই করতে একটি চিঠি দেয়া হয়।

এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কেএম রাজু আহম্মেদ বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি আমি ওই চিঠি হাতে পাই। সামনে ম্যানেজিং কমিটি ডেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিদ্যালয়ের পক্ষ হতে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চিতলমারী থানার ওসি মীর শরীফুল হক জানান, সহকারী শিক্ষিকা শীলা রানী বিশ্বাসের নামে বড়বাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পক্ষে প্রধান শিক্ষক কাজী টিপু সুলতান ১০ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/কেএম)