মাত্র ২০ টাকায় পড়ান ৬৯ বছরের ফখরুল

প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:৪৯

শেখ সাইফ, ঢাকাটাইমস

৬৯ বছরের ফখরুল ইসলাম। মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার বড়রিয়া গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি প্রাইভেট টিউটর। তবে তা অন্য সবার চেয়ে আলাদা। সেটি কেমন?

সাইকেলে বেল বাজিয়ে ছুটে চলেছেন ফখরুল ইসলাম। সামনে লেখা পড়াইতে চাই। প্লে থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। সাইনবোর্ডে তার মোবাইল নম্বরও দেয়া আছে। দাবিও খুব বেশি নয়। দিন প্রতি মাত্র কুড়ি টাকা।

স্বামী স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ ও তিন মেয়ের লেখাপড়ার ব্যায় নির্বাহ করতে এই বয়সেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়াচ্ছেন ফখরুল ইসলাম। শিশুদের শেখানোর মাধ্যমে তিনি পান অনাবিল আনন্দ।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বড়রা কেউ আমার কথা বুঝতে পারবেন না। প্রত্যেকেই পরিবার নিয়ে যে যে যার চিন্তায় ডুবে আছে। এই পেশাটা আমার ভালো লাগে এই কারণে যে আমি এমন একটি পেশার মধ্যে আছি, এই যে ছেলেমেয়ে যাদের এখনো কোনো পাপ স্পর্শ করেনি।’

শিশুদের পড়ার বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘এরা পৃথিবী সম্পর্কে এতটা জ্ঞাত না। যার জন্য এদের সঙ্গে হেসেখেলে সময়টা চলে যায়। আর আমার একটা আর্নিং পজিশন তৈরি হচ্ছে।’

ফখরুল ইসলামের কাছে পড়াতে দিয়ে সন্তুষ্ট নিম্ন আয়ের বাবা মায়েরাও। স্থানীয় এক অভিভাবক বলেন, ‘আমি একটা কারখানায় কাজ করি। স্যার যে কায়দায় পড়ান আমার প্রতিদিনের টাকা প্রতিদিন নগদ দিয়ে দিতে পারি। আমার গায়ে বাধে না।’

আরেক অভিভাবক বলেন, ‘উনি যেভাবে পড়ান, প্রাইমারি স্কুলের যেসব টিচার আছে তাদের চেয়েও ভালো পড়ান। অনেক টাকা দিয়ে বাচ্চাদের পড়ানোর সামর্থ্য সবার তো নেই।’

‘দেখা যাচ্ছে দশ টাকা বিশ টাকা, যার যেমন সামর্থ্য আছে সেভাবে দিয়েই তার কাছে বাচ্চাদের পড়াচ্ছেন। এছাড়া তার কাছে পড়ুয়া ছাত্ররাও পড়ালেখায় ভালো অবস্থানে আছে।’

ফখরুল ইসলাম জানান, তিনি প্রতিদিন সকালে পড়াতে বের হন। রাত দশটা অবধি পড়ান। এতে করে যে কটা টাকা পান, তা দিয়ে সংসার চালান।

(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/এসকেএস/ডিএম)