করোনা টিকা সম্পর্কে জানে না কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ

প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২০:০৪

মমিনুল ইসলাম বাবু, কুড়িগ্রাম

করোনার টিকা সম্পর্কে জানা নেই কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের। টিকা নেয়ার আগ্রহ অনেকেরই নেই। আবার অনেকে নিবন্ধন জটিলতায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

দেশের দারিদ্রপীড়িত এলাকা হিসেবে পরিচিত কুড়িগ্রাম জেলায় ১৬টি নদ-নদীতে ছোট-বড় প্রায় পাঁচ শতাধিক চরাঞ্চল রয়েছে। এসব চরাঞ্চলে প্রায় ছয় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। কৃষি নির্ভরশীল এই জেলার খেটে খাওয়া মানুষজনের মাঝে টিকা নেবার নেই আগ্রহ। কাজকর্ম ফেলে টাকা খরচ করে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শহরে গিয়ে টিকা নেয়ার ইচ্ছা নেই এখানকার মানুষের।

সারাবিশ^ করোনার ভয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও জেলার হাট-বাজার কিংবা জনসমাগম এলাকায় করোনার সংক্রান্ত কোনো আতঙ্কই কাজ করেনি এখানে। মাস্ক পড়াতো দূরে থাক স্বাস্থ্যবিধি মানার ছিল না প্রচলন। করোনার ভয়ের চেয়ে প্রশাসনের ভয়ে ক্ষণিকের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানলেও বেশির ভাগ সময়ই ছিল অবজ্ঞা।

দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনার প্রভাব থাকলেও খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে করোনার প্রভাবের বালাই ছিল না। ফলে তাদের করোনার টিকা নেয়ার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। প্রত্যন্ত এসব এলাকায় টিকা সম্পর্কে অনেকের জানা নেই। আর যাদের জানা আছে তারা অনলাইনে নিবন্ধন করার জটিলতার কারণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। শহরের সুযোগ-সুবিধার মতো টিকা নেয়ার ক্ষেত্রেও অবহেলায় থেকে যাচ্ছে দেশের বৃহৎ চরাঞ্চল বেস্টিত কুড়িগ্রামের মানুষ। বরাবরের মতো তারা আস্থা রাখছেন সৃষ্টিকর্তা উপর।

দারিদ্রপীড়িত এই অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষের দাবি, কোনো প্রচার না থাকায় টিকা সম্পর্কে ধারণা নেই তাদের। বিনামূল্যে পাবে নাকি টাকা দিয়ে টিকা নিতে হবে কিংবা কোথায় গিয়ে টিকা দিতে হবে- এই বিষয়গুলো জানে না গ্রামাঞ্চলের মানুষ।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমাঈল হোসেন ইউসুফও স্বীকার করলেন শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের মানুষের করোনার টিকা নিতে আগ্রহ কম। এই জনপ্রতিনিধি বলেন, সময় এবং টাকা খরচ করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে টিকা নিতে আগ্রহী নয় মানুষ। প্রত্যন্ত এলাকায় টিকা কর্মসূচি বাস্তবায়নে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ পরিবার পরিকল্পনার স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বারা টিকা দেয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার দাবি জানান তিনি।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সের মানুষ টিকার আওতায় আসবে নিবন্ধনের মাধ্যমে। টিকা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে অগ্রণী ভূমিকা নেবার পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদেরও প্রচারণার আহ্বান জানান তিনি।

জেলার নয়টি উপজেলায় ৭৩টি ইউনিয়নসহ তিনটি পৌরসভায় প্রায় ২২ লাখ মানুষের বসবাস। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের মতো কুড়িগ্রাম উৎসবমুখর পরিবেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলায় প্রথম দফায় ৩০ হাজার মানুষের জন্য ৬০ হাজার করোনার টিকা এসেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/কেএম)