অচল মেশিন নিয়ে হাজির দমকল, ৪টি ঘর ভস্মীভূত

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২১, ১১:০৩

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গাইবান্ধা শহরের দক্ষিণ বানিয়ারজান এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে চারটি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। ফায়ার সার্ভি কর্মীদের গাফেলতির জন্য দরিদ্র তিন দিনমজুর পরিবারের সব শেষ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর ও এলাকাবাসী।

রবিবার রাতে গাইবান্ধা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বানিয়ারজান এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানায়, নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল কাদেরের বাড়িতে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের ল্যান্ডফোনে যোগাযোগ করে কোনো উত্তর মেলেনি। বাধ্য হয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফোন করেন সরকারি জরুরি সেবা ৯৯৯-এ। পরে অচল সেচমেশিন নিয়ে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তবে ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয় নগদ টাকাসহ তিন হতদরিদ্রের শেষ সম্বলটুকু। এনিয়ে এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিন হত-দরিদ্র নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল কাদের, মো. মুনসি ও বুলু মিয়ার বাড়িসহ চারটি বসতঘর পুড়ে গেছে। এছাড়া আগুনে পুড়ে যায় ঘরে থাকা তাদের আসবাবপত্র ও পরনের কাপড়। এসব শ্রমিক দিনে ২/৩ শ টাকা আয় করে পরিবার নিয়ে অতিকষ্টে দিন যাপন করে আসছিল। হঠাৎ ঘর পুড়ে যাওয়ায় তাদের রাতযাপন করতে হবে রাস্তাঘাট অথবা স্কুলের বারান্দায়। সেই সাথে পরনের কাপড় পুড়ে যাওয়ায় অনেকটা বিপাকে নিম্ন আয়ের এসব পরিবারের মানুষগুলো।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের আব্দুল কাদের, মো. মুনসি ও বুলু মিয়ার অভিযোগ করে জানান, প্রথমে একটি ঘরে আগুন ধরা মাত্রই স্থানীয় লোকজন ও কাউন্সিলর শতবার ফায়ার সার্ভিসের টেলিফোন নম্বরে ফোন দেন। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে ফোন রিসিভ হয়নি। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর আবু বক্কর সিদ্দিক স্বপন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। এরপর চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দমকল বাহিনীর সময় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা। পরে দমকল বাহিনীর সেচপাম্প পুকুরে সংযোগ করার পর শত চেষ্টা করেও যন্ত্রটি চালু করতে পারেনি। ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই।

৭নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর আবু বকর সিদ্দিক স্বপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের মতো একটি সেবাদানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ফোন রিসিভ না করা চরম দুঃখজনক। সেই সাথে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানের দুটি মেশিন একসাথে অচল হবার কারণে দিনমজুরের তিনটি পরিবারকে সর্বস্বান্ত হতে হলো। তাদের মেশিনগুলো সচল থাকলে আগুন নেভানো সম্ভব হতো। ক্ষয়ক্ষতির কবল থেকে পরিবারগুলো রক্ষা পেত।

সেচপাম্প বিকলের কথা স্বীকার করে জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল সার্ভিস কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক বিষয়ে ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমাদের ল্যান্ডফোনের সংযোগটি রাস্তার কাজের জন্য দুই মাসের বেশি বন্ধ আছে। ৯৯৯ থেকে অগ্নিকান্ডে খবর শোনার সাথে সাথে আমাদের গাড়ি বেড়িয়ে পরে; কিন্তু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের কারণে রাস্তায় প্রচুর যানজট ছিল। সেজন্য আমাদের ঘটনাস্থলে পৌছতে কিছুটা দেরি হয়। 

(ঢাকাটাইমস/১মার্চ/কেআর)