সন্তানদের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে গৃহবধূর অনশন

মমিনুল ইসলাম বাবু, কুড়িগ্রাম
 | প্রকাশিত : ০১ মার্চ ২০২১, ২১:৪০

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিমখাঁন ইউপির রামসিং বাইশেরপাড় এলাকায় নিজের স্বামীর পরিচয় এবং সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে অনশন করছেন এক নারী। সোমবার সকাল ১০টায় পরেশ চন্দ্র মন্ডলের বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে এই কর্মসূচিতে বসেছেন তার স্ত্রী দাবিদার লায়লা বেগম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ধামর গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে লায়লা বেগমের (৩৩) সঙ্গে ২০০৩ সালে রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের রামসিং বাইশেরপাড় এলাকার মৃত নরেন্দ্র নাথ মন্ডলের ছেলে পরেশ চন্দ্র মন্ডল হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ে করেন।

২০০৫ সালের ৫ ডিসেম্বর তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান ও ৫ অক্টোবর ২০০৭ সালে একটি মেয়ে সন্তান জম্ম হয়। ২০০৮ সালে আব্দুল হামিদ (পরেশ চন্দ্র মন্ডল) চাকরির বদলির কথা বলে কুমিল্লা চলে যান। এরপর লায়লা বেগম তার সন্তানদের নিয়ে স্বামীকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর দেখা না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েন।

লায়লা সন্তানদের নিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার রাতুল গলীর নুর ভিলা নামে ভাড়া বাসায় দীর্ঘ ১২ বছর দুটি সন্তান নিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছিলেন।

পরেশ চন্দ্র মন্ডলের এইচএসসি পাশের একটি মার্কশিট খুঁজে পেয়ে এর সূত্র ধরে সোমবার সকালে পরেশ চন্দ্র মন্ডলের বাড়িতে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে লায়লা বেগম গিয়ে অনশন শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে লায়লা বেগমের আসার খবর পেয়ে পরেশের পরিবারের লোকজন কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে অনশনরত লায়লা বেগম বলেন, আমি ১২ বছর ধরে আমার সন্তানদের বাবার পরিচয় দিতে পারছি না। এতদিন পর আমার স্বামীর বাড়ির ঠিকানা পেয়েছি। এসে দেখি বাড়িতে কেউ নেই। তাই আমার স্বামী না আসা পর্যন্ত অনশন করবো। মরণের আগ পর্যন্ত।

লায়লা বেগমের সন্তান মেহেদী হাসান রিপন(১৬) ও নুশরাত জাহান ইলমা(১৪) বলে, আমরা জন্মের পর থেকে বাবাকে দেখি নাই। আজ মা ও আমরা বাবার ঠিকানা খুঁজে পেয়েছি। তাই বাবাকে না দেখা পর্যন্ত আমরা যাব না। বাবা যদি না আসে এবং আমাদের পিতৃ পরিচয় না দেয় তাহলে আমার এখানেই আত্মহত্যা করবো।

নাজিমখান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য আজিজার রহমান জানান, পরেশ চন্দ্র ২০০১ সালে একটি বিয়ে করে তাকে ডিভোর্স দেন। এরপর কোথায় যায় জানি না। আজ জানলাম সে মুসলিম হয়ে বিয়ে করেছে। আবার ২০০৯ সালে রংপুর গঙ্গাচড়া এলাকায় হরিশংকরের মেয়ে কল্পানা রাণীকে বিয়ে করেন।

অভিযুক্ত হামিদের(পরেশ) সঙ্গে ফোনে একাধিকাবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে রাজারহাট থানার ওসি রাজু সরকার বলেন, লায়লা বেগম থানায় এসেছেন। অভিযোগ শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১মার্চ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :