ভাসানচরের পথে আরো দুই হাজার রোহিঙ্গা
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে পঞ্চম দফায় ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে পঞ্চম দফার প্রথম অংশে ২০টি বাসে করে এক হাজার এবং পরে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আরও ২০টি বাসে এক হাজারসহ মোট দুই হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু নিয়ে উখিয়া থেকে চট্রগ্রামের উদ্দোশ্যে রওনা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুটি বাস, দুটি অ্যাম্বুলেন্স যেতে দেখা যায়। এছাড়াও তাদের মালামাল বহন করছে ১১টি কার্গো ভ্যান।
এর আগে সোমবার ও মঙ্গলবার উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মিনিবাসে করে রোহিঙ্গাদের উখিয়া কলেজ মাঠের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়। সেখানে তাদের খাবার দিয়ে বাসে উঠার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
বুধবার আরও দুই হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে উখিয়া ছেড়ে যাবেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দৌজা বলেন, কয়েক ধাপে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছেন। তারা সেখানে এই শিবিরগুলোর চেয়ে অনেক ভালো পরিবেশে রয়েছে। এটি সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া। পর্যায়ক্রমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নেয়া হবে ভাসানচরে।
রোহিঙ্গা মাঝিরা বলেন, স্বেচ্ছায় রাজি হয়ে রোহিঙ্গারা ভাসানচর গিয়ে সেখানকার পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধা উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জানালে যারা যেতে রাজি হয়েছেন তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়।
রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ উল্লাহ বলেন, বর্তমান জীবন-যাপনের চেয়ে অনেকটা উন্নত ভাসানচর। আমরা সাধারণ রোহিঙ্গা ভাইদের বুঝাচ্ছি যাতে তারা নিজ ইচ্ছায় ভাসানচর যায়। সেখানে তারা ভালো থাকবেন। যারা ভাসানচরে গেছে তারা অনেক ভালো আছেন বলে শুনছি।
উল্লেখ্য, এই প্রক্রিয়ার শুরুতে গত ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর তিন হাজার ৪৪৬ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ২৯ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপের প্রথম অংশে এক হাজার ৭৭৮ জন এবং ৩০ জানুয়ারি দ্বিতীয় অংশে এক হাজার ৪৬৩ জনকে ভাসানচরে নেয়া হয়। চতুর্থ দফায় দুই দলে তিন হাজার ২০ জন পৌঁছান সেখানে।
বর্তমানে নয় হাজার ৭০৭ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে বসবাস শুরু করেছেন। এছাড়া এরও আগে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত বছরের মে মাসে ভাসানচর নেয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/২মার্চ/কেএম)