বছরে এক হাজার এসি, নন-এসি বাস তৈরি করবে ইফাদ

প্রকাশ | ০৪ মার্চ ২০২১, ১৯:০৯

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বছরে এক হাজার এসি, নন-এসি লাক্সারি বাস তৈরির লক্ষ্য নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে ইফাদ অটোস লিমিটেড।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ধামরাইয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে প্রতিষ্ঠিত ইফাদের নিজস্ব কারখানায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি এই উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এমপি, ঢাকা-২০ আসনের এমপি বেনজির আহমেদ এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মুন্সী শাহাবুদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ইফাদ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তানভীর আহমেদ, ইফাদ অটোসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাসকিন আহমেদ, গ্রুপ ডিরেক্টর তাসফিন আহমেদসহ বিভিন্ন অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বাস-ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বমানের গাড়ি দেশেই উৎপাদন করা বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে শিল্প মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে একটি নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এ শিল্পের উত্তরোত্তর উন্নয়ন এবং টেকসই বিকাশের লক্ষ্যে এ নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শিগগির এর খসড়া অনুমোদন করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে পরামর্শক্রমে তা চূড়ান্ত করা হবে। এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক অটোমোবাইল শিল্প উৎপাদনের কেন্দ্রে উন্নীত করা হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।

এ লক্ষ্য অর্জনে তিনি সরকারের পাশাপাশি অটোমোবাইল শিল্প উদ্যোক্তাদেরকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে প্রকৃত অর্থেই নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিক রাখবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ গাড়ি সংযোজনকারী দেশের গণ্ডি পেরিয়ে গাড়ি উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন শিল্পমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, আপনারা এও জানান, বর্তমান সরকার ২০২০ সালকে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ২০৪১ সালে উন্নত আয় ও শিল্প সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সরকার দেশে শিল্প কারখানা স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সবধরনের সহায়তা প্রদান করছে।

ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু জানান, বেসরকারি উদ্যোগে ইতিহাসে নবদিগন্তের সূচনা করেছে ইফাদ অটোস। এতদিন এই কারখানায় শুধু গাড়ি সংযোজন করা হতো। এখন বিলাসবহুল এসি, নন-এসি বাসের বডি তৈরি করা হবে। তিনি জানান, বর্তমানে বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানি করতে বেশ সময় লাগে। এই কারখানা চালু হওয়ার ফলে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে গাড়ি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

ইফতেখার আহমেদ টিপু বলেন, বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে আমদানিকৃত গাড়িতে আমদানি বাবদ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ইফাদ অটোস লিমিটেড বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও দেশে শিল্প বান্ধব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই কারখানা স্থাপন করেছে। তিনি আরও জানান, ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে লাক্সারি এসি ও নন-এসি বাস তৈরি হবে। বছরে এক হাজারেরও বেশি গাড়ির বডি তৈরি করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, যেহেতু এই কারখানায় বিভিন্ন মডেলের এসি-নন এসি বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান সংযোজন হবে, তাই তার উৎপাদন খরচ আমদানিকৃত তৈরি গাড়ির চেয়েও কম হবে। এর সুবিধা গাড়ির মালিক ও যাত্রীরা ভোগ করবেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে তৈরি হবে নতুন গাড়ি। শুধু বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে না, দেশের অনেক ছোট ছোট বিশেষায়িত কারখানায় তাদের উৎপাদিত মানসম্পন্ন বিভিন্ন পণ্য এই সংযোজন কারখানায় সরবরাহের দ্বার উন্মোচন হবে।

জাতীয় অর্থনীতিতে এই সংযোজন কারখানা বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। যেমন- দেশীয় কাঁচামালের সঠিক ব্যবহার, দক্ষ কর্মি সৃষ্টি, নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।

বছরে ১২ হাজার গাড়ি সংযোজনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৭ সালে ইফাদ অটোস লিমিটেডের সংযোজন কারখানা চালু হয়। কারখানাটিতে ভারতের অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের গাড়ি তৈরি হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/০৪মার্চ/আরএ/জেবি)