ধরন বদলে বেড়েছে বড় সব প্রতারণা

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২১, ১০:১৯ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২১, ১২:১৮

সিরাজুম সালেকীন, ঢাকাটাইমস

দেশে সার্বিক অপরাধ কমলেও ধরন পাল্টে বড় অপরাধের প্রবণতা বেড়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ, আর্থিক জালিয়াতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করে দেওয়ার আশ্বাস, আবাসন ব্যবসা এবং সাইবার অপরাধই বেশি।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে অনলাইনভিত্তিক কাজ বেড়েছে। মানুষের প্রযুক্তিমুখী হওয়ার সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে অপরাধচক্র। তারা সাইবারজগতে ফাঁদ পেতে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে, ফেলছে বিপদে। অনেক ক্ষেত্রে তারা ধরা পড়লেও সব ধরনের প্রতারণার সাজা একই হওয়ায় বড় অপরাধ করেও অনেকে ছাড় পেয়ে আরও বড় অপরাধে জড়াচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, সরকারি-বেসরকারি দাপ্তরিক কাজ, ব্যবসা-বাণিজ্যের লেনদেন, কেনাকাটার মতো কাজগুলো মানুষ এখন অনলাইনে সারছেন। কিন্তু মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব আছে। লোভের ফাঁদে পড়েই অধিকাংশ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন।

প্রতারণার বেশিরভাগ ঘটনায় দেখা গেছে স্বল্পশিক্ষিত, চাকরিপ্রত্যাশী ও বেকার মানুষ প্রতারক চক্রগুলোর টার্গেট হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এসব চক্রের সদস্যরা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানায় ৭৮টি প্রতারণার মামলা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে কয়েকটি বড় প্রতারণার অভিযোগে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

গত ২৮ জানুয়ারি ‘দুর্লভ নাসা’র কয়েন বিক্রির নামে প্রতারণা চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। প্রতারক চক্রটি প্রলোভন দেখাতো- কাঠের তৈরি কথিত এ কয়েন কিনে আবার বিক্রি করলে কোটি কোটি টাকা লাভ হবে। গবেষণার কাজে নাসা কয়েনটি ব্যবহার করে। এটি কিনে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করা যাবে। কয়েনটির ব্যাপক চাহিদা। একেকটির ক্রয়মূল্য ১০ কোটি টাকা। 

পিবিআই জানায়, এই লোভের ফাঁদে পড়ে বিশিষ্ট শিল্পপতি থেকে শুরু করে সরকারি আমলারা খুইয়েছেন কোটি কোটি টাকা। প্রতারিতদের মধ্যে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সরকারি সাবেক আমলারাও রয়েছেন। প্রথম শ্রেণির এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার পেনশনের ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা তুলে দেন প্রতারকদের হাতে। আরেক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খুইয়েছেন ৮৪ লাখ টাকা। স্বনামধন্য এক ব্যবসায়ী ২ কোটি টাকা দিয়েছেন, আরও টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন।

এই প্রতারকদের কেউ শাড়ি ব্যবসায়ী, আবার কেউ বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করেন। আর দুজন পেয়ারার চাষাবাদে জড়িত। তাদের পরনে দামি ব্রান্ডের পোশাক, দামি গাড়িতে চলাফেরা। তারা বেশিরভাগ সময় থাকতেন পাঁচ তারকা হোটেলে।

৩১ জানুয়ারি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন আশরাফুল ইসলাম দিপু নামের এক যুবক। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা দিপু প্রতারণার জন্য নিজেকে পরিচয় দিতেন এনএসআইয়ের পরিচালক হিসেবে। প্রতারণার জন্য যেখানে যখন যেমন পরিচয় প্রয়োজন হতো, সেখানে তেমন পরিচয়েই নিজেকে তুলে ধরতেন দিপু। এভাবে তিনি বিচারক, পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদেরও বোকা বানিয়েছেন। হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।

২৩ ফেব্রুয়ারি জাহিদুর রহমান ইকবাল নামে এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়। মুজিববর্ষের লোগো, প্রধানমন্ত্রীর বাণী সম্বলিত প্যাডে ৪০ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়ে গাছ লাগানোর কথা বলেন জাহিদুর। নিজের নামের আগে ‘বনবন্ধু’ উপাধি লাগিয়ে একাধিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেওয়া জাহিদুর ব্যাংক ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ২ অক্টোবর ঢাকার রূপনগর এলাকায় একটি গোপন আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার হয় নাসিম রিয়েল এস্টেটের মালিক ইমাম হোসেন নাসিম। তার নামে ৫৫টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। তার কাছে প্রতারণার শিকার হয়েছেন প্রবাসী, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও। নাসিমের আস্তানা থেকে অস্ত্র, মাদকসহ নগদ টাকা ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের কাছে তার বিরুদ্ধে সাড়ে তিনশ অভিযোগ জমা পড়ে।

ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে বিদেশে পাঠানোর নামে মানবপাচারের অভিযোগে ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবী থেকে এক প্রতারক চক্রকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। বিদেশ যেতে ইচ্ছুক স্বল্পশিক্ষিত লোকদের টার্গেট করত চক্রটি।

আবাসন ব্যবসার নামে প্রতারণা করে অন্তত ৫৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ৯ ফেব্রুয়ারি ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায় ‘সেবা আইডিয়াল অ্যান্ড লিভিং লিমিটেড’ নামে এই প্রতিষ্ঠানটি এক লাখ টাকা লগ্নিতে দুই বছরে দ্বিগুণ টাকা লাভ দেবে বলে গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করত।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ২২০৯ জন গ্রাহকের টাকা জমার রসিদ ও লভ্যাংশের ফাইল জব্দ করা হয়। এছাড়া তাদের নিজস্ব কোনো জমি না থাকলেও তারা সিলসিটির একটি ব্রশিয়ার দেখিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করত। পরে তাদের দ্বিগুণ টাকার লাভ দেখিয়ে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করত।

চক্রটির প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক নাসির উদ্দিন জানান, প্রতি মাসে ৮ হাজার টাকা মুনাফার আশায় দুই লাখ টাকা তুলে দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির কাছে। এর বিনিময়ে প্রতি মাসে আমাকে সাড়ে আট হাজার টাকা মুনাফা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি ছিল। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর কোনো টাকা না পেয়ে অফিসে এসে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আশ্বাসে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি চক্র। ১০ ফেব্রুয়ারি রুহুল আমিন নামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

এদিকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), ট্রেড লাইসেন্স এবং টিন সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে ফ্ল্যাট মালিক কিংবা ক্রেতা সেজে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। এ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মতিঝিল গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

৩ মার্চ ডিবি পুলিশ জানায়, জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করে এই জালিয়াতির কাজে সহায়তা করতেন নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন নিম্ন শ্রেণির কর্মকর্তা। জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৪ জনকে বরখাস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত ১১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতারণার তথ্য পেয়েছে ডিবি। অভিযুক্তরা ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে ঢাকা ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ফ্ল্যাট লোন নিয়ে টাকা পরিশোধ না করে তা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যেত।

ফ্ল্যাট দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ প্রতারণা

প্রথমে প্রতারকরা ব্যাংকে যায়। তারপর তারা ফ্ল্যাট কেনার জন্য লোন চায় ব্যাংকের কাছে। তখন ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোন ফ্ল্যাট কিনবেন সেখানে ব্যাংক ভিজিট করবে। তখন প্রতারকরা ভিজিটের জন্য ব্যাংকারসহ ফ্ল্যাট দেখতে যাবে। প্রতারকরা আগে থেকেই সাইনবোর্ড দেখে কোন ফ্ল্যাট বিক্রি হবে তাদেরকে ঠিক করে রাখে। তারপর ফ্ল্যাট ভিজিটে গেলে ব্যাংক সবকিছু ঠিক দেখতে পায়।

পরবর্তীতে প্রতারক দল ফ্ল্যাট মালিকের কাছ থেকে এনআইডি ও ফ্ল্যাটের কাগজপত্রের ফটোকপি নিয়ে আসে। সরল বিশ্বাসে ফ্ল্যাট মালিক এনআইডি ও ফ্ল্যাটের কাগজপত্র দিয়ে দেয়। তারপর প্রতারকরা ফ্ল্যাট মালিকের এনআইডি হুবহু নকল করে শুধুমাত্র ছবি পরিবর্তন করে এনআইডি তৈরি করে। যে এনআইডি সার্ভারে বা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখতে পায়। ব্যাংকের কর্মকর্তারা এনআইডি সার্ভারে সার্চ দিলে তা সঠিক দেখতে পায়।

এরপর ব্যাংক প্রতারকদের অফিস ভিজিটে যান। তখন প্রতারকরা অফিস ভাড়া নেয় ১ বা ২ মাসের জন্য। ব্যাংকের লোক প্রতারকদের অফিস ভিজিটে গিয়ে অফিস গোছানো এবং সব ঠিক আছে দেখতে পায়। তারপর ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন করার দিন ব্যাংকের লোক উপস্থিত থাকে। যেহেতু ফ্ল্যাট ভিজিট করেছে, এনআইডি সার্ভারে এনআইডি সঠিক পেয়েছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সঠিক পেয়েছে, সব কিছু ঠিক দেখে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন হওয়ার ১/২ দিন পর ঋণের পে-অর্ডার দিয়ে দেয়া হয় ফ্ল্যাটের সাজানো ক্রেতা ও বিক্রেতাকে। পরবর্তীতে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না হলে প্রতারকদের দেয়া এনআইডির বিস্তারিত দেখতে গেলে ব্যাংক বুঝতে পারে যে, ব্যাংক প্রতারিত হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘প্রতারকরা বড় বড় লোভনীয় অফার দিচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ না বুঝেই তাদের কথায় রাজি হচ্ছে। চক্রগুলোর লোভের ফাঁদেই অধিকাংশ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। অনেক সময় একটি ফ্ল্যাট বা একটি জমি একাধিক লোকের কাছে বিক্রি করছে প্রতারকরা। গ্রাহকরা না বুঝেই অগ্রিম টাকা দিচ্ছে এবং আর ফেরত পাচ্ছে না। লেনদেনের সময় সবাইকে আরো সতর্ক হবার পাশাপাশি কোনো সন্দেহ হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হবে।’

অনেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিপদে পড়ছে জানিয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘বর্তমানে অপরাধের আরেকটি বড় প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে সাইবার অপরাধ। দেশের অধিকাংশ মানুষের সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে খুব একটা জানাশোনা নেই। ফলে না বুঝেই ইন্টারনেটে অনেক কাজ করে বিপদে পড়ছে, প্রতারকদের খপ্পরে পড়ছে।’

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি প্রতারণার বিষয়টি ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছেছে। বিশেষ করে অনলাইন প্রতারণার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অভিযোগে এবং সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে র‌্যাব অভিযান পরিচালনা করে থাকে। প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।’

অনলাইনে প্রতারণার বিষয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মানুষ এখন তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর বা অনলাইনের প্রতি তাদের নির্ভরশীলতা বেড়েছে। আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, যেখানেই মানুষের নির্ভরশীলতা বাড়ে সেখানেই একধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মানুষ সংক্ষিপ্তপন্থায় ধনী হবার চেষ্টা করে। যেহেতু অনলাইনে মানুষের নির্ভরশীলতা বেড়েছে, সেক্ষেত্রে প্রতারকের সংখ্যাও সমানুপাতিক হারে বেড়েছে।’

মানুষের প্রতি র‌্যাবের পরামর্শ- এমন কোনো লেনদেনের বেলায় কাউকে যেন সহজেই বিশ্বাস না করা হয়। যেকোনো লেনদেনের পূর্বে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন কোনো প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়তে যাচ্ছেন কি না।

পিবিআইয়ের প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সার্বিক অপরাধ বাড়েনি; তবে অপরাধের ধরন পাল্টেছে। বর্তমানে অপরাধীরা বড় লোকদের টার্গেট করছে। অল্পসময়ে তাদেরকে আরো বড় লোক বানিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলছে।’
বনজ কুমার বলেন, ‘অনেকে প্রতারিত হবার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানায়। আগে জানায় না, কারণ যেভাবে তারা বড়লোক হতে চাচ্ছে এই পন্থা কেউ জেনে যাবে। পরে যদি তারা আরো টাকার মালিক না হতে পারে।’

সব ধরনের প্রতারণার সাজা একই রকম হওয়ায় ধরা পড়ার পর সহজেই বেরিয়ে এসে অপরাধীরা আবার বড় প্রতারণায় জড়িয়ে পড়ে মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বর্তমানে প্রতারণার ধরন পাল্টেছে। এখন বেশিরভাগ প্রতারণা অনলাইনভিত্তিক হচ্ছে। অনলাইনের মাধ্যমে মানুষের উপকার আছে, যেমন ঘরে বসে মোবাইলে রিচার্জ বা যেকোনো কেনাকাটা করতে পারছি।’

এ সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘মানুষের অনলাইন নির্ভরতা বেড়েছে, আবার এখানে মানুষ প্রতারিতও বেশি হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারি কোনো নিয়ম-নীতি বা লাইসেন্স না থাকায় অনেকে যেনতেন প্রতিষ্ঠান খুলে বসছে। মানুষ প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হবে সে সুযোগও কম। প্রাইভেট সেক্টর উন্নত হবে কিন্তু সেগুলোর মনিটরিং দরকার।’

সাদেকা হালিম বলেন, ‘আবার সব ধরনের প্রতারণার সাজাও প্রায় একই। বড় অপরাধ করে অনেকে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। অনেকে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে যায়। এগুলো নিয়ে সরকারের ভাবার সময় এসেছে।’

(ঢাকাটাইমস/০৬মার্চ/ডিএম)