ওমর ফারুকের বৈদ্যুতিক ঢেঁকিতে কর্মসংস্থান তৈরির সম্ভাবনা

জুনাইদ কবির, ঠাকুরগাঁও
| আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২১, ১৭:০৬ | প্রকাশিত : ০৬ মার্চ ২০২১, ১১:৫৭

ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে নতুন রুপে ঢেঁকিছাঁটা চাল প্রস্তুত করছেন ওমর ফারুক। ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ভোরনিয়া গ্রামের এ যুবক বৈদ্যুতিক পদ্ধতির ঢেঁকির মাধ্যমে ধান ভাঙিয়ে চাল তৈরি করে বাজারজাত করেছেন। তার এই ঢেঁকিছাঁটা চাল বেশ সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় সারা ফেলেছে এলাকায়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করছেন ওমর ফারুক।

ওমর ফারুকের স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে অন্যের কর্মসংস্থান তৈরি করা। সে লক্ষ্য থেকেই তার নিজস্ব চিন্তা চেতনায় আধুনিক পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ও মটরের মাধ্যমে গত ছয় মাস আগে স্থাপন করেন ‘ডিজিটাল ঢেঁকি’।

সাধারণত ঢেঁকিতে ধানের তুষ ছাড়িয়ে চাল বের করা খুব কষ্টসাধ্য ও সময় সাপেক্ষ হলেও ওমর ফারুকের তৈরিকৃত আধুনিক পদ্ধতির ঢেঁকিতে ধান ভাঙা খুবই সহজলভ্য ও স্বল্প সময়ে অধিক পরিমাণে চাল বের করা যায়।

ঢেঁকিতে ধান থেকে চাল বের করতে হতো ধড়ের এক প্রান্তে পা দিয়ে পালাক্রমে চাপ প্রয়োগ করে বা পাড় দিয়ে। আর এই ঢেঁকিতে বিদ্যুতের মাধ্যমে মটরচালিত লোহার হাতল দিয়ে পালাক্রমে চাপ দিয়ে ধানের তুষ ছাড়িয়ে চাল বের করা হচ্ছে স্বল্প সময়ে। এতে সময় ও শ্রম দুটোই খরচ হচ্ছে কম।

কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করে মধ্যযুগীয় পদ্ধতিতে বড় পাতিলে ধান ঢেলে চুলাতে খড়ির মাধ্যমে জাল দিয়ে ধান সিদ্ধ করা হয় এখানে। আবার সেই ধান শুকিয়ে ঢেঁকির মাধ্যমে ভাঙিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে ঢেঁকি ছাটা চাল। এই চালের ফাইবার নষ্ট না হওয়ায় ও পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ার কারণে ওমর ফারুকের ঢেঁকিছাঁটা চালের চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক।

সহজেই এই ঢেঁকির মাধ্যমে দিনে ৫ থেকে ৬ মণ ধান ভাঙতে পারেন বলে শ্রমিক ও মেশিন অপারেটর মানিরুল ইসলাম জানান।

অন্যদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে আমরা যে চাল খাচ্ছি সেগুলোতে অনেক ক্যামিকেল যুক্ত থাকে। এতে অসুখ বেশি হচ্ছে। কিন্তু ঢেঁকিছাঁটা চাল খেলে অনেকাংশে অসুখ থেকে বাঁচব।

এছাড়াও স্থানীয় আবুল হোসেন বলেন, আমরা পূর্বে যেমন ভিটামিন সমৃদ্ধ ঢেঁকিছাঁটা চাল খেতে অভ্যস্ত ছিলাম তেমনি মানুষের এখনো ঢেঁকিছাঁটা চালের চাহিদা আছে।

এদিকে, বর্তমানে স্বল্প পরিসরে হলেও ওমর ফারুকের ঢেঁকিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেকে। প্রযুক্তিগত বা কারিগরি সহায়তা পেলে বৃহদাকার করে গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান করতে পারবেন বলে জানান ওমর ফারুক।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে বিভিন্ন অটোরাইস ও হাস্কিং মিল হওয়ায় গ্রাম বাংলা থেকে ঢেঁকি উঠে গেছে প্রায়। ওমর ফারুক তার নিজস্ব পরিকল্পনা ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢেঁকিকে আবার জনপ্রিয় করে তুলেছে। এটা যেমন পরিবেশবান্ধব তেমনি যদি এটাকে অব্যাহত রাখা হয় তাহলে আমরা পুষ্টিসমৃদ্ধ চাল খেতে পারব।’

(ঢাকাটাইমস/৬মার্চ/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :