মিয়ানমারের বিক্ষোভ অব্যাহত, স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২১, ১৭:২৪ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২১, ২০:৪৬

অনলাইন ডেস্ক

হামলা, গুলির ভয় উপেক্ষা করে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। শনিবার পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস, স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিসহ তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির নেতৃত্বস্থানীয় ২০ এর অধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। এরপর গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে তারা জরুরি অবস্থা জারি করে। কিন্তু মিয়ানমারের সাধারণ জনতা সামরিক শাসন প্রত্যাখান করে এর বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করে।

মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী এবং পুলিশের গুলিতে পঞ্চাশের অধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ওপর সীমিত পরিসরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবুও জান্তা সরকারের অবস্থান পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।        

জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, শুধুমাত্র গত বুধবারই মিয়ানমারের বিক্ষোভে অন্তত ৩৮ বিক্ষোভকারী  নিহত হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা অং সান সু চির মুক্তি দাবি এবং নভেম্বরের নির্বাচনে শ্রদ্ধা দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছে। ওই নির্বাচনে সু চির দল ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করেছে।    

শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টাইন শরনার বারজেনার বলেন, আমরা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে আর কত এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে দিব? মিয়ানমারে সেনা শাসনের অবসান ঘটিয়ে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের এই বিশেষ দূত বলেন, নেপিদোর পরিস্থিতি মানবিক সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, দ্রুত এ অবস্থা ঠেকানো দরকার, মিয়ানমারের  বিষয়ে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন ঐক্য প্রতিষ্ঠা বেশি জরুরি।

ক্রিস্টাইন বারজেনার আরও বলেন, ‘আমি প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার বার্তা পাচ্ছি যাতে মিয়ানমার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়। দেশটির নারী, পুরুষ, শিক্ষার্থী নির্বিশেষে সমাজের সাধারণ মানুষ মিয়ানমার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে এবং তারা এই আস্থা রাখছে যে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার বিষয়ে কিছু করবে।‘

এ বিষয়ে সামরিক সরকারের একজন মুখপাত্রের কাছে রয়টার্সের পক্ষ থেকে মন্তব্য চাওয়া হলে তারা কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সেনবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা প্রতিবাদ স্তব্ধ করা থেকে বিরত রয়েছে। তবে সেনাবাহিনী স্থিতিশীলতা নষ্টের হুমকি বরদাস্ত করবে না বলেও জানিয়েছে।

এদিকে, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনিতে কয়েকশ মানুষ বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভে তারা সংগীত পরিবেশন করে এবং স্বৈরাচার বিরোধী প্রতীক তিন আঙ্গুল প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভের আয়োজক থেইন মো উইন অস্ট্রেলিয় সরকারকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র,ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/০৬মার্চ/কেআই)