গোড়ানে দুই শিশু খুন, তদন্ত শেষ হয়নি এক বছরেও

প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০২১, ১২:৫৯ | আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২১, ১৪:৫৪

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
রাজধানীর গোড়ানে মায়ের হাতে নৃশংসভাবে দুই শিশু মেয়ের নৃশংস খুনের ঘটনার আজ এক বছর পূর্ণ হলো। তবে বছর পেরোলেও মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন এখনও দেয়া হয়নি। এই মাসেই চার্জশিট দেয়া হবে বলে পুলিশের ভাষ্য। 
 
এদিকে আদরের দুই মেয়েকে হারিয়ে শিশুদের বাবা ন্যায় বিচারের আশায় দিন গুনছেন। 
 
গত বছরের ৭ মার্চ খিলগাঁওয়ের গোড়ানে মেহজাবিন আলফি (১১) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (৭) হত্যার শিকার হয়। হত্যাকাণ্ডের পর জানা যায়, তাদের মা আক্তারুন্নেছা পপি দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করে নিজেও গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। পরে হত্যার শিকার মেয়ে দুটির বাবা মোজাম্মেল হোসেন বিপ্লব স্ত্রী আক্তারুন্নেছা পপিকে একমাত্র আসামি করে খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আক্তারুন্নেছা পপি এখন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে বন্দি।
 
চাঞ্চল্যকর মামলাটি তদন্তে প্রথমে দায়িত্ব পান খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাহাত খান। তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে গেলে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজিত সাহা।
 
ঢাকা টাইমসকে সুজিত সাহা বলেন, গত সপ্তাহে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আমরা হাতে পেয়েছি। চলতি মাসের মধ্যেই অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেব। 
 
এদিকে মামলার বাদি মোজাম্মেল হোসেন বিপ্লব বর্তমানে গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের রাঢ়িখালের গ্রামের বাড়িতে থাকেন। শ্রীনগর বাজারে তার একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকান রয়েছে। তবে মর্মান্তিকভাবে দুই সন্তানকে হারিয়ে তার ব্যবসাও বন্ধের পথে। এখন দুই কন্যাকে হত্যার বিচারের আশায় দিন গুণছেন মোজাম্মেল হোসেন।
 
এদিকে কাশিমপুর কারাগারের একটি সূত্রে জানা গেছে, দুই মেয়েকে হত্যার ঘটনায় অনুশোচনায় দগ্ধ আক্তারুন্নেছা পপি। কারাগারে প্রায় সময় কান্না আর নামাজ দোয়া করেই দিন কাটছে তার।
 
মোজাম্মেল হোসেন বিপ্লব ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি মুন্সিগঞ্জে থাকলেও আমার সন্তানদের কখনও কোনো কষ্ট দেইনি। আমার বড় মেয়েটি মেধাবি ছাত্রী ছিল। সবসময়ে আমি তাকে বলতাম, মা ভালো করে লেখাপড়া করো। তোমাদের আমি বিসিএস ক্যাডার বানাবো। আমার মেয়েদেরকে মানুষে হিজাব কন্যা বলে ডাকত। আমার বড় মেয়ে নামাজ পড়ত। কোরআন শরিফ পড়ত। 
 
বিপ্লব বলেন, একমাস আগে একদিন আমার স্ত্রী জেলখানা থেকে ফোন করেছিল। আমি আপনি বলে সম্মধোন করে বললাম কে আপনি ? তখন তিনি আমাকে বললেন আমি পপি বলছি। আমি বলি, কী চান আমার কাছে? তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি ভুল করেছি। আমাকে জেলখানা থেকে বের করো। এখানে আমার ভালো লাগছে না। তখন আমি তাকে বলেছিলাম, আমি আপনাকে জেলখানা থেকে বের করলাম। কিন্তু হাশরের দিন আল্লাহর সামনে কী করবেন? এমন কথা বলে আমি ফোনের লাইন কেটে দেই। 
 
মোজাম্মেল হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, তিনি (স্ত্রী) আমার সব স্বপ্ন নষ্ট করে দিয়েছেন। এখন আমি তার ন্যায় বিচার চাই। যাতে করে আর কেউ সন্তান হত্যার মতো ঘৃণিত অপরাধ করার সাহস না পায়। এ ঘটনার ন্যায় বিচার না হলে আর কোন সন্তান তার মায়ের সাথে ঘুমাতে পারবে না।
 
(ঢাকাটাইমস/৭ মার্চ/এএ/কেআর)