সুইজারল্যান্ডে মুখঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ, নেকাবের ছবিতে বিতর্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
| আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২১, ১৩:০৫ | প্রকাশিত : ০৮ মার্চ ২০২১, ১২:৩৪

সুইজারল্যান্ডের গণভোটে সামান্য ব্যবধানে প্রকাশ্যে মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধের বিতর্কিত প্রস্তাব পাস হয়েছে৷ প্রস্তাবে পোশাকের ধরন উল্লেখ করা না হলেও মুসলিম নারীদের বোরকা বা নিকাবকে লক্ষ্য করেই প্রচার চালানো হয়েছে৷ এ বিষয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতে নেকাবের ছবি দেয়ায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো বিষয়ে এক লাখ মানুষ স্বাক্ষর প্রদান করলে সেই প্রস্তাবের উপর জাতীয় ভোট অনুষ্ঠিত হয়৷ গণভোটে ৫১ দশমিক দুই শতাংশ মানুষ প্রস্তাবটির পক্ষে রায় দিয়েছেন৷ তবে দেশটির ২৬টি ক্যান্টনের (প্রশাসনিক অঞ্চল) ছয়টিতে বেশিরভাগ মানুষ এই প্রস্তাব সমর্থন করেননি৷ এই ছয় ক্যান্টনের মধ্যে রয়েছে দেশটির সবচেয়ে বড় তিন শহর জুরিখ, জেনেভা ও বাসেল৷ এছাড়া রাজধানী বার্নের অধিকাংশ মানুষও ছিলেন বিপক্ষে৷ খবর ডয়চে ভেলের

প্রস্তাব অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখতে পারবেন না৷ রেস্টুরেন্ট, স্টেডিয়াম, গণপরিবহন এমনকি রাস্তায় হাঁটার ক্ষেত্রেও মুখ আবৃত করে এমন পোশাক পরা যাবে না৷ তবে ধর্মীয় উপাসনালয় এবং নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত কারণে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না৷ অর্থাৎ করোনা থেকে রক্ষায় মাস্ক পরতে কোন সমস্যা নেই৷ তবে প্রার্থনাস্থলে এই নিয়মের ছাড় দেয়া হবে৷

এরই মধ্যে দেশটির দুইটি অঞ্চলে নিয়মটি কার্যকর রয়েছে৷ সেটি সারা দেশের প্রযোজ্য হবে কিনা সেই বিষয়ে রবিবার ভোটাভুটি হয়েছে৷ ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে৷

সুইজারল্যান্ডে এই প্রস্তাবের কোথাও বোরকা, নিকাবের কথা আলাদা করে বলা হয়নি৷ তবে এর পক্ষের রাজনৈতিক প্রচারে মুসলিম নারীদের পোশাককেই সামনে আনা হয়েছে৷ সুইজারল্যান্ডের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল দ্য সুইস পিপলস পার্টি প্রস্তাবের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেয়৷ তাদের বিলি করা একটি প্রচারপত্রে বোরকা পরা এক নারীর চিত্র ব্যবহার করে লেখা হয়েছে, ‘ইসলামি উগ্রবাদ থামাও’৷

কিন্তু বাস্তবতা হলো সুইজারল্যান্ডে সচরাচর বোরকা, নিকাব পরিহিত নারীদের তেমন একটা দেখা যায় না৷ তারপরও এমন প্রস্তাব কেন উঠেছে সেটি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আছে৷ এই বিষয়ে সুইস পিপলস পার্টির সংসদ সদস্য জ্যঁ-লুক অ্যাডোর বলেন, বোরকা পরা খুব বেশি নারী সুইজারল্যান্ডে নেই সেটা সৌভাগ্যের৷ তার যুক্তি, ‘কোন বিদ্যমান সমস্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই সমাধান করা উচিত’৷

তবে সরকার ও সংসদ এ নিয়ে দেশজুড়ে নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে ছিল৷ এর মাধ্যমে অকারণ ইসলাম ভীতি ছড়ানো হচ্ছে বলেও মত তাদের৷ বিপক্ষের একটি প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, ‘অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয় ও ইসলামভীতি ছড়ানো বোরকা বিরোধী আইনকে না বলুন’৷

যেসব জায়গায় কর্তৃপক্ষ পরিচয় নিশ্চিত হতে চাইবে সেসব ক্ষেত্রে কেউ মুখ ঢাকা পোশাক পরলেও চেহারা দেখানোর বাধ্যবাধকতার পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারা৷ নিষিদ্ধের প্রস্তাবটি ভোটে বাতিল হলে তাদের এই বিকল্প প্রস্তাব কার্যকর হতো৷

প্রস্তাবটিতে যেসব কথা বলা হয়েছে সেগুলোকে বর্ণবাদী হিসেবে উল্লেখ করেছে মুসলিম নারীদের সংগঠন পার্পল হেডসকার্ভস৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে সংগঠনটির মুখপাত্র ইনেস এল-শিখ বলেন, প্রস্তাবিত আইনে যা সমস্যা নয় সেটিকে একটি সমস্যা হিসেবে দেখানো হচ্ছে৷ অথচ পুরো সুইজারল্যান্ডে মাত্র ত্রিশজন নারী বোরকা পরেন৷

২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮৬ লাখ জনসংখ্যার সুইজারল্যান্ডে মাত্র পাঁচ দশমিক পাঁচ ভাগ মুসলিম৷

ঢাকাটাইমস/০৮মার্চ/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

তীব্র গরমে বিশ্বব্যাপী বছরে ১৯ হাজার শ্রমজীবীর মৃত্যু

গাজা ইস্যুতে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো 

ফের দফায় দফায় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল তাইওয়ান

ইরানে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিজেরাই ধ্বংস করে ইসরায়েল!

মালদ্বীপে সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর দল

পাকিস্তান সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি 

ব্যর্থতার দায় নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের পদত্যাগ 

২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করলো কলকাতা হাইকোর্ট

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান তুরস্কের

সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিতে ইরাকি সশস্ত্র গোষ্ঠীর রকেট হামলা  

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :