ঐতিহাসিক ইরাক সফর শেষ করলেন পোপ ফ্রান্সিস

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২১, ১৭:৩১

অনলাইন ডেস্ক

চারদিনের ঐতিহাসিক ইরাক সফর শেষে ইতালি ফিরেছেন পোপ ফ্রান্সিস। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সোমবার বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পোপ ফ্রান্সিসকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহ।

এর আগে গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো ইরাক সফর করেন পোপ ফ্রান্সিস। ইরাক সফরে তিনি বাগদাদ, ইরবিল, মসুল, নাজাফ নাসিরিয়া পরিদর্শন করেন। তিনি মুসলিম, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। গত বছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর বহির্দেশে পোপ ফ্রান্সিসের এটা ছিল প্রথম সফর।

দুই দশক ধরে যুদ্ধপীড়িত দেশ ইরাক সফর গিয়ে পোপ ফ্রান্সিস সকল ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আহ্বান জানান।

সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার পোপ ফ্রান্সিস ইরাকে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের নিরাপত্তার বিষয়ে ইরাকের নাজাফ শহরে পোপ ফ্রান্সিস শিয়া ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি সিসতানির সঙ্গে বৈঠক করেন। ইরাকের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস  সময়ে দেশটির সবচেয়ে দুর্বল এবং নির্যাতিত সম্প্রদায়ের মানুষের পক্ষ নিয়ে কথা বলার' জন্য পোপ ফ্রান্সিস আয়াতোল্লাকে ধন্যবাদ জানান।

সফরের তৃতীয় দিন রবিবার সকালে পোপ ফ্রান্সিস ধর্মীয় সংঘাতে পীড়িত মানুষকে উৎসাহিত এবং মৃতদের জন্য প্রার্থনার জন্য হেলিকপ্টারে করে ইরাকের উত্তর শহর মসুলে পৌঁছান। সেখানে তিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িঘর এবং গির্জা অবলোকন করেন। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট মসুল দখলের পূর্বে এটি প্রাণবন্ত একটি শহর ছিল।

মসুলে পোপ ফ্রান্সিস সেখানে বসবাসরত মুসলিম এবং খ্রিস্টান ধর্মের মানুষের মুখে তিনি আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নিয়ন্ত্রাধীন জীবন যাপনের দুর্বিষহ কাহিনী শোনেন। মসুলে বসবাসরত মানুষকে ছাই হতে জেগে উঠার আশির্বাদ জানান তিনি।

পোপের সফরে তার নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রায় ১০ হাজার ইরাকী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে ২৪ ঘন্টার কার্ফ্যু জারি করা হয়।

ইরাক খ্রিস্ট ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিসকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে। দীর্ঘ সংঘাতময় দেশ ইরাকে পোপ ফ্যান্সিসের ভ্রমণ আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।ইরাকে এক সময় ১০ লাখের বেশি খ্রিস্টান জনসংখ্যা ছিল। কিন্তু বর্তমানে দেশটিতে খ্রিস্টান ধর্মের আড়াই থেকে চার লাখ জনগোষ্ঠী রয়েছে। দীর্ঘ যুদ্ধ, ধমীয় নিপীড়ন এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার কারণে দেশটিতে খ্রিস্টান ধর্মের জনসংখ্যা কমছে বলে ধারণা করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৮মার্চ/কেআই)