অসহায় বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ালেন নড়াইলের এসপি

নড়াইল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ মার্চ ২০২১, ২১:৫৭

ফুল মতি। ৮০ বছরের বয়োবৃদ্ধ এক নারী। ভাগ্য বিড়ম্বিত এক জননী। যে বয়সে ছেলে-মেয়েসহ পরিবার-পরিজনের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় জীবনযাপনের কথা, সেই বয়সেই তার ওপর নেমে এসেছে চরম অবজ্ঞা আর অবহেলা! ছেলে-বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে এই বয়সে তাকে ঘর ছাড়তে হয়েছে। অঝরে চোখের জল গড়িয়ে অভুক্ত অসহায় ফুল মতির শীর্ণ দেহ আরো জীর্ণ-শীর্ণ হলেও মন গলেনি তার নাড়িছেঁড়া সন্তানের। মর্মস্পর্শী এই ঘটনাটি ঘটেছে নড়াইল সদরের শাহাবাদ ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে। অমানবিক ঘটনাটি জানার পর অবশেষে বয়োবৃদ্ধ ফুল মতির পাশে দাঁড়িয়েছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়। বুধবার দুপুরে নির্যাতিতা ফুল মতির বাড়িতে যান তিনি।

পুলিশ ও নির্যাতিতা ফুল মতি জানান, তার স্বামী কৃষ্ণপদ গাইন প্রায় ১২ বছর আগে মারা গেছেন। স্বামীর মৃত্যুর পর ফুল মতির একমাত্র ছেলে শিবুপদ গাইন (৪২) তার (ফুল মতি) অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। তবে কৃষক শিবুপদ ও তার স্ত্রী বয়োবৃদ্ধ ফুল মতির সঙ্গে ভালো আচরণ করত না। প্রায়ই তাকে মানসিক নির্যাতন করত। বছরখানেক তার ওপর মানসিক নির্যাতন বেড়ে যায়। সর্বশেষ গত ৬ মার্চ ছেলে শিবুপদ ও তার স্ত্রীর অমানসিক অত্যাচার সইতে না পেরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ৮০ বছরের বয়োবৃদ্ধ ফুল মতি। ভেবে-চিন্তে কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে হঠাৎ করে মাথায় বৃদ্ধি আসে তার। ছেলে ও তার স্ত্রীর অত্যাচারের বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানাবেন। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এক পর্যায়ে ফুলমতি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আসেন। তার ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের কথা পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়কে খুলে বলেন তিনি।

মায়ের ওপর ছেলের এ ধরণের অত্যাচারের নির্মম বর্ণনা শুনে পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিক সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেনকে এ ব্যাপারে দিক-নির্দেশনা দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশ মোতাবেক বয়োবৃদ্ধ ফুল মতিকে গাড়িযোগে বাড়িতে রেখে আসেন এবং তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

এরপর বুধবার দুপুরে বৃদ্ধা মায়ের খোঁজখবর নিতে তাদের বাড়িতে যান পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়। এ সময় ফুল মতিকে পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করেন, তার ছেলে ও ছেলের বউ আর কোনো ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন। যদি কখনো এ ধরনের দুঃসাহস দেখান, তাৎক্ষণিক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় পুলিশ সুপার বৃদ্ধা ফুল মতিকে ফলসহ কিছু খাবার দেন।

ছেলে শিবুপদ ও তার স্ত্রী বলেন, আমরা ভুল বুঝতে পেরেছি। মায়ের সঙ্গে আর অন্যায় ও অমানবিক কাজ করব না।

ফুল মতি বলেন, পুলিশ সুপার স্যারের কারণে সংসারে আবার উঠতে পারছি। কোনো মায়ের সঙ্গে ছেলে-মেয়েরা যেন এ ধরনের খারাপ কাজ না করে, সেই আশা আমার। ফুল মতির ছেলে শিবুপদ ছাড়াও দুই মেয়ে আছেন। তাদের বিয়ে হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১১মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু 

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :