একজনের কাছে জিম্মি রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমি

প্রকাশ | ১৪ মার্চ ২০২১, ১৮:০৪ | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২১, ১৮:০৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

দেশের একমাত্র রেলওয়ে প্রশিক্ষণ একাডেমির (আরটিএ) অবস্থান হালিশহরে। এই ট্রেনিং সেন্টারটি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সেখানে আছে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। যারা নিজেদের মতো করে সব অনিয়মের অংশীদার হয়ে অর্জন করছেন অবৈধ সম্পদ।

কর্মকর্তাদের নিয়ে কর্মচারীদের মুখরোচক কথাও প্রচার আছে। এর বেশিরভাগই একজনকে ঘিরে। তিনি হচ্ছেন ট্রেনিং অফিসার মোহাম্মদ আবুল কাশেম। অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি যা করেছি নিয়ম অনুযায়ী করেছি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে রুলস ১৯৮৫ অনুযায়ী গার্ড গ্রেড -২ উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি থাকলেও জানা যায় ৫ ফুট ৩ ইঞ্চির লোক ও নিয়োগ বা প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তরে আবুল কাশেম বলেন, আমি যা করেছি তা আমার বিভাগীয় কর্মকর্তারা সব জানেন। 

এ বিষয়ে রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শিশির সিনহাকে কয়েকবার ফোন দিয়েও  পাওয়া যায়নি। এর সত্যতা যাচাই করার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা  খায়রুল কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমরা ঢাকা থেকে যা লোক দিয়েছি প্রশিক্ষণের জন্য সবাই ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি যাচাই-বাছাই করেই দিয়েছি। এর মধ্যে যদি কেউ কিছু করে থাকে তা আমার জানা নাই। তবে এ ব্যাপারে খবর নেবো।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যাদের উচ্চতা কম, তাদের প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ শেষে যে পরীক্ষা নেয়া হয় তা পাসের গ্যারান্টি দিয়ে মোটা অংকের টাকার লেনদেন হয়েছে রেলওয়ে অফিসে।

অভিযোগ আছে, স্টেশন মাস্টার থেকে বিভাগীয় পরীক্ষায় পাস করে আবুল কাশেম পদোন্নতির মাধ্যমে সরকারি কর্ম কমিশনের ক্যাডারভুক্ত প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হন। তার বিরুদ্ধে সনদ বাণিজ্য, ভুয়া বিল করে অর্থ লুটপাটের অভিযোগও আছে।

রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে প্রশিক্ষণ করানো হয়েছে ৭০ জনকে। তিনটি শূণ্য পদের বিপরীতে আবারও ৮০ জনকে প্রশিক্ষণ করানো হচ্ছে। এসব প্রশিক্ষণে পাস করা নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের শর্ত পূরণ হয়নি উল্লেখ থাকলেও তাদের নিয়োগ  দেয়া হয়েছে।

এছাড়া যারা প্রশিক্ষণরত আছেন তাদের মধ্যে থেকেও অনেকের সঙ্গে মোটা অংকের লেনদেনের কথা একাডিমির কম-বেশি সবাই জানেন।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে পরীক্ষায় পাস করোনার বিষয়ে ট্রেডিং কর্মকর্তা  আবুল কাশেমের সঙ্গে চুক্তি করা হয়।  এই কর্মকর্তার নামে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও তার বিচার বা তদন্ত কোনটাই হচ্ছে না। 

এই অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান প্রশিক্ষণরতরা।

(ঢাকাটাইমস/১৪মার্চ/কেএম)