মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিতকরণ

নীলফামারী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ মার্চ ২০২১, ১৮:২০

নিজস্ব অর্থায়নে এলাকার ১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর চিহ্নিত করেছেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ খান।

স্বাধীনতার দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর অবহেলিত এসব কবর সংরক্ষণ ও এর মধ্যে দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে সড়ক নামকরণ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে সড়ক ও মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিতকরণ ফলকের উন্মোচন করেন চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ।

সরজমিনে জানা গেছে, ওই এলাকার প্রয়াত ১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ১১ জনের কবরের প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। এছাড়া স্থানীয় কিছু সমস্যার জন্য ছয়জন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর চিহ্নিত করে কবরের পাশে নামের ফলক উন্মোচন করা হয়। অন্যদিকে দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। তাই, তাদের নামে দুটি সড়কের নামকরণ করা হয়। দুই লাখ ১৬ হাজার ৬৬৬ টাকার ব্যয়ে অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ এই কবরগুলো করে দেন।

লতিফ খানের এই কার‌্যক্রমকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের পরিবার ও এলাকাবাসী স্বাগত জানায়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা কোরবান আলী জানান, ‘আমরা দেশের জন্যে যুদ্ধ করেছি। দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। কিন্তু আমাদের এলাকার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ও চিহ্ন দিন দিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছিল। এ বিষয়ে আমরা আমাদের এলাকার চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক তাদের কবর চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেন এবং এগুলো সংরক্ষণে দ্রুত ব্যবস্থা নেন।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের এ পর্যন্ত ১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন। কিন্তু এই কবরগুলো চিহ্নিত ছিল না। দিনের কালক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে এসব কবরের অস্তিত্ব। মুক্তিযোদ্ধারা ওনার উপর সন্তুষ্ট। আমরা তার দীর্ঘায়ু কামনা করি এবং আমরা পুনরায় তাকে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করব, ইনশাআল্লাহ।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা ছামান আলীর স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। আমার স্বামীর কবর প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছিল। তাই আমি লতিফ চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানাই আমার স্বামীসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করে সংরক্ষণ করার জন্য।’

আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘আমাদের এলাকায় যে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মৃত্যুবরণ করেছে। কিন্ত তাদের কবরগুলো দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে ছিল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমার মস্তিষ্কে এ বিষয়ে কিছু চিন্তা ভাবনার উদয় হয়। তাই আমি নিজের অর্থায়নে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর বাধাই করে দিয়েছি। এছাড়া ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করে নামের ফলক লাগিয়েছি। দুইজন মুক্তিযোদ্ধার কবর পাওয়া যায় নি। তাই তাদের নামে আমাদের ইউনিয়নে দুটি সড়ক নামকরণ করেছি।’

এ বিষয়ে ডোমার ডিমলার সাংসদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার বলেন, ‘কাজটি অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমি জেনেছি এবং সরকারিভাবে গোটা এলাকায় সময়ের এই শ্রেষ্ঠ কাজটি করব।’

(ঢাকাটাইমস/১৭মার্চ/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :