লন্ডনে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশুদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০২১, ১৮:৪৫

মতিয়ার চৌধুরী, লন্ডন থেকে

বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন গেল বুধবার ‘চিরন্তন মুজিব’ (মুজিব দ্য ইটারনাল) শীর্ষক এক বিশেষ স্মারক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবস উদযাপন করেছে।

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী থেকে শিশু-কিশোরদের পাঠ, ‘বঙ্গবন্ধু ও ব্রিটেন’ বিষয়ে তিন শতাধিক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশু-কিশোরের চিত্রাঙ্কন ও ‘জাতির পিতা’ শীর্ষক বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গীকৃত শিশু-কিশোরদের এক বিশেষ সংগীত পরিবেশনা ছিল দিবস উদযাপনের মূল আকর্ষণ।

দিবসটির স্মরণে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিল্পী আসাদ উল্লাহর আঁকা বঙ্গবন্ধুর একটি পূর্ণ প্রতিকৃতি উন্মোচন করেন এবং মিশনের সিনিয়র কূটনীতিকদের নিয়ে সামাজিক দূরত্ব  বজায় রেখে এই প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক ও কমনওয়েলথ অফিসের প্রতিনিধি, ব্রিটিশ শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যসহ অনেক শিশু-কিশোর স্বত:স্ফূর্তভাবে যোগ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সব সময় শিশুদের সর্বোত্তম ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন এবং আজ তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি শিশু যাতে সুন্দর ও সম্পূর্ণরুপে বেড়ে উঠতে পারে সে জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।’

হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, যাতে দেশ ও বিদেশে প্রতিটি বাংলাদেশি শিশু-কিশোর বঙ্গবন্ধুর প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের আদর্শ সম্পর্কে জানতে ও উজ্জীবিত হতে পারে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাপতি লাকি ইনাম শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুর সুগভীর ভালোবাসা, সুদুরপ্রসারী স্বপ্ন এবং তা বাস্তবায়নে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

কোভিড-পরবর্তী সময়ে আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম বিদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার মিস গায়ত্রি ইসার কাওর বলেন, ‘এই সফর বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা বার্ষিকীকে ভারত যে অপরিসীম গুরুত্ব ও মর্যাদা দিচ্ছে তারই স্বাক্ষর বহন করে।’

তিনি প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের অকুন্ঠ প্রশংসা করেন।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক ও কমনওয়েলথ অফিসের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মিসেস লিসা বান্দারি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক, স্বাধীন, ধর্মনিরপেক্ষ ও অন্তর্ভূক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার যে ভিত্তি শেখ মুজিব গড়ে দিয়ে গেছেন, তা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এবং পরবর্তী সময়েও অশেষ অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- সর্বজনশ্রদ্ধেয় সাংবাদিক ও কলামিস্ট অমর একুশে গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী, যুক্তরাজ্যভিত্তিক এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিনের সম্পাদক ডানকান বার্টলেট, বিশিষ্ট বিবিসি সাংবাদিক আশিস রায়, ব্রিটেনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।

এছাড়াও, অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শম্পা রেজা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণের লেখা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন এবং বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ফাহমিদা নবী বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি গান শুনান। হাইকমিশনার দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ১০১ লেখা একটি কেক কাটেন।

এর আগে সকালে দিনের শুরুতে হাই কমিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলণের পর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদত্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। এবং বঙ্গবন্ধু ও তার শহীদ পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৯মার্চ/পিএল)