সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ মার্চ ২০২১, ১৬:৩১ | প্রকাশিত : ২০ মার্চ ২০২১, ১৫:৩০

সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শনিবার সকালে রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, স্বাধীন দেশে এভাবে ন্যক্কারজনক ঘটনা কীভাবে সংঘটিত হতে পারে? হেফাজতের উদ্যোগে যে তাণ্ডবলীলা ঘটানো হলো, এতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের যে দুরবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকার সতর্ক অবস্থায় রয়েছে, প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে তবুও কীভাবে সংখ্যালঘু শত শত লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছে।

ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে গত বুধবার সকালে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও আসবাবপত্র তছনছ করা হয়। স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ সে সময় বলেছিল, ‘হেফাজতে ইসলামের অনুসারীরা’ ওই হামলা চালায়।

শাল্লা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেছিলেন, গত সোমবার দিরাই উপজেলায় হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত সম্মেলনে যান হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। সম্মেলনে মামুনুল হকের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে স্থানীয় এক হিন্দু যুবক ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন।

ওই ঘটনাকে ধর্মীয় উস্কানি আখ্যায়িত করে ওই এলাকার মামুনুল হকের অনুসারীরা মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর বুধবার সকালে কাশিপুর, নাচনী, চণ্ডিপুরসহ কয়েকটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামের হেফাজত নেতা মামুনুল হকের অনুসারীরা নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালায়।

এ ঘটনায় পরদিন শাল্লা থানায় দুটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে পুলিশের করা মামলায় ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়। আর হবিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুলের করা মামলায় ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ডাকা মানববন্ধনে এসব হামলায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়। বক্তারা প্রশ্ন করে বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন, মন্দির ভাঙচুর, লুটপাট অগ্নিসংযোগ চালানো হয়েছে এই ধরণের হামলা-নির্যাতন আর কতদিন চলবে?

মানববন্ধনে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক সংসদ উষাতন তালুকদার বলেন, রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব হলো নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। শুধুমাত্র ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে কিভাবে এত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হতে পারে? মামুনুল হকের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদও জানান তিনি।

সংগঠনটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ বলেন, আমরা কাঁদতে আসিনি আমাদের রাষ্ট্রের কাছে জবাব চাইতে এসেছি। আমাদের বড় প্রশ্ন যারা এই ঘটনা ঘটলো তাদের প্রত্যেকের কাছে প্রশ্ন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কি শুধু একটি ধর্মের অনুসারীদের করলেই হয়? হিন্দু মন্দির ভাঙলে, বৌদ্ধ মন্দির ভাঙলে, খ্রিস্টানদের গির্জা ভাঙলে তাদের কোন ধর্মীয় অনুভূতি নাই?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, গণতান্ত্রিক সাম্প্রদায়িক শক্তির মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের বিভেদ শক্তি রয়েছে। যারা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসেবে দেশে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালায়, এই অপশক্তিগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের সকলের প্রতিবাদ জানাতে হবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মানববন্ধন শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনটি।

ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/আরকে/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রেলকে গড়ে তুলতে হবে: রেলমন্ত্রী

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে

বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র

সীমান্তে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিলো বিএসএফ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :