উত্তোলনের খরচই উঠছে না মুন্সীগঞ্জের টমেটো চাষিদের

আরাফাত রায়হান সাকিব, মুন্সীগঞ্জ
| আপডেট : ২০ মার্চ ২০২১, ১৭:১২ | প্রকাশিত : ২০ মার্চ ২০২১, ১৭:০৯

মুন্সীগঞ্জের ছয় উপজেলায় এবছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে ব্যাপক লাভের সম্ভাবনা দেখা দিলেও বর্তমান বাজারে দাম একবারেই কমে গেছে। দুই টাকা কেজি দরেও কৃষকরা বিক্রি করতে পারছে না টমেটো। চাষিরা জানাচ্ছেন, আবাদ ব্যয় দূরে থাক, উত্তোলন খরচও তাদের মিলছে না।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতবছরের তুলনায় এবছর মুন্সিগঞ্জে টমেটো আবাদ হয়েছে বেশি। জেলার এবছর ৩১৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে টমেটো।

সরজমিনে সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ও টরকি এলাকায় দেখা গেছে, জমির পাশেই পড়ে নষ্ট হচ্ছে সারি সারি লাল টকটকে পাকা টমেটো। গাছেও ঝুলছে কাঁচা-পাকা টমেটো। তবে বাজারে দাম না থাকায় উত্তোলনে নেই আগ্রহ চাষিদের। ফলে অধিকাংশ জমিতেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে টমেটো। বিশেষ করে মোল্লাপাড়া এলাকায় প্রতিটি জমিতেই নষ্ট হচ্ছে শতশত কেজি টমেটো।

চাষিরা জানান, যারাই উত্তোলণ করে বাজারজাত করছে তাদের ৫০-৬০ টাকা মণ ও দেড়/দুই টাকারও কম কেজি ধরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে মিলছেনা উত্তোলন খরচও।

মোল্লাপাড়া এলাকার চাষি মুকবুল হোসেন বলেন, ‘যেই ফলন হয়েছে তাতে অনেক লাভের আশা করেছিলাম। এখন কেউ কিনতে চায়না। কি করব, কিছু ফালাই দিয়েছি, কিছু গরুর খাবারের জন্য বাড়িতে নিতাছি।’

আরেক চাষি মফিজুল জানান, ‘দুই কানি জমিতে চাষ করতে এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি করব কি, পাইকারই নাই। আমাদের অনেক টাকা লোকসান হল এবার।’

নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কষ্ট করে চাষ করছি, ফালাই দিতে মায়া লাগে। বাপ-চাচারা মিলে নিজেরাই জমি থেকে বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি ৫০-৬০টাকা মণে। ঘর থেকে টাকা এনে টমেটো চাষ করে জমিতেই টাকা ফালাই গেলাম ঘরে নিতে পারলাম না।’

কৃষি অফিসের তথ্যমতে জেলার ছয় উপজেলার মধ্যে এবছর সদর উপজেলায় ৬৫ হেক্টর, টঙ্গীবাড়ীতে ৩৫ হেক্টর, শ্রীনগরে ৪০ হেক্টর, সিরাজদিখান ৭৩ হেক্টর, লৌহজংয়ে ২০ হেক্টর ও গজারিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৮২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে টমেটো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ আলম জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর আবাদ উৎপাদন বেশি হলেও বাজারে পর্যাপ্ত শাকসবজি থাকায় চাহিদা কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে চাষিরা টমেটো ফেলে না দিয়ে বিকল্প উপায় অনুসরণ করতে পারে। এক্ষেত্রে কোনো চাষি পরামর্শ চাইলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

তিনি আরও জানান, জেলায় টমেটো ও শাকসবজির জন্য কোল্ডস্টোরেজ নেই, এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

(ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :