তারা মসজিদকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে: পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২১, ১৯:৪০ | প্রকাশিত : ২৬ মার্চ ২০২১, ১৯:৩০

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোদিবিরোধী আন্দোলনে মুসল্লিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) মতিঝিল জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেছেন, আন্দোলনকারীরা মূলত মসজিদকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। মসজিদের পবিত্রতার কারণে পুলিশ ভেতরে প্রবেশ করে অভিযান চালায়নি। যারা আন্দোলন করেছে তারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায় বলেও মন্তব্য করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

মতিঝিল জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে এসেছেন এটি আমাদের জন্য মর্যাদার। সেই মর্যাদাকে নষ্ট করতে তারা এই সংঘর্ষ করেছে। সত্যিকার অর্থেই তারা রাষ্ট্রের মযার্দা চায় কি না এ বিষয়ে আমার মনে সন্দেহ আছে। বাংলাদেশের মযার্দা তারা চায় না। বাংলাদেশ একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হতে চলছে এটা তারা চায় না। তারা চায় ভিন্ন কিছু। তারা চায় তালেবান ধরনের একটি রাষ্ট্র।’

শুক্রবার দুপুরের এই ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনারা জানেন বায়তুল মোকাররমে প্রায় প্রতিদিনই এখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। তারা নানা ধরনের ব্যাঙ্গাত্মক আচরণ করে। এখান থেকে জুতা স্যান্ডেল দেখানো হয়, কালো পতাকা, ঝাড়ু দেখানো হয়। যেহেতু আজ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আমন্ত্রিত অতিথি, সুতরাং আজকে যেন কোনো বিব্রতকর পরিস্থিত সৃষ্টি না হয়, সে কারণে আমাদের নিরাপত্তা বেষ্টনি ছিল। ভেতরে যখন মুসল্লিরা নামাজ পড়ছিল তখন কিছু মুসল্লি মিছিল করছিল। জুতা স্যান্ডেল দেখাচ্ছিল। এতে অন্য মুসল্লিরা বাধা দেয়। এতে দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একটা পর্যায়ে যারা জুতা স্যান্ডেল দেখাচ্ছিল তারা মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেয় এবং ভেতর থেকে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। অন্যান্য মুসল্লিরা ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়। অনেকে আহত হয়ে চলে যায়। এমনকি পুলিশের ওপর তারা চড়াও হয়।’

নুরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ আইনানুগভাবে তাদেরকে প্রতিরোধ করার জন্য যাতে জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি না হয় এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি না হয়, সেজন্য রাবার বুলেট, টিয়ারসেল ইত্যাদি ছুড়ে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করে।’

এই সংঘর্ষে কতজন আহত হয়েছেন এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানেন না বলে এড়িয়ে যান এই কর্মকর্তা।

এই দিনটিকে ঘিরে পুলিশের যথেষ্ট পরিকল্পনা থাকলেও সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা মসজিদকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। আমরা যেহেতু সকলে মুসলিম এবং মুসলমানদের তীর্থস্থান এবং পবিত্র জায়গা হচ্ছে মসজিদ। আমরা মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে মসজিদের প্রবেশ করিনি। না হলে যে গুটি কয়েক মানুষ মসজিদের ভেতর থেকে ও মসজিদের ছাদ থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছিল, যদি এটা মসজিদ না হতো তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারতাম। আজকে যে পরিমাণ ইটপাটকেল করা হয়েছে তা কয়েক ট্রাক হবে। মসজিদের ভেতরে এতো ইট কীভাবে এলো সেটা তদন্ত করে দেখা হবে।’

পুলিশের পাশাপাশি ক্ষমতাশীন দলের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধ করতে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। তারা এটা কীভাবে করলো, এমন প্রশ্নের জবাবে মতিঝিল জোনের ডিসি বলেন, ‘একদল মসল্লি মসজিদের ভেতর থেকে স্লোগান দিচ্ছিল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে, জুতা, ঝাড়ু দেখাচ্ছিল। তাদের এমন কর্মকাণ্ডকে বিরোধিতা করছিল আরেকদল মুসল্লি। তারপর থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। যারা জুতা দেখিয়েছে তারা মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেয়। আর যারা তাদের এইগুলোর বিরোধিতা করছিল তারা তাদের হাতে আক্রান্ত হয়ে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে। আমরা তাদের সুযোগ দিয়েছিলাম। আপনানা যারা মসজেদের ভেতরে আছেন তারা বের হয়ে যান। তখন অনেকে আমাদের কথা শুনেছেন। আর যারা অতিউৎসাহী তারা এখনো অবস্থান করছেন।’

(ঢাকাটাইমস/২৬মার্চ/এআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :